পৌলমী গুহ-র কবিতা

যে সব দুঃখসমূহ

দূরাগত আনন্দধ্বনি বাজে…
এই দিয়ে দিন শুরু করি।
শালিকের ভেজা ঠোঁট থেকে
একফোঁটা রোদ গড়িয়ে আসে।
বিশ্বচরাচর অব্যক্ত ক্রন্দন
শিশির ও ঘাসে, ভুলে যাওয়া গানে,
এবং কিছু আলগোছে ঝরে যাওয়া
পাতায় মাখিয়ে রেখেছে। দেখি।
দেখি আর ভাবি, এইটুকু তো জীবন
আজ থেকে কালের দূরত্বে
রোদ ও হাওয়া দিক বদলায় অনায়াস।
এইটুকু জীবনে এতো আলো
কোথায় রেখে যাবো অবশেষে?

অপ্রেম-সাধনায়

হেমন্তের একটি অনাচারী দুপুর থাকে।
থাকে গত উৎসবের নিঃশ্বাস,
চোখের খাতা একে একে মাসের নাম তোলে।
চলে তো যাবোই,
তবু আর একটু থেকে যাই। এই কোণটিতে,
এই নরম হাতের তালু,
এই ঠোঁটের চারধারে অধিকারের লালায়
থেকে যাই এই বাহু ও বুক বেয়ে আরো গভীরে,
পাঁজরের খাঁজে অপরূপ যে ব্যথা।

তারপর চলে তো যাবোই।

যে দুঃখলতা অবিরত ঝরে ঝরে পড়ে,
তার গোড়ায় জল ঢালি।
আদুরে পাতার কোণা থেকে সরাই মরা ঘাস।
যাবতীয় অ-সুখ মেলে রাখি উঠোনে,
বুকের বাঁপাশে ধরে রাখি কার উষ্ণ নিঃশ্বাস।

তোমাকে মনে পড়বে না ভেবে দেখি,
রোজ এক বেইমান চড়ুই উঠোনে বসে থাকে।
আর এক তুমি কলকব্জা ভাঙা দেহে তোলো
অশ্রান্ত সুখের ঢেউ!
কিছুতেই ভোলা যায় না তাই।

Facebook Comments

Leave a Reply