ছন্দ না ছন্দ : পলাশ দে
বি.টি. রোড ঘ্যাঁষা বস্তি। ড্রেনের ওপর অথবা সরু গলি চলে যাওয়া ঝোপঝাড়ে উপচে পড়ে পেচ্ছাপ পায়খানা সন্তানপিন্ড।
জ্বর কাশি হাত পা ভেঙে যাওয়া… যে কোনো অসুখে তাদের হাতে দশ টাকা। সারিয়ে তুলতে হবে। সামান্য ওষুধের দোকানদার এতকিছু পারে না- আশপাশের বন্ধ কারখানায় গজিয়ে ওঠা ফ্ল্যাট, কমপ্লেক্স। আট তলা ছাদ থেকে উড়ে আসা ন্যাপকিন কখন যে খেলনা হয়ে যায়, বি.টি.রোডও জানতে পারে না।
ওপারে কোন্নগর । ‘ওপারে কোন নগর!’
জল বয়ে আমার বিষ্ময় সাঁতার কাটতে থাকে। পানিহাটীর ওই ছোট্ট ঘাটে বঙ্গোপসাগর বাসা বাঁধে। ফিঙে পাখির বন্ধু হয় উত্তরবঙ্গের কোনো হিম পাখি। সে আবার সঙ্গী করে আনে সাইবেরিয়া অথবা সিগালের আলসেমি। মেঘ কি ফ্রিজ হল হেমন্তের বিকেলে ? এই আশ্চর্য আলো ধরতে পারব ক্যামেরায়? ভাঁটার জলে যে দোল লাগছে… ঝুঁকে থাকা বট পাতার স্পর্শ… এই এই এইসব সংলাপ দৃশ্য ধ্বনি নৈঃশব্দ্য আমি আঁকড়ে ডুবে যেতে পারবো সিনেমায়!
ছন্দ না ছন্দ …এই সব
ঘোর
ঘোর লাগে
কোথায় লাগে খুঁজতে গিয়ে দেহ পেরিয়ে যায়। ওপারে কী? ভব আকাশে কালী ছেয়ে আসে
কচুপাতা মাথায় ছোটবেলা এখন ছাতায় ঢেকেছে। কিন্তু ছাতা তো হারায়।
জানো, ছাতা জন্মায় হারিয়ে যাওয়ার জন্য? অথচ, আমরা কখনো নিরুদ্দেশ ঘোষণা করিনি
ও আড়াল ফেরো ফিরে এসো সন্ধে হয়ে এলো …পড়তে বসো, কথা শোনো মায়ের,
ইশশশ কী নোংরা করেছিস শরীর,
যা ধুয়ে আয় যাআআআ
শরীর! দেহ যে পেরিয়ে এলাম একটু আগে?
মা পেরিয়ে গেছে তো কত বছর …
কে ডাকলো
ঘোর, সে কথা বলে না। ইশারাও নয়। অভিমান।
রাগ আর বিরক্তি জানতাম তুমি এসে অভিমান শেখালে,
কানু কানু আমি নিজের দিকে ছুটি ছুটে যাই …রাস্তা কাদা করি পিচ গলিয়ে রাখি আপন গরলে
যেতে হবে তো, দেহাতীত তুমি একসময় ইশারা করলেই আমি ছাতাজন্মে গিয়ে একটা কচুপাতা রেখে আসব তোমার ফ্ল্যাটে
ওই যে পাখিটা ডাকলে তুমি হেসে ওঠো, ডাহুক, কচুরিপানা না পেয়ে পুকুরের সন্ধান না পেয়ে আমার পেটে …
চুপি, জানিয়ে রাখলাম তোমাকে,
ডাহুক-ধ্বনি পারি এখন …
কেকা
ময়ূর ঘুরতে গেছে ডানায় হরতাল ঝুলিয়ে
কাশ জঙ্গল আর শীতলপুর টিলা পেরিয়ে দেখি
রং পড়ে পড়ে আছে
যেখানে সেখানে ফাঁকা
তোমার খুঁজে চলাগুলো ভর্তি হতে থাকে
আর রোদ্দুরপরীক্ষা দিতে দিতে আমি যাই
ত্রাণশিবির থেকে তোমার কেকা ভেসে আসছে
Posted in: October 2021 - Cover Story, POETRY