দীপেন্দু পাল-এর কবিতা
বিশ্বাস ছাড়া আমার চরিত্রে কোনো দোষ নেই
এখন ঘুম আসার আগের মুহূর্ত, অপেক্ষায় সাদা চুল। ঘড়ির কাঁটা গিলবে আমার শরীরটাকে জেলায় উপজেলায়। এ চোখ যেন আমার না, তা গান্ধারির। তাও আমি উঠে যাই। পায়ের জেলখানা যেন জুতো। এ শহর বংশবিস্তার করতে চাইবে। সব চেনা আসলেই চেনা হয় না। স্মৃতিরা দস্যু সেজে ঘুরছে; মাথার ভিতর। হিংস্র আরো হিংস্র। এ ভাতের স্বাদ বড্ড অন্যরকম। ধরা পড়ে গেলাম। তাও ধরা দিলাম না। নীল আকাশ, শুধু প্রান্তরে হাঁপিয়ে ওঠা শালিক। পাশের ঘরে যৌবন। আর পায়ের কাছে যৌনতা। ঝাপসা চোখ। খিদের নেশায় বাড়ির রাস্তা ধরি। এ পথে কুকুর, মানুষ। খালি যুদ্ধ। এখনও সময় হয়নি তাও সবটা শুরু হয়েছে। সবটা শেষ হয়েছে। শুধু কেউ টের পেল না। কোনটা রক্ত, কোনটা লাশের মতন শুধু নিস্তব্ধ। জানি না, আমার কি হলো? একটা কমলা লেবু মন খালি পচতে পচতে কালো হয়েছে। তাকে আমি শুধু শুন্যতা দিতে চাইনি। তোমার সাথে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। শুতে চাওয়ার ইচ্ছা তাও কমেনি। সব শরীর তোমার মত করে আমায় ধ্বংস করতে জানে না। তাই তোমাকেই চাই ধার দেনা করে হলেও। বিশ্বাস ছাড়া চরিত্রের কোনো দোষ নেই। তাই বিশ্বাস করো। পুরোনো দেরাজ ভাঙার আওয়াজ। মধ্যরাতের ঘুম ভাঙ্গার কথা ছিল। সে আসবে বলেছিল। খুন করতে আমাকে। টেবিলে ইঁদুর বিষ ছিল। গোটা তিনটে ঘন্টার পর সকাল আসলো। মানুষ আসলো। সাথে সেও আসলো। এ শরীর পৃথিবীর থেকে চেয়ে নেওয়া। লোভ লালসা মিটলে ফলটা তাকে ব্যার্থ গাছের মত ফিরিয়ে দিতে হয়। তারপর আবার গন্থাগারের নতুন বই। নতুন শরীর। সে আসবে বলছিল তাই আমি বিশ্বাস করেছিলাম। বিশ্বাস ছাড়া আমার চরিত্রে কোনো দোষ নেই।
সে ফিরবে না– তা মিথ্যা হয়ে যায় যদি
সে ফিরবে না–
তা মিথ্যা হয়ে যায় যদি;
আমি পাহাড় হয়েও
পাথর হবো না।
একটা গ্রহ সরে যেতে পারে একা
তার মতন
মধ্যরাতে বিছানা থেকে।
সে বুকের কাছে
এপিটাফ;
চোখের কাছে
আসে জল মুছতে?
এখনও
সে মানুষ খুন শেখেনি–
মানুষ হওয়ার আগে।
প্রশ্ন ঘিরে;
কুয়োরা উত্তরের জল
তুলে আনবে জোৎস্না হাতে।
গর্ভ চিনতে দেরি না হলেও
পৃথিবী
চিনতে দেরি হবে।
সব কথা ভাষা হবে না;
কিন্তু অচেনা শব্দ হবে।
সে ফিরবে না–
তা মিথ্যা হয়ে যায় যদি;
আমি পাহাড় হয়েও
পাথর হবো না।
সারাটারাত জুড়ে সনেটের
মত অন্ধকার।
শরীর জমবে;
যেন পাহাড়ের পেট
থেকে বেরোনো আগ্নেয়গিরি।
কথা ছিল–
এ সিম্ফোনির শেষে
শুধুই কান্না।
নিষ্ঠুর এক অরণ্য;
জানালো না কিভাবে
সে গিলে নিলো সব আলো।
দুঃখের মত
সব শুন্যতা জানাতে হয় না।
সে বুকের কাছে
এপিটাফ;
চোখের কাছে
আসে জল মুছতে।
তাকে আমি হারিয়ে ফেলেছি;
ঈষৎ তুহিন চেতনায়।
একটা গ্রহ সরে যেতে পারে একা
তার মতন
মধ্যরাতে বিছানা থেকে।
সে ফিরবে না আর–
আর সে ফিরবে না।
সে ফিরবে না–
তা মিথ্যা হয়ে যায় যদি;
আমি পাহাড় হয়েও
পাথর হবো না।
হবো না এবার আমি
বিষন্ন তরুলতা।
এখনও
সে মানুষ খুন শেখেনি–
মানুষ হওয়ার আগে।
স্পর্শ করেছি মহাকাশটাকে,
অন্ধকারটাকে কোনোদিনও না।
সে ফিরবে না–
তা মিথ্যা হয়ে যায় যদি;
আমি পাহাড় হয়েও
পাথর হবো না।
Posted in: December 2021, POETRY