লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডল-এর কবিতা

পদ্মাসন

সাপ জড়িয়ে শুয়ে থাকতে থাকতে বিপন্ন হয়ে আসছে প্রদীপ
ঝুরি নামছে রাত দুপুরের কোহল থেকে
একফালি নিকোটিন মাখানো উঠোনে নির্ঘুম শব্দেরা অস্থিহীন ভগীরথ
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে কালপুরুষের ছায়া

সরলরেখা হতে চাওয়া বৈরাগ্য পেতেছি মাটিতে
মহাকালের মুহূর্তরা পড়ে থাকা খইয়ের মতো রংহীন
ওহে ক্লান্তি, পৃথিবীর আকার জেনেও নদীর মতো ভুলে যাই অপরাজিত পুষ্প
টুপটাপ ঝরে অত্রিকা
পদ্মাসন পুড়ে খাক হয়ে যায়

নিউরোশিস

সাদা ইমেজ নিয়ে জলের ফোঁটাগুলি মৃত্যুর কাছাকাছি
দ্যাখো, উত্তাপে ভিজে যাচ্ছে অন্তর্লীন মেঘ
তারই কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ফেনাময় ষড়রিপুর ভূকম্পন আর বজ্রপাত
কাকেরা উড়িয়ে আনছে তাদের শিলাজিৎ মাখানো ঠোঁট ও আগুন
উজান বৃক্ষের ছবিতে ঠেস দিয়ে তুমি তখন তৃষ্ণার্ত হওয়ার ভান করছ
চোখের কোনে হিজল ফুলের রস নিয়ে আঙুল টানছ সুতীব্র শিরায়

দিগন্ত থেকে বহুক্রোশ দূরে এই নিউরোশিস নিয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে
এই খণ্ড খণ্ড গ্যালারিতে রেখারং-ই একা – নিরাকার হলেই এ আয়ু তোমার নয়
আমারও কি ? ভেবে দ্যাখো –

ভেবে দ্যাখো অবোধ কিলার – নিঃস্ব ফুলের কোন রং পরিবর্তন হয় না –
এরপরও কি কোন কবিতা প্রভাবিত করবে পৃথিবীর ভূমি আর জল

ঠাকুর মাজান

হঠাৎই নৈঋত কোনের সন্ধ্যা তারাটি হিজল গাছের ভিতর ডুবে গেল – কোন হাহাকার শোনা গেল না কিংবা দীর্ঘশ্বাসও – কেবল বাঁশতলা দিয়ে মিলনের কৃষ্ণবর্ণের বউ হেঁটে গেল ঠাকুর মাজানের দিকে

অথচ এখানে পড়ে আছি নিদাঘ, কিছু বিরতি থাকলেও নৈঃশব্দের ললিতা থেকে কুড়িয়ে চলেছি বিহঙ্গ বিকাশ , জুঁইফুলের গন্ধে ভাসছে সর্পিল রাতের রিভিউ – ঘাই মারে লিবিডো মাখা নথপরা সিলভার কার্প

আলো কি রাতের সুখ ! আমরা জেগে উঠি, কয়েক প্রকার জন্তু-জানোয়ার, কীট-পতঙ্গ, আর জীবাত্মা – ফণিমনসা ঝোপের ওপাশে পিছলে পড়ার ভয় নেই আর – সপ্তপদী মাটির ঠোঁটে শিশির ফোঁটা হয়ে জেগে থাকি

Facebook Comments

Leave a Reply