পৌলমী গুহ-র কবিতা
বসন্ত বি লা প
“অতিশীতল মলয়ানিল মন্দ মন্দ বহনা
হরিবৈমুখী হামারি অঙ্গ মদনানলে দহনা-”
১.
তোমার পাশে এসে দাঁড়াই। নিঃসম্পর্ক।
চোখে অমার্জনীয় মৃত্যুর কাজল,
চুলে ডুবে আছে গত যুদ্ধের স্মৃতি।
আমার শহরে সাইরেন বাজে না, বোমা পড়ে না
তবুও, ভেতরে অচঞ্চল যুদ্ধ নিয়ে ঘুরি।
২.
একখানা বাড়তি হাত আমার অনিদ্রার কারণ।
হাতখানা একা বাসে চাপে,
শহরে ঘুরে বেড়ায় অবিশ্বাসী।
হাতের আঙুলে লেগে থাকে জন্মদাগ। ক্ষত।
এ হাতে তুমি হাত না রাখলে তার থাকার কারণ নেই!
৩.
যুদ্ধের খবর দেখি।
দেখি যুগলের চোখে আসন্ন বিচ্ছেদের ঢেউ।
ধীরে অতি ধীরে শহরে নামে বসন্ত,
বিষণ্ণ হাওয়া স্রেফ জ্বালায়, পোড়ায় না।
স্বর্গ আর নরকের এইটুকু ভেদ মুছে দেব
ভাবি। তারপর ফের যুদ্ধের খবর…
৪.
কলকাতা যেখানে ফেলে যাই, সেখানেই থাকে।
তুমি শুধু ঠিকানা বদলাও অবিরাম।
৫.
কবিতার খাতাগুলো হারিয়ে গেছে।
একটা ফুলছাপ রুমালে সুগন্ধী ঢেলে,
কোনও গভীর যুবকের দিকে ছুটে যায় কেউ।
আমার রুমালটা ছেঁড়া।
ছুটে যাওয়ার মতো গভীরতা আজকাল বুক পায় না।
৬.
সকলের মুখোশে ব্যথা থাকে।
অথচ চোয়ালে হাসি!
এমন হত যে, আমাদের চোয়াল শক্ত
আর মুখোশের টুকরো খুলে পড়ে যেত।
এমনটা ভেবে ভেবে বসন্ত কাটে এখন।
৭.
এতকাল অনাদরে কাটিয়ে
আদরকে অবৈধ প্রেম বলে ছুঁড়ে ফেলে দিই।
৮.
আমাদের প্রতিটা সম্পর্ক ব্যর্থ হয়ে যায়।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ক্ষমা চাইলেই,
প্রতিটা বসন্ত ব্যর্থ হয়ে যায়…
Posted in: February 2022, POETRY