তুষ্টি ভট্টাচার্য-র কবিতা

হেমন্ত

এই নভেম্বরের কুয়াশামাখা ভোরে
হাল্কা জামা পরে সে স্টেশনে পা রেখেছে।
সদ্য মুছে যাওয়া ভেজা স্টেশন চত্বরে তখন ফিনাইলের গন্ধ
একা একজন মানুষ প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে শিশির মেখে নিতে চেয়েছিল
শীত শীত ভাবের আমেজ গায়ে চড়িয়ে নিতে এসেছিল সে…

চায়ের দোকানি হাই তুলল শব্দ করে
খবরের কাগজের স্তূপ জড়ো হয়েছে নীচে
হকারদের ব্যস্ততা শুরু হওয়ার আগেই সে চলে এল ফাঁকা ওয়েটিং রুমের দরজায়

একটা বন্ধ দরজার এপারে তখন ট্রেনের শব্দ, মানুষের পায়ের শব্দকে ছাপিয়ে চলে যাচ্ছে…

পিম ও আমি

(২২)

উৎসব শেষে আমি আর পিম ফিরে এসেছি সেই চেনা পথে
উপত্যকা ছেড়ে চলেছি পাহাড়ের দিকে
হেমন্তের কুয়াশা আমাদের জাপটে ধরেছে
শিশিরে গলা ভারি-
কেউ কিছুই বলছি না যদিও
পিমের মার্বেল চোখে হিরের দ্যুতি
আমার মুখে চাপা উদ্ভাস-
একেই কি আনন্দ বলে পিম?
ঢাল বেয়ে গড়িয়ে নামছে কুচো পাথর
ধ্বস নামতেও পারে
এসময়ে কথার অভিঘাতে পাহাড় ক্ষুব্ধ হয়
শব্দ করিস না আর!
ধীরে ধীরে চল।
রডোডেন্ড্রনের শুকনো পাপড়ি বিছিয়ে আছে পথে
পাইনের নিস্তব্ধতা জানান দিচ্ছে
বরফ পড়ার সময় হয়ে এলো
তার আগে যতদূর ওঠা যায়-
অক্সিজেন ঘাটতি আমাদের হবে না,
পিম এসব জানে।

Facebook Comments

Leave a Reply