নিমাই জানা-র কবিতা
ধনুক গ্রাম ও কৃষ্ণপ্রসাদ বল
তারপর আখরোট বাগান থেকে মৃত হরিণের দল প্রপঞ্চ সংসার ফেলে তলিয়ে গেল এই ধনুকগ্রামে ,
সন্ন্যাস তারাই যারা আহত অন্ধকারকে ফেলে আরো জোরালো প্রাচীন গুহা কন্দরের ভেতর থাকা শূন্য জ্যোতির্ময় আগুনের দিকে উড়ে যায় , প্রাচীন লিপির গায়ে আলতামিরার লালা মিশে আছে পিচ্ছিল পশুপালনের
একটি বিরহ যোগের নৌকা বিন্যাসের সমান্তরাল আলতামাখা পা গুলো ধারালো তরোয়ালের পৃষ্ঠদেশে অসংখ্য রক্তবিন্দু হয়ে জমে থাকে সেলসিয়াস জ্বরের প্রবাহ মায়া হয়ে
নীল রংয়ের অপরাজিতা ঠোঁটে আটকে থাকা চেরা চেরা জিভগুলো কংক্রিটে ছোবল মেরে আহত করে নিজেদের রক্তাক্ত দাঁতের মাড়ি ,
নাভি নেই অথচ উলঙ্গ অবতারের মতো সবাই দাঁড়িয়ে থাকে মৃত ক্ষুদ্রান্ত মুখে নিয়ে
সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবি কৃষ্ণপ্রসাদ বল নামক সামন্তরিকেরা একসাথেই সহবাস ঘটিয়েছিল গতরাতে
নিকোটিন ও রাত্রিযাপন ডিম্বাণু
শরীরের ভেতরে থাকা গ্রস্ত উপত্যকাটির কাছে এলেই আমি একটি নৈঋত হলুদ জামা পরে বৈরাগ্য আকাশ দেখতে পাই , কৃষ্ণ বল এখানে বসেই নিকোটিন নেশা করে যায় , আমি তার মুখে শ্রীদামের শাপগ্ৰস্থ কথা শুনে চলি বাংলার শিখন সামর্থ্যের সাথে
ঋষিতা নামক এক প্রাচীন জনপদের নিচে ঈশ্বর আবারও ধ্যানস্থ হবেন একটি সমান্তরাল নদী গর্ভাশয়ের উপর
এখানেই প্রতিটি শিখন সামর্থের পর মেরুদন্ডী প্রাণীর আবারো ক্লোরোপ্লাস্টের ঘনত্ব রেখে যাবে ঈশ্বর মূলের জন্য
কোন কষ্টের চারা গাছ বর্ষজীবী পর্যন্ত জন্মায় না
আমি মৃত্যুকে ৩৮ বছর আগেও ঠিক একই রকম জরায়ুহীন উলঙ্গ পোশাকে দেখেছি , একমাত্র আমি মনোরোগী ছিলাম , সকলেই আমার ঘুমহীন রাত্রিকে কাকতালীয় পোশাক ভেবে টাঙ্গিয়ে রেখেছে জানালার মরচে রেলিংয়ের ওপর
দ্রৌপদী অজস্র ডিম্বাণু রেখে ফিরে যাচ্ছেন রাত্রির কন্দরের কাছে
প্রতিটি ঘর থেকে সুদৃশ্য অনামিকারা জিভের ভিতরে ক্ষুদ্রকায় মানুষগুলোর নরম ভগ্নাংশ ভেঙে দেওয়ার পর মৃত পেন্সিল গুলোই শিরদাঁড়া সোজা করে কালো রঙের মানুষ এঁকে ফেলে, ভাঙ্গা দাঁতের ভেতর সকালের তাপমাত্রা একমুখী থাকে না বলেই সাদা বরফের নিচে রাত্রিযাপনের প্রাচীন অভ্যাস লিঙ্গহীন হয়ে পড়ে
আমি একটি সঙ্গমবিহীন রাতকে কখনোই জ্বরের প্রলাপ বলি না কারণ প্রতিটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার কাছে লাল পদ্ম ফুটে থাকে না
লাল জবা ও ত্রিশূল চারাগাছ
একটি সুদৃশ্য জানালার পাশ থেকে উড়ে যাওয়া কোকিলেরা কখনোই প্রাচীন প্রস্তর পোশাক ফেলে নৈমিত্তিক আগুনের সর্বভুক নেশা ছেড়ে যেতে পারেনা
রক্তের পাশে কেউ রাত্রি বিষয়ক কথা না বলে সারারাত জেগে থাকে সবুজ বেল পাতা গাছের নিচে , আমি কিভাবে নিজেকে হত্যা করেছি কোন বিমুগ্ধ বাঁশির কালো ছিদ্র না মেখে
আমি ঈশ্বরের কাছে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলে সব রাতের মায়াময় কথাগুলো উগরে দিয়েছি লাল জবা ফুলের মতো
আমি কেবল একটি দূর্বা ঘাসের ডগার উপর বেঁচে থাকা ব্রহ্মপুত্র দুঃখ গুলো ঈশ্বরকে বলে দিতে পারে না
ঈশ্বরের একদিন হেঁটে হেঁটে বেড়িয়ে যাবে আমার শ্যাওলাধরা জ্যামিতিক উঠানের চারপাশে আর আমি রাতের অন্ধকারে উড়ে যাওয়া নিশাচরের গমন অঙ্গ ছুঁয়ে প্রণাম করব ঈশ্বরী ভেবে আমাদের তখন অবৈধ বৃষ্টিপাতের শুরু হবে খানিক
রাত্রি কিছু নয় আমি এখন আগুন নামক সর্বভুক ঈশ্বরের সাথে একসঙ্গে প্রহর মেপে নিচ্ছি
প্রহর শেষে আমার বাম স্তনে ঝনঝন করে ওঠে রাত্রির শিথিলতা নিশীথের যাত্রীরা অন্ধকারের বুক চিরে একটি আগুন নিয়ে দৌড়ে বেড়ায় সারা মাঠ , তাদের ককসিসের ওপর নিরাময় আলোকেরা ইউনিফর্ম ঢেকে রাখে ব্রততী সাপের দংশনের মতো
ধুমকেতু কিছু নয় একটি সরল রৈখিক সহবাস কথা উপুড় করে রাখার পর নিজের পাজামার নিচে কিছু অদৃশ্য বুনোফুল খুঁজে নেওয়া
আমি তবে আরও কত গভীর অন্ধকারে গিয়ে দেখেছি অজস্র শিরাপথের পাশ থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত ওঠা মুনি-ঋষিদের দাঁতে লেগে থাকে মৃত্যুর উপনিষদ
আদিগন্ত মৃত্যুর কবিতা লিখে যাওয়ার পর নৈসর্গিক পুরুষেরা সমবিন্দু হয়ে উপপাদ্যের তৃতীয় জ্যামিতিক ঘরে ছটপট করে গর্ভপাতের জন্য
একটি সুপুরুষ অলংকার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ঘরের প্রতিটি কোণে আমি তার ছায়ায় জীবাশ্ম মাখিয়ে চলি
৩৬০° ডিগ্রির মুখে দাঁড়ালে বাবা একটি ত্রিশূল চারাগাছ হয়ে ওঠে
Posted in: March 2022, POETRY