অনীক চক্রবর্তী-র কবিতা
জিয়নকাঠি
আমার অভ্যেস, ….. … জমিয়ে রাখা।
একান্ত একান্তের বৃদ্ধ, বোবা হয়ে যাওয়া কলম, অশীতিপর খোঁড়া চপ্পল, নাভিশ্বাস উঠে যাওয়া হাতঘড়ি এবং আরো অনেককিছু। অনেকে আমাকে তাই
বলে অগোছালো আর ওদের নাম দেয় জঞ্জাল। যে যাই বলুক। আমি তবু ফিরে ফিরে যাই ওদের কাছে। ওদের নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে আমার ভালো লাগে। ভালো লাগে আবার কোরে খুঁজে পেতে নতুন পুরোনোকে। সেই ভালো লাগার মাঝে
মাঝে মাঝে ফাউ পেয়ে যাই অদ্ভুত alchemy
যেমন
আজ পেলাম
ফেলে দেওয়া
বাসি
কাঠের জানলার পাল্লায় ফাটলধরা একফালি পুরোনো আকাশ
একদিন যখন ছিলাম প্রবল
ওই একফালি আকাশ আর আমি
বন্ধু ছিলাম তখন
আমরা জানতাম নিশ্চিত একদিন
আমাদের মেধা, গান আর প্রাণশক্তি মিটিয়ে দেবে দগ্ধ মাটির ক্ষিদে আর ফিরিয়ে দেবে ছুটির আনন্দ অন্ধ হাতুড়ির।
অমন আকাশ কিন্তু তখন অনেকেরই ছিলো। আমরা একসাথে গানও গেয়েছিলাম কিছু
আর দেখেছিলাম স্বপ্ন এমন
যেমন গরম টাটকা ভাতের গন্ধ।
আমরা, যাদের হাতে ছিলো জ্বলন্ত cigarette
কবিতার ঘ্রাণ
পায়ে সাইকেল
আর জানলার ফাটলে একফালি আকাশ।
আজ দুপুরের alchemy বুঝিয়ে দিলো ওই একফালি আকাশের কাছে আমরা
এখন জঞ্জাল
আমরা, যাদের হাতে লেগে গেছে চিতাভষ্মের ছাই
অথবা
মস্তিষ্কমর্গের মৃত্যুঘ্রাণ।
তবুও সেই নবীন নীলকে যখন দেখি
রাস্তায়, মাঠে, মেট্রোর কামরায় একঝাঁক
স্কুলফেরতা পাগলা দৌড়ের মাঝে
হাটবারে, ফলের দোকানে
নর্দমাটার ধারে
দুহাত তুলে
গলা উঁচিয়ে
চিৎকার করে উঠি, আর প্রগাঢ় এক সুনীলের মতো বলে উঠি –
বেঁচে থাকো
সহস্রাব্দের আয়ু পেরিয়ে
বেঁচে থাকো
মন্বন্তর আর মড়ক ছাড়িয়ে
বেঁচে থাকো
ভোরাই আলোয় বন্ধুহাত বাড়িয়ে ।।
Facebook Comments
Posted in: November 2021 - Cover Story, POETRY