দীপেন্দু পাল-এর কবিতা

একা মধ্যমা

আবার একটা বন্ধ সিলিং ফ্যানের তলায় শুয়ে শুয়ে
শুধু প্রতিবন্ধী রুগীর মত নড়তে ইচ্ছা করছে না।
তোমার রক্তে মাখানো ব্লেডে আমি মাথা রাখি
তাই চুল ভিজে যায়।
এভাবেই শুন্য মহাকাশ থেকে দেবদূত
আর কত ঝুলে পড়বে পৃথিবী নামক এক মাগীর বুকে।
হাজার শতাব্দী ধরে পঁচে যাওয়া মৃতদেহগুলো থেকে
কঙ্কালের কান্না এখনও শোনা যায়।
কোনো মহৎ রাজার সিংহাসনে বসে
আমি ধর্মের দূত হয়ে অন্যের জীবনে ঢুকে যাবো।
তারপর এনে দেবো এই পৃথিবীতে টাকা দিয়ে
কিনে ফেলা যায় এমন সবকটা সুখ।
ভাঙা ভাঙা বাড়ি ঘর খালি পাঁজরে শুয়ে থাকা
পুরনো পূর্বপুরুষের স্মৃতি- আর কিছু নয়।
শয়তানেরও মাথায় কী পরিণত গরুর মত একজোড়া সিং থাকে?
যদি থাকে তাহলে আমায় কেটে দিও;
আমার ঘরে আজকাল খুব জামাকাপড় ঝোলানোর অসুবিধা।
চালের ড্রামে লুকানো বাবার মদের বোতলে
আমি হাত দিইনি ততদিন যতদিন আমাদের
তরতাজা সম্পর্ক ডুবে যায়নি ভয়ংকর সমুদ্রে।
তোমার বড়ো চুলের ভিতরে লুকানো লাশগুলোকে এবার বের করে ফেলো
আর মন থেকে তোমার দর্শনহীন ছুরিতে কেটে যাওয়া সম্পর্কগুলোকেও।
সময় করে মুক্ত বারান্দা থেকে পৃথিবীর ব্যালকনিতে লাফ দিয়ে পড়লে–
তোমার লাশে ভিড় করবে কিছু জ্যান্ত মানুষেরদল।

সমীরণ কাল থেকে আর চাকরিতে যাবে না

তোমার ফর্সা নাভি ধরে ঝুলে থাকা
সমীরণের গত জন্মের আশাগুলো পূর্ন হতে পারেনি।
চোক্তারগুলো তার সাদা ছানি পড়া মনি খুলে
দুপুরে ডিমের ঝোলে খেয়েছে মিষ্টি পিঁয়াজের সহিত।
হে শয়তানের পিতামহ, তুমি আবার কসাইদের দোকানে কি করছো?
সমীরণের কাটাদেহ তো আগেই রক্ত জালিকারা
পৌঁছে দিয়েছে তোমার রান্নাঘরে।
আমাদের সভাপতি সভার পাঁচিলে সেটে থাকা
প্রেমিকার পোস্টারে পানের পিক ফেলে যায় বড়লোক কবিদা।
এ শহরে কবিদার খুব নাম ডাক চলে;
আমি সিগারেটের দোকান থেকে শুরু করে জাঙ্গিয়ার দোকান,
সব জায়গায় ওনার নামে ধার বাকি চালাই।
সমীরণ কাল থেকে আর কাজে যাবে না।
কসাইদের দোকানে শুধু তার পাঁজরের মাংসের বিক্রি বেশি,
কেউ তার সলিড চর্বি ভর্তি পেটটা কিনতে চায় না।
এক ফরাসি কবির চিতায় জ্বলে যাওয়া ধোঁয়া থেকে
আমাদের পৃথিবীর শ্বাসকষ্ট বাড়ছে।
আমরা ভাঙা চোরা দরজার ছিটকানি আটকিয়ে ফেলি,
ডানায়ালা কসাইয়ের দেবী সাফ বলে গেছে―
সমীরণ কাল থেকে কাজে না এলে
গলিতে গলিতে
হাজার হাজার
সমীরণ ইন্টারভিউতে দাঁড়াবে।
আমরা কামের দেবীকে ধর্ষণ করে ভুল করেছি;
কাল আমারও ইন্টারভিউ আছে কসাইয়ের দোকানে।

রাবেয়া আক্তার আমাকে কথা দিয়েছিল

জিপসিদের ভিড় ঠেলে উঠে আসা
তোমার কোমল হাসিটা দেখতে এসেছে
অ্যাপোলোর পোষা সাদা কাকটা।
রাবেয়া আক্তার আমাকে কথা দিয়েছিল–
যারা তার নরম যোনিতে সম্মতিহীন সংগম চেয়েছে
তাদের দেহগুলো নির্জন কোনো দ্বীপে,
কুকুরের খিদে মেটাবে।
সালোকসংশ্লেষণকারী তোমার কপালের ব্রণগুলো, জানে না
এই সুন্দর পৃথিবী ততটাও সুন্দর না।
টেবিল ফ্যানে ঘষে যাওয়া হৃদপিন্ডগুলোকে;
ক্যাথিড্রালের শক্ত পাথর জড়িয়ে নিয়েছে নিজের বুকে।
রাবেয়া আক্তার সোনালী হরিণের পিঠে চড়ে
ঘনঘন দেবতার
প্রাসাদে আসা যাওয়া করে।
এমন সৌভাগ্য এখনো
হাজার বছর তপস্যায় বসে থাকা
ডাচ কন্যারও হয়নি।
কত কত নাবিক ছাড়া জাহাজগুলো
জীবনের জলে তলিয়ে যাচ্ছে।
তুমি তো তাও মানুষ।
আর ঈগলের বৃদ্ধ চোখ থুথু ধিক্কার দিচ্ছে;
তবু দেবতার কোন সাক্ষাৎ নেই।
রাবেয়া আক্তার আমাকে বলেছিলো ভালোবাসে;
আমিও তার মৃত্যুর পর তাকে ভালবাসি।
চলো তবে অলস আপেলবাগানে তোমার শরীরে
কান পেতে একটু রক্তপ্রবাহের শব্দ শুনি।
সামদ্রিক বমি গায়ে মেখে,
পৃথিবীর পাপ থেকে মুক্ত করো নিজেকে
বিকট শয়তানের ফর্সা মুখে দেবতাও দেখো
শান্তির বীর্য ছিটিয়ে দিয়েছে ওদের শাস্তি হিসাবে।
রাবেয়া আক্তার আমাকে কথা দিয়েছে এই ক্ষুধার্ত
নিরেট বোকাচোদাদের পৃথিবীতে আর কোনোদিন ফিরে আসবে না।

Facebook Comments

Posted in: March 2022, POETRY

Tagged as: , ,

Leave a Reply