রাহেবুল-এর কবিতা
ঘূর্ণন দেখছি ৪: কুকুর তপস্বী, লয়াল বিড়াল আর মাউসের ক্লিক
বেড়ালে কুকুরে বিসম্বাদ, মারামারি নাকি। কী নিয়ে এ বিবাদ ইহাদের?
খাদ্য? বাসস্থান? যোনি-যৌনতা নিয়ে আদ্যি টু আজকের কাড়াকাড়ি, কোন্দল?
আমার এক কালা বিলাই (<বিল্লি?) ছিল। অনেকেরই থাকে অবশ্য। কেউ আবার পেলেই পেটায়।
কালো বেড়ালের নাকি খুব দর, গোপনে। মন্ত্রে না সারুক অসুখ, অনেকে কয় তবু তন্ত্রে ছাড়ে।
কালো বেড়ালের লোম নাকি আস্ত বেড়ালটাই গায়েব করার ধান্ধায় থাকে কোনো দু’এক ছিঁচকে।
আমার বেড়ালটা হারিয়ে গিয়েছিল ক’বার। হারিয়ে তো নয় পরে দেখা গেল ভিন দেশেও সে জমিয়েছে পাড়ি, প্রেম।
সাথী-সঙ্গীদের সনে ঝগড়া করে বাড়ি ফেরে হয়তো পরদিন। একটা কুয়োর পাড়ে ও আমার সঙ্গে পোজ দেয় সেলফিতে।
কে জানে জমানার সঙ্গে যদি এভাবেই পিঠ-পেট বাঁচানোর যুদ্ধ ঘোষণা করে কোনো লুঙ্গি পরিহিত এক গাঁইয়ার ঢক।
পরে একটা কুকুর এসেছিল বাড়িতে, তাড়িয়ে দিলেও নাকি যায় না, একটা ফকিরি গান আছে এমন।
দুজনে একসময় শত্রু, একসময় সখা। সময়সময় এক বেড শেয়ার করে দু’জনে, দ্যাশ নাকি পোড়ার।
এক সময় বেড়ালটা মরে যায়। হয়তো অপর কুকুরে কামড়ে ছিল, সকলে তো আর বন্ধুর ভেক নিয়ে থাকে না।
দু’দিন ধুঁকে মরেছিল। ততদিনে সে তার শেষ মন কি বাত বলেছিল বোধয় কুকুরটারে। কারণ ইঁদুরকে সে চিনিয়ে দিতে
বা চিহ্নিত করতে পেরেছিল, যার খোঁজে কুকুরটা এখন জাসুসি করে ঘরের কোণায়, চৌকি-চাংড়ার তলায়, ধানক্ষেতে,
মাটির ঘরের মাটিয়া ধারিয়ার নিকটে নরম মাটি পেয়েও হাগার কথা ভুলে গর্ত খুঁড়ে চলে, ইঁদুরের খোঁজ।
ওদিকে ইঁদুরেরও দল আছে, দেশ আছে। তারা উজল চাঁদনিতে ফুটো গড়ে।
ঘূর্ণন দেখছি ৫: কারাকার
দ্যাওয়া গুরুগুরু। বিজলি-বিদ্যুৎ চমকালে কইয়ের ঝাঁকগুলো নাকি গুয়ার গাছে উঠতে লাগে
তরতর করে গাছের গা জাপটে ধরে পানির স্রোতে ওপরে ওঠে। কেউ একজন একদিন বলছিল:
এমনকি গুয়ার গাছের বাদায় পর্যন্ত বাসা বানায়, গাণ্ডারি পাখির আউলাঝাউলা বাসাঘরের মতনই বোধয় তা হবে।
কেউ বলেন ওভাবে মাছেরা, ডানা নেই তবু আকাশে উড়ে উবে যায়, দেওয়ার পানিতে মিশে যায়,
সেজন্য এমনকি মাছ-ছেড়ে-দেওয়া দিঘিতে ক’দিন পর কইয়ের কমতি চোখে পড়ে, জালুয়ার জাল নামলে।
এভাবে কে কই যায়, প্রায়শই এবং কোন নিরুপায়ে— তাহা মোদের অনেকের জানা, আমার অজানা।
আমি ডানা-ডিম্ব আর ঝাঁক, আর পানি, আর দেওয়ার গির্জানি চারণ করি, ধর কোনো ক্যাম্পে বসে—
বসে শুয়ে নয়তো থির না পেয়ে দেওয়ালগুলোকে সকল কথা বলতে ধড়ফড় করি,
ভয় পাই আবার ভরসাও পাই না, ওর কানের অস্তিত্বটা নিয়ে। দেওয়ালে আঁকি বাইসন।
এভাবে কারা কারা।
Posted in: January 2022, POETRY