সমন্বয়-এর কবিতা

অনীহা



(১)
আমি নাগাল পেয়েছি।
ইদানিং। জানলা যেটা
রয়েছে আমার ঘরের
বাদামি খানিক, খানিক
নির্বাসিত – অথচ
তার বাইরে থেকেও
তাকে, সেই জানলাটিকে
দেখতে পেরেছি আমি।
কালো কালো কিছু
মানুষের প্রেত জমে,
জমে শক্ত করেছে তার
শরীর – কিছুটা মৃত,
বয়স্ক, চামরার মতন।

তবু নির্বাচিত শান্তি
তারও আছে।

(২)
শরীরের টানে শুধুই বিছানা।
বিছানা তার সুখের চাদর
অযথা বেদনার সুরাহা – তার কাছে
কখনো ঢেউ, বালি, বৃক্ষদেহ
কখনো আকাশও হয়েছে সে।

নিজের কনুইগুলোকে আর
বিশ্বাস হয় না।

(৩)
মুখেরই মধ্যে ঢেউ আটকে
হয়েছে প্লাস্টিক,
একটাই প্লাস্টিক।

ঘুমের ভেতরেও ইভেন,
ঘুম সন্দেহে যাকে শুধুই
শুধু শুধু প্লাস্টিক বলে
চালিয়ে দিয়েছি।

দেখলে, সে
ক্ষনে ক্ষনে জামা হয়েছে যার
পলকা একটা কাঁধবন্ধনী আছে  –
অনেকটা নিমো ব’লে
আমার পাঁচ বছরের
ভাই  – তারই মতন।

(৪)
পাখা নষ্ট হলে, শুধু
ডানা ডানা আর ডানা
বেজে ওঠে
বালিশে, বগলে, জানলায় শুধু
ডানা ডানা আর ডানা
বেজে ওঠে যেহেতু সারাটা মেঝে
             ছেয়ে গেছে মরা,
                         খেচরে খেচরে।

(৫)
তবলার বোলের মতন অনামী
একটা কাজের জন্যে, প্রতিদিন আমি
বেতন পাই। মাটিতে থাপর মেরে মেরে চলে
চার পাঁচ বছরের হাত ও পা। জানি এই তার একমাত্র বসতি ঢেউ ভাঙে আর আলো পুড়ে যায় , আলোর ভেতরে… যার জলের চোখ,
অবশ পাতার মতন চোখ যার –
সেই ভাসমান নির্বোধীকে ঈর্ষা করি… জানি এই তার একমাত্র বসতি হাতের তালুর মাফিক গোটা শহর
এতো অপরিচিত বন্ধুর মতন যে,
ছায়ার শক্ত অনুবাদ লেলিয়ে দিই,
বলি, “তাকে ছুঁয়ে অদৃশ্য করো এবং
পুনঃ পুনঃ শোকাহত হও দৃশ্যের প্রতি।” তারা আমারই করতলে ফিরে আসে,
জমে থাকতে থাকতে
জানি এই তাদের একমাত্র বসতি

Facebook Comments

Leave a Reply