জুয়েল মাজহার-এর কবিতা

 তৃতীয় বিশ্ব

হেমন্ত দুপুরে ঢেউতোলা লাল ছাদ আর পায়রার
ঘ্যানর-ঘ্যানর নিয়ে দাঁড়িয়ে এক মফস্বলি স্টেশন

শ্বেতবসন এক সদ্যবিধবা
হাঁপাতে-হাঁপাতে ছুটছেন প্ল্যাটফরমের দিকে;

গাঁটরিহাতে লম্বা কদমে এগোচ্ছেন মাঝবয়েসি ভাসুরমশাই

আধ-ময়লা ধুতির আড় থেকে বেরিয়ে পড়া তাঁর
পায়ের ডিম দেখে মনে হচ্ছে, তিনি বেশ খেলপটু ;

পেছন ফিরে নিচুস্বরে তিনি বলছেন:
মনখারাপ কোরো না, নীলমণি। এবার সব হবে…

ততক্ষণে বৃহৎ লিঙ্গের মতো ট্রেন এসে গেল

তারার চাকুর নিচে

শস্য নেই। পড়ে আছে দীর্ঘ ধু-ধু মাঠ

মরা ডালে ঝরিয়ে অঙ্গার
স্বপ্নহীন রাত একা জ্বলে

যে কোনো পাখিই দেখে ভয় পাবে
উড়ে চলে যাবে

রাত্রি পাষাণভার
রাত্রি তার তীব্র অঙ্কুশে

ঘুমন্ত বাঘের চোখ বিদ্ধ করে হাসে

আমার পাপের ভারে , আমাদের মিলিত ছোবলে
শিশুর করোটি ঝরে বিসর্পিল নগ্ন নদীতীরে

তারার চাকুর নিচে অবিরাম নিজের চেষ্টায়
আকাশপাঁচিল থেকে জানালায় নেমে এলো চাঁদ

Facebook Comments

Leave a Reply