প্রলয় অধিকারী-র কবিতা
১.
তোমাদের কাজ বন্ধনী এঁটে দেওয়া,
জিরাফ যেন’না শোঁকে ধর্মের ঘাস ।
ফতোয়া টাঙালো মৌলবাদের দেওয়াল _
বিরুদ্ধতার হচ্ছে না সহবাস ।
কবিতা পড়ো না,খোঁজো কি পন্থা কবির …
দক্ষিণে হাঁটে, নাকি বাম দিক ঘেঁষে ?
একই ঘাটে এসে মিশে যায় জল সবই,
সালিশি বসেছে আদিম ও একপেশে ।
দু’ মেরুর মাঝে ঝুলছে না কোন সেতু,
মগজে বিছোনো যুক্তির শবাধার ।
শুধু বশ্যতা চাই, তর্কেরা অহেতুক _
প্রতি রাতে আসে রাষ্ট্রের হানাদার ।।
২.
হুঙ্কার দিলে_ ‘এ ছিল তোমার দেশ’
দাঁতে দাঁত চেপে আমি দাবী করি, ‘আমার’ ।
আসলে এখনো যায়নি বদভ্যেস,
ভুলতে পারিনি, এ ছিল যৌথ খামার ।
তোমার লাঙ্গলে চষেছি আমার মাটি,
kobza বাজিয়ে ফিরেছি কোরাস গেয়ে ।
এখন সেখানে তোমার সৈন্য ঘাঁটি,
বারুদের ঘ্রাণ গাঢ় ফসলের চেয়ে ।
হাঁটতে হাঁটতে কাঁটাতার গেছি পেরিয়ে,
বলতে বলতে রক্তে মিশেছে ভাষা ।
কত বিপ্লবে কাঁধে কাঁধ রেখে দাঁড়িয়ে
এঁকেছি দু’চোখে সাম্যবাদের আশা ।
সব শোধবোধ, আজ বুঝে নেব হিসেব,
অতীতের গলি সাঁজোয়া গাড়ীর তলে ।
দেখা যাক কত ঝাঁঝ আছে কার বিষে,
দেখি, সভ্যতা শেষে কার কথা বলে.. ।।
৩.
যেখানে রেখেছো পা, পুঁতেছো ফলক সেখানেই..
ভাবো নি তোমার মাটি মাপা আছে অনেক আগেই ।
ইতিহাস বেমালুম গেয়ে যাবে শাসকের গাঁথা,
মুকুট কখনো বোঝে পা’য়ের বেড়ীর স্থবিরতা ?
নগরীর উল্লাসে আলতামিরার গুহা কাঁপে,
সভ্যতা বলে দেবে, তুমি ছিলে তার কোন ধাপে ।
বর্ণের আশ্রমে বিভেদের বীজ-বোনা শুরু..
কখনো ব্রাহ্মণ তুমি, কখনো’বা সংখ্যায় গুরু ।
মৌলবাদের গ্রহে যতবারই ফুটেছে মালালা,
সব পথ রোমে নয়, ততবারই গেছে পাঠশালা ।
সিংহাসনের দাম স্থির করে কাঠের যোগান,
কফিনে যতটা লাগে, জানাজায় সমান সমান ।।
৪.
বলতে দেয়নি কেউ, ‘শুধু শোনো,
নিচু থাক মাথা !
শুধু হ্যাঁ’এ হ্যাঁ দাও..’
শাসকের প্রিয় নীরবতা ।
যে যত থামিয়ে রাখে, সেই রাজা
ততই মহান ।
পথিকের ভুল হয়, ‘নগরী..
না এ মহাশ্মশান’ ?
পোশাক পড়েছে খসে,
মিথ্যে অহং-এ ছিল ঢাকা,
আঙুলে শানিত নখ,
মগজের কোটর টি ফাঁকা..
নিপুণ দু’হাতে করে চলেছে সে
বন্ধ্যাকরণ ।
সে ভ্রূণ লুপ্ত হোক,
যে বলে – “রাজা নিরাবরণ” ।।
Posted in: March 2022, POETRY