জ্যোতির্ময় শীল-এর কবিতা

বিস্মরণ খানিক আলের মতো

বুকের কোনখানে সহসা ফাটল বেঁধা রোমশ কাঁটা
আদিম কিছু ইচ্ছে যেমন
সিঁড়ি বেয়ে যেমন তার অনধিকার প্রবেশ;
আরোহণ অবরোহণে,
ছায়া কাঁপা জীর্ণ তোরণে।
অথচ যখন বহুস্তর জুড়ে নিথরতা ঘনিয়ে আসে
আপোষহীন আয়নায় সারমেয় চুঁইয়ে পরা ক্লেশ,
তখন বিস্মরণ খানিক আলের মতো
সর্পিল হয়ে আপন পরিধি আগলায়।
শিকড়-নিবাসে তৃষ্ণা আদলে
অপেক্ষা পলাশ হয়ে ফোটে।

পিছুটান

অর্ধেকের বুননে পুকুরে ঝুঁকে পড়া ডালিম ডালে
খানিক ধারাপাত আগলে
অস্ফুটে জুড়ে যায় কিশলয়।

কবেকার ছেঁড়া পাতা
জল থৈ থৈ
নীলশির জলছবি
আড়মোড়া অব্যয়
ভাঙ্গা পাঁচিল
কিংবা সাঁকো জুড়ে পারাপার।

স্ফটিক অবয়বের মাঝে আঙ্গুল ছুঁয়ে দেখি
আর কতখানি নামতে বাকি;
অনুরণন শোনায়,
আর কারোর খোঁজ নেই।

রাক্ষস অতলে দ্রবীভূত

যখন বাতাসে বিষ
আর পাড়ায় পাড়ায় শূন্য গলিতে খিদের হাহাকার ছোটে,
উঠোনে অঙ্ক কষে আখের মাপি।
ভাঙা আয়নার বিকৃতি জুড়ে
আগলাতে আগলাতে শীর্ণতার ব্যাপ্তি বাড়ে।

কোনো এক ফিরতি পথে
কে যেন চটি জামা ছিঁড়ে
রোদ্দুরের রেশ মাখে রাস্তায়।
অনুভূতির তেপান্তরে
এ মফঃস্বলের রুক্ষতার বিস্তীর্ণ বিবাদে
আঁচড় কাটে পাঁজরে।

পরিপ্রেক্ষিতের অরুচি বুননে
কচুরিপানার পাঁকে টানাপোড়েনে
কালো বর্ণময় ঋণে কে যেন লিখে চলে সমাধিফলক অবিরত।

ছোঁয়াচে শীতলতার অতলে রাক্ষস দ্রবীভূত।

Facebook Comments

Leave a Reply