প্রশান্ত হালদার-এর কবিতা

শৌখিন লোকেরাও পড়ে দেখতে পারেন

২০.

শুরু হলো নৈরাশ্যের মাস, আলোর তিতবিরক্ত হেগে দেওয়া

অস্থিরতা এক পরোপকার, আর নিজের পরাজয় মেনে না নেওয়ার অভিনয়
অথবা ব্রহ্মাণ্ডের খুদে রেপ্লিকা, মাইক্রোবোমা, বিদ্যুৎঝলক—
শুরু হলো কবিতার নামে ব্যাখ্যার শঙ্খঘোষীয় কালচার
দুঃখিত মনের লাজুক বিজ্ঞাপন, আর নিজেকে সওদা করার গা-সওয়া কৌশল
অথবা মানুষের কাছাকাছি থাকবার সামান্য চেষ্টার ইতর সংস্করণ
শুরু হলো নৈরাশ্যের রাত চাপা দেওয়ার সাঙ্গীতিক অপচেষ্টা
স্ট্রিট লাইট জ্বলে উঠবার হাস্যকর আশাবাদ, আত্মহত্যার অ্যাম্বিয়েন্স রচনা
অথবা কিছু বাঙালি কবিনাম্নী জীবের অসীমকে ছোঁয়ার এক কল্পনাক্ষমতাহীন ছ্যাঁচড়ামি
শুরু হলো নৈরাশ্যের প্রহর গোনার কাজ, মিউজিকের একনাগাড়ে হেগে যাওয়া

২১.

কাটা ছাগল না হয়েও কত উপমায় তাকে ব্যবহার করেছি। কাটা ছাগলের ভূমিকায় কখনও অভিনয় না করেও সেই সব উপমা গিলে অহো অহো করে মদ-মাংস, সঙ্গমে গিয়েছো, উপমাপ্রেমী কবি ও পাঠক, শুধু দৃশ্যটুকু, শুধু দৃশ্যকল্পের প্রেমটুকু লাগিয়েছো কাজে। হত্যাদৃশ্য বরাবর এরকম হিট। কাটা ছাগল যদি দৃশ্যমাত্র, তার স্বাদ নিয়ে, সেদ্ধ হওয়ার গুণাবলী নিয়ে এত এত আলোচনা কেন!
যখন লিখতে না পেরে ছটফট করি, কাটা ছাগলের উপমাই মনে আসে। আজ সব উপমা বাতিল, শুধু লিখতে না পারার যন্ত্রণাটুকু থাক, তার বেশি বলাটাই অকবিতা, বিদ্যায়তনিক

খণ্ড সময়ের এক মদখোর আমি, ঐতিহ্যের মুখে একনাগাড়ে মুতে যাওয়া লাম্পট্যের নতুন প্রতিভু
এই কথা দিকে দিকে প্রচারিত হোক, এই সম্মান, উপমাবিহীন এই নৌকোযাত্রা

২২.

এখন জানালা থেকে বাইরেটুকু দেখা
‘ভাষা এক বিপর্যয়’, ‘ভাষা এক ভায়োলেন্স’ বলে চিৎকার ছুঁড়ে দিচ্ছে জাপানী তরুণী
আমাকে বলছে নীল আকাশকে বিশ্বাস না করতে
আওয়াজ দিচ্ছে ভালোবাসা আর সাহসের উপর বিশ্বাস রেখেছি বলে

এত বেশি লিখে ফেলেছে, আমি ওর কথায় ভরসা রাখছি না
বৃষ্টিকে ঘরবন্দী নজরে দেখছি…
আঁভাগার্দদের দিন শেষ? টোটাল রিজেকশানে যাবো?
জাপানী তরুণী এটারনিটির পাশে একটা দিন নিয়ে কী করবে বুঝতে পারছে না
আমিও এই বন্দীদশায় এত সময় নিয়ে কী করব
কাল সকালে ভাববো ঠিক করেছি
আলো জ্বালিয়ে কিছু পাতা, দু-চার ফোঁটা বৃষ্টি,
জাপানী তরুণী… হাবিজাবি দেখছি

এত লিখে ফেললাম, বিশ্বাস হবে তোমাদের…?

Facebook Comments

Leave a Reply