অনিকেশ দাশগুপ্ত-র কবিতা

নিসর্গ

অ্যাম্ফিথিয়েটার আর অবিনশ্বর ঘোড়াদের বর্তুলে
জ্যোতিষ্ক-প্রবণ হৃদয়ে আমি তলিয়ে যাই
কী নিরঙ্কুশ তার দপদপানি –
আধো জাগ্রত পিরামিডের দিকে
আমাদের ঘুম ভাঙা আয়না আজও ছুটে চলেছে –
সৃষ্টি আহ্লাদের অ্যাপোক্যালিপ্সে
হে গূঢ় সারণি
ভবঘুরে কড়িকাঠে আমি দেখেছি ক্ষমার্হ সফেন এক অবয়ব
তার দিকেই আরূঢ় কোনও গণিকালয়ে
মগধ শয্যার বায়বীয় ঊর্ধ্বাকাশ
সোনালি দারিদ্র্য ও ক্ষুধার্ত ক্ষেতের ভেতর মুষড়ে পড়া
দিন বলাকা নিদারুণ সুষুপ্তির
নিপুণ জুড়ে দেয় কত কলাম,কৌম,দুধের বিষণ্ণ দু’কশ
আবছায়া সেই মুখচ্ছবিতে স্বপ্নের জগন্ময় প্রতিধ্বনি
সান্দ্র মরু পালকের মতন অনন্ত সন্ধ্যার পারে মিলিয়ে যায়

অতিক্রম

আর কয়েক পা নামলেই বাড়িটির ছায়া টলমল ক’রে উঠবে
এটুকুই অনশ্বর – রন্ধনশালার আলুলায়িত স্নেহ দিগ্বিদিক
শয্যারত মারমেড-গর্ভে টাল খেয়ে তপ্ত শালুকের পাখা
মধ্যস্থ জায়মান যৌনতার মৃদু হাল চিড়ে দিচ্ছে
প্রসব ঘন হেমন্তে –
নীরবতম সত্য এবং স্বপ্নের ডামাডোল নিয়ে
পেছনে ফিরি,আকাশ নিম জানলায় কাঙ্ক্ষিত ধ্বনি প্রয়াস
কেমন শূন্যে,ভূতলে আরও দূরে, ছুঁড়ে দেয় লক্ষ পাখি ওম
অগণন মঞ্চের প্রতিমার মতন
আলোর বর্তুল ছুটে চলে তার সঙ্গে
মুহুর্মুহু আনন্দ রব – মার্জিত চালে দু’ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে
কোন সে দেশের সদাগর স্তম্ভিত সিল্ক বোনে,এসো লবণ,
আরও ভাঙো ওই সন্ধিস্থল,গূঢ় অতিক্রমের পিঠ

সময়

আকাশস্পর্শী খিলান আর সূর্যাস্তের সিঁড়িঘরের অন্তর্বর্তী
মুহ্যমান সময়ে পুতুল-ভঙ্গিমার ছায়া নড়ে ওঠে
সুগন্ধী স্নানের পৃষ্ঠাগুলি রৌদ্রের আদর মাখা শীতার্ত নেকড়ের
কবোষ্ণ স্তন্যপানের দিনে উগড়ে দেয় নিখাদ স্রোতবয়ান

হিম,অতলান্তিক অন্ধত্ব,পাখির শুভ্র বলিষ্ঠ রেখা
আর কুপিত সন্ধ্যার দিকে সেসব অবোধ গমন মনে পড়ে
বিদ্যার্থী-পরিবেদনার মতন ন্যুব্জ স্বপ্নঘর আমাদের

অশ্ব-চরিতার্থতার ঝুটো ইন্দ্রিয়সমূহে উদাসীন খিলান
সময়ানুগ তোলপাড়ের চোরাপথটিকে আড়াল করে

Facebook Comments

Leave a Reply