অরিত্র সান্যাল-এর কবিতা
শব্দ
ওটি চালু হয়ে গেলে
আমার জীবন বদলে যাবে –
কোথায় সে বদল –
আমি ধানক্ষেতে নেমে দেখি ওপার থেকে
ভেসে আসছে একটি নিশ্চিন্ত জীবনের শীৎকার
একটি ধ্বনি বার বার ঘুরে ভোঁতা হয়ে
মিইয়ে যাচ্ছে – শব্দ যতদিন অব্দি
থাকে – ততদিন একটি কবির সচলতা –
তারপর নুড়ি পাথর অথবা অজানা যন্ত্রের
মতো সে হাতে এল আমার – এই বিকেলে
আলো তখনও খানিকটা বাকি।
আমি তাকে দু হাতে তুলে ঘষতে থাকি –
বলি, আমার সময় তুমি –
এই ধুলো তার দৃশ্য মাত্র
সঠিক স্পর্শে তো একদিন আমিও চালু হয়ে গিয়েছিলুম
তারপর পুরো জগৎ অক্ষর হয়ে
আমার লেখায় ঢুকে যায়…
এই যে থাকা – এই যে থেকে যাওয়া,
সংসারের মাধ্যাকর্ষণ – এর কোনো শেষ নেই
দশা
আমি জানতাম, তুমি একটা ফেরিওয়ালা।
জানতাম জেগে উঠেই তোমায় আকাশে দেখা যাবে।
কিন্তু, একরাশ কাগজ পিঠে নিয়ে তুমি কতক্ষণ থেকে আসছ না!
দূর থেকে ছোট বড় ঢেউ এসেছিল। তারা সব মুছে যাবে।
মেঘ সরে গিয়ে, এবার, আকাশে ক্ষুধার ফাটল ধরেছে
স্বরূপ বলতে, আমি সর্বদা বুঝি একটি ব্যপ্ত চরাচর,
সেখানে আমার দুঃখ হচ্ছে না, হাসি জ্বলছে না –
বলিরেখা রুগ্ন ধাতুর – জং ধরেছে।
চারপাশে ছড়িয়ে আছে দশার মতো কাগজের বাক্স।
সেগুলো ভেঙে ভেঙে
দুঃখের কৌণিকতা পরীক্ষা করি। সময়ের ধার ভোঁতা হয়ে হলুদ হয়ে ঝরে আমার সারাদিনের কাজের ওপর।
এতসব অবিন্যস্ত কথা এখানে কে রেখে গিয়েছে? কে?
আমি যতবার জেগে উঠি
পৃথিবীতে একটু একটু করে চিড় ধরে যায়।
Posted in: January 2022, POETRY
চমৎকার লেখা। দুর্দান্ত লাগল।