গল্পটি রোমান্টিক : দীপাঞ্জনা মণ্ডল

আসলে সমস্ত সময় সমস্ত স্থান ব্যবহৃত শুধু নতুন পাত্র তার অমৃত হয়ে ওঠে। একটি রোমান্টিক গল্পের প্রথম বাক্য হিসেবে পূর্বোক্ত চমৎকার।
দাগ আপনি তুলতে পারেন না। এমনকি দাগ তোলা যায় এটাই ঠিক প্রত্যক্ষ করতে পারেন না। দাগ ভালো, বিজ্ঞাপিত হয় এমন। খেয়াল করেছেন, আপনারা, যারা স্বভাবতই জীবনে অপারদর্শী, কেবল ছন্নছাড়া, যাদের পদ্মফুল আঁকার অভ্যাসের সময় কোনওদিন ডানদিকের পাপড়ির নৈপুণ্য বামদিকেরটির বাঁকে সমতায় আসেনি, তারা খুব নরম ইরেজার দিয়েও দাগ মুছতে পারেননি। বা পেরেছেন, কিন্তু আবার অসমতার পুনরাবৃত্তি, আবার মুছে ফেলে নিখুঁতের কাছে যেতে চেয়ে, আসলে ওই না পারা, ভুল, অদক্ষতা – গভীর থেকে গভীরতর করেছে। আপনি জানেন, লোকে দেখেছে কাগজ ক্ষতবিক্ষত, অথচ আপনার চোখের ক্ষয় যা কোনওভাবেই আপনারই আঙুলকে বোঝাতে পারছে না সে ঠিক কি চায় এবং তজ্জনিত আঙুলের অস্থিরতা, দেখেনি। ক্রমশ আপনি বিকলাঙ্গ হিসেবে করুণাসিক্ত হয়েছেন, আইনি মানবিকতায় ভিন্নভাবে সক্ষম অথবা।
একটি মৃতদেহ লুকিয়ে ফেলার সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা নাকি এক যুদ্ধভূমি। এই নিয়মে আপনি বৃষ্টির আড়াল নেন, অথবা কলঘরের ধারাস্নানের। সেই নিরালাও আপনাকে আশ্রয় দেয় না সময়ে সময়ে। কে যেন পড়ে আপনাকে, বলেছিল, একটা গোটা বাড়ির মধ্যে আপনি ঠিক একটা কলঘরের মতো। শোবার বা বসার ঘর না। যেখানে গোপনে কেবল দেহজ বর্জ্য ফেলা চলে নির্দ্বিধায় তারপর যার প্রতি ঘৃণা জাগে শাশ্বত, একটা বাড়ির মধ্যে, আপনি তাই, উপযোগিতার, উপভোগের নয়। কথাটা আপনাকে বিদ্যুৎপ্রবাহে পুড়িয়ে নিশ্চল করে দেবার মতো আঘাত করে এবং মনে পড়ে প্রতিটি উপেক্ষা, অবজ্ঞা আর প্রত্যাখ্যানের অনুষঙ্গে। অথচ আপনি ঠিক মানে বোঝেন না। এই কলঘরে আপনি বই পড়তেন। উঁহু, চটি নয়। সেই সবই যা সর্বসমক্ষে পড়লে কেউ সামাজিকভাবে হেয় হয় না। তবু্‌ আপনার মনে হত, যার আবেশ এখনও আছে – আপনি যেমন একটি বই খুলে পড়েন, বইটিও কি আপনাকে তেমন পড়তে চাইতে পারে না! না হলে কেন বা সে উন্মুক্ত করবে নিজেকে নিঃসঙ্কোচে। এরকম গুছিয়ে ভাবতেন কি? না হতে পারে। পরে হয়তো কার্যকারণ দাঁড় করিয়েছেন এমন। তো আপনি বইসহ কলঘরে যেতেন, তারপরে দরজার ঠিক পরে দেওয়াল থেকে জল ঢেলে ধুয়ে দিতেন অতীত, এরপর অনায়াসে চামড়ার ওপরে চাপানো ভাবমূর্তি পোশাক ঝোলানোর জায়গায় রেখে বই খুলে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে মেঝেতে বসে ডুবে যেতেন। বই পড়তে বসলে আপনি অনর্গল হাসি-কান্নায় থাকতেন আসলে, কলঘরে বই ছাড়া আর কেউ সে সব দেখত না। আপনি অনায়াস হতে পারতেন। ফলে পরে, বইটিকে স্বাচ্ছন্দ্য দিচ্ছেন এমন যা আপনি দাঁড় করিয়েছেন, তার প্রতি আপনার একটা ক্ষীণ সন্দেহ আছে। নিজেই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজেছেন না কি!
একবার কী হয়েছে জানেন, এই যে যেখানে আমরা থাকি, ঘুরিফিরি, ফিরে ফিরে ফিরে যাই, জায়গাটা অদ্ভুত তো খুব। সেখানে একটা মর্গ আছে, মর্গের কাছে প্রসূতিবিভাগ, আবার ঢিল ছোঁড়া দূরে একটা প্রাচীন বটের মতো বিশ্ববিদ্যালয়, আশপাশে নতুন-পুরোনো ছড়ানোছেটানো বই। সব মিলে জায়গাটা পাঁচমিশেলি নয়, ঐক। সব মিলেই তার স্বাদ-গন্ধ। এখানে এমন দুজন সবসময়েই পরস্পরকে ছুঁতে পারেন, যারা কখনও একে অপরকে চিনবেন না জানবেন না বুঝবেন না। একজন সকাল দেখেন চায়ের উনুনে আঁচ তুলতে তুলতে, অন্যজন দুপুরের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে ধর্মতলার ট্রামে ঝুল খেয়ে উঠে যান। এদের জীবনের আততির উৎস আলাদাই। অথবা এমন একজন মহিলা যিনি সদ্য জেনেছেন সন্তানসম্ভাবনা এবং একেবারেই একা এই প্রথমবার কীভাবে ব্যাপারটা মিটিয়ে ফেলবেন সেই দুর্ভাবনার মধ্যে শরীরের নিয়মে দেওয়ালে ভর দিয়ে গুলিয়ে ওঠা গা সামলে নিচ্ছেন, তার ঠিক পাশে আপনার মতো কেউ হাঁটার ছন্দ বজায় রেখেও ভাবছে ব্যাগ থেকে জলের বোতল বের করবে কিনা। জায়গাটায় এসে আপনি মেয়েটিকে দেখেছিলেন তার কারণ দেওয়ালে হাতের ভর দিয়ে ঝুঁকে থাকা মেয়েটির প্রক্ষোভ নয়, এই কদিন আগে এই দেওয়ালে দুজন একসঙ্গে কেমন আচমকা নির্ভার হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছিল তাই মনে পড়ায়। তাদের একজন আপনি হতেও পারেন, অথবা এই বাসযাত্রীদের অপেক্ষা করবার ছাউনির আড়ালে দেওয়ালে যেটুকু অন্ধকার জমে তার ভেতরে পৃথিবীর দুই সুন্দরতম বন্ধু বিপ্লবীর ছবির ওপরে অন্য এক শাশ্বত অথচ ক্ষণস্থায়ী ভাস্কর্যের সাক্ষ্যমাত্র হয়েছিল আপনার অনুভূতি, আপনি নিতান্তই তৃতীয় ব্যক্তি একজন ছিলেন। এদিকে এই দেওয়াল বিপ্লবের আর প্রেমের দুই আগুন একাই সামলেছে, যেমন এখন সামলাচ্ছে জল। আপনি হঠাৎ সচেতন সহনাগরিক হয়ে, একটু পিছিয়ে এলেন। জলের বোতলটা এগিয়ে দিলেন। এখন, এই যে দেওয়াল, সে এত বেশি প্রাজ্ঞ যে বিপ্লবের জন্য ইস্তেহার, প্রেমের জন্য আড়াল, অথবা এই যে দেখুন না এখনকার যে নিরাশ্রয় একাকিত্ব তার জন্য কিছুতেই একটা কোল অথবা বুক হয়ে উঠবে না, অনেক অভিজ্ঞতার ভার নিয়ে অবিচলিত থাকবে। সুতরাং আপনি — একজন তৃতীয় ব্যক্তি — আধচেনা ভাষার বিলাপ শুনবেন। একটি রক্তাল্পতায় ভুগতে থাকা নারীকে রক্তশূন্য হবার ভবিতব্যের নির্বাচন করে নিতে দেখবেন। জলের বোতল ফেরত নিয়ে, ওই মহিলার মাথায় হাত রাখতে না পারার অসম্পূর্ণতা নিয়ে আপনি টলমল করে এগিয়ে যাবেন গন্তব্যে। দেওয়াল কোনও মন্তব্য করবে না।
যেতে যেতে আপনার মনে হতে থাকবে পরের বার যখন পেরিয়ে আসবেন ওই পথ, কী মনে পড়বে, কোন আবেগ এবং কেন? সঙ্গে সঙ্গে মনে হল দেওয়ালটি ঠিক কী মনে রাখবে কখন! সে তো তার সমস্ত নিয়েই ওখানে নিশ্চল। তবে কি এই ঝাঁ ঝাঁ রোদ আর ঘনিয়ে আসা সন্ধের আঁধার বদলে দেবে তার মনে রাখার খোপ? হয়তো; যদি ধরেই নেওয়া হয় যে সে সবই ধরে রাখবে তার সত্তায়। এই সব ভাবতে ভাবতে আপনি আপনার অগমপারের সুদূর অভিসারের দিকে কিছুটা এগিয়ে যাবেন।
আপনি একটা ওষুধের দোকানের সামনে দাঁড়াবেন বাধ্যত। আপনার মনে পড়বে ইরেজার দিয়ে মলিন করে তোলা আর্ট পেপারের দৈন্য। মাথার ওপরে জ্বলতে থাকা স্পষ্টতা আপনাকে কিছুটা অন্ধ করে দেবে, প্রলয় বন্ধের জন্য যা অপর্যাপ্ত। ফলে আপনি আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম ব্যাগে পুরে আপাত নিশ্চিন্ততায় মেতে উঠবেন। ঠিক তক্ষুনি ফোন মাপা দুঃখের স্বরে আপনাকে জানাবে অনিবার্য কারণে আজকের আড্ডা বাতিল। একটি জরুরিতর আড্ডা আপনার ওইখান থেকেই ফিরে যাওয়ার বশ্যতা দাবি করে।
আড্ডা শব্দটিকে আপনি এখন তেমন চিনতে পারেন না। অথচ চিনতে চান। যেমন আপনি নিজেকে ঠিক কলঘর বলে অপাংক্তেয় করে দিতে পারেন না। আপনার নিখুঁত পাপড়ি এঁকে উঠতে না পারার মতোই একটি শব্দ একটি প্রকোষ্ঠ একটি সব দুমড়েমুচড়ে যেতে থাকে। আপনি ফিরতে চেষ্টা করেন। সেই ওষুধের দোকানের উলটোদিকের ফুটপাথ দিয়ে, একটু আগেই উত্তেজিত কাঁপতে থাকা হাতে যে ব্যাগ বন্ধ করেছিলেন চেইন টেনে, সেটি রাস্তার মাঝখানে একটা দুরন্ত বাসের চাকার নিচে ছুঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয় আপনার। কিন্তু এসব কিছুই করবেন না আপনি। কেবল ফিরতে থাকবেন। ফিরতে থাকবেন সেই সব ঠিকানায় একবার রওনা দিলে যেখানে আর কখনও ফেরা যায় না। ফিরতে চাইবেন অপাপবিদ্ধ সারল্যে, প্রথম একনিষ্ঠতায়, অবৈধ গোপনীয়তায়।
একটা ব্যস্ত সময় আপনাকে উগড়ে দিয়ে স্বচ্ছন্দে প্রবহমান থাকে। আপনার চারপাশ বরাবর ব্যস্ততা অথচ আপনি চলটা ওঠা আর্ট পেপারের অনিঃশেষ গহ্বরে ধেবড়ে বসে থাকেন। অথৈ। আপনার মনে পড়ে নীল-সবুজে তফাৎ করতে না পারা আপনার এক বন্ধুর কথা। তার পাশে রেখে তুলনায় নিজেকে একটু স্বাভাবিক করতে চান আপনি। একটা ডিঙি মেরে আর্ট পেপারের খোঁদলের ওপরে পা ঝুলিয়ে বসেন। এক কাপ চা খেলে ভালো লাগে এরকম পা নাচাতে নাচাতে বসে থাকার সময়। আপনি চা নেন। নোনতা বিস্কুট বেকারির। পেটে কিছুটা চিনি পৌঁছতেই আপনার ঝিঁঝিঁ ধরা শরীরে সাড় ফিরতে শুরু করে। আপনি বুঝতে পারেন শরীরের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণের মাত্রা শূন্যের কাছাকাছি, আর অবধারিতভাবে এর পরেই যা ক্রমশ পুরোপুরি আসবে আপনার হাতে, অথবা স্নায়ুতে, নাকি মাথায়। সর্বস্ব হারানোর ব্যথার থেকেও অন্তত অর্ধেকও পুনঃপ্রাপ্তির সম্ভাবনায় আপনি গুনগুন করে ওঠেন একটু, ভ্রমরকে বার্তাবহ হতে অনুরোধ করে।
আপনি যেই চা শেষ করে রাস্তায় নেমে পড়লেন, একটা আড্ডার পাশে পৌঁছে যান। আফগানিস্তানে বাংলাদেশের ক্রিকেট বল দিয়ে যে ওয়েবসিরিজ অভিনীত তার নবীন কবিপ্রতিভা চমৎকার এবং মেয়েটি সুড়সুড়ি দেয় আপনার চেতনার রঙে — প্রতিটি আড্ডা এরকম বলে, হ্যাঁ আপনার মতো আমরাও শুনি, বলিও। অথচ এই একটু আগে যে আড্ডাটা হল না, হলে সেটির স্বাদ-গন্ধ অন্য। তীব্র, কিছুটা বিকার ঘটায়। আপনি কখনও কখনও বুঝে ফেলেন সেই বিকারের স্বরূপ এবং কিছুটা সম্মোহিতের মতো আবার অপেক্ষা করেন দেওয়ালের অন্ধকার পাশ ঘেঁষে, ওষুধের দোকানের সামনে বা আর্ট পেপারের খোঁদলে, কখন ডাক আসবে।
একটি জানলার পাশ, সেখানে পুবদিকের বৃষ্টির ছাঁট আসে, সকালের অনাকাঙ্খিত আলোর রৌশনচৌকি বসে, দুটি কায়া পড়ে থাকে – একটি ধ্রুব অন্যটির শুধু মাথা বদলে বদলে যায়, আসলে অনস্তিত্ব। ওখানেই ঐ আড্ডায় আপনার মাথাটিও জাবর কাটায় অংশ নেয় কখনও। ব্যাপারটা যে জাবরকাটা-ই সে বিষয়ে এখন আপনার সংশয় নিয়মিত কমছে। জানলার নিচে একটি পুকুর। তাতে কেবল আদিম অন্ধকারের প্রহরা। স্নান, গৃহকর্ম, মাছধরা, হাঁস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, ধার্মিক বক কিছুই নেই, যেন একটি ছায়া পুকুর, একটি ক্যানভাসের অচঞ্চল পারদর্শিতা যেখানে কল্পনা স্থির। অথবা ঠিক কী কল্পনা করা যেতে পারে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করা আছে। বৃষ্টির জল, ঝরে পড়া গাছের পাতা ছাড়া শুধু দুর্বল হাওয়া ঐ পুকুরের জলকে ছুঁতে পারে। আপনি দেখতে পারেন। আরও অনেক মাথাও দেখে। কিন্তু কেউ ওতে অবগাহন করে না। ফলে পুকুরটির পাড় নেই, পাড়ে পায়ের জলছাপ নেই। আপনি এবং আরও অনেকে তবুও ওকে মেনে নিয়েছেন পুকুর হিসেবে। আসলে একটি পচা ডোবা। যার গর্ভে কিছু পাঁক, কিছু ভ্রূণহত্যা আর অনেক কৃমিকীট।
এর ঠিক পাশে যে আড্ডা, তার উচ্চারণে নোংরা কিছু বর্জ্য লেগে যায়, মুছতে গেলে আর্টপেপারে কলঙ্ক, এবং এটি কলঘর না। আজ আপনি নিরাপদ দূরত্বে। বাধ্যতায়। সত্য। তবু দূরে। ফলে একটু বেশি অন্য গন্ধ পাচ্ছেন।
এখান থেকে আমরা এ গল্পের শুরুতে যে প্রথম প্রকল্পটি নিয়েছিলাম সেখানে ফিরি। এই যে আপনি একবার গল্পের ঠিক প্রথম বাক্যটি দেখে এলেন, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ। টানে টানে, দ্বিতীয় বাক্যটিও আপনার কৃপাদৃষ্টি লাভ করেছে, ধরে নিই।
নিখুঁত এঁকে উঠতে না পারার ব্যর্থতা, কলঘরের একান্তে আশ্চর্য উন্মুক্ত হওয়ার অভ্যাস, একটি দেওয়ালের প্রজ্ঞা আর প্রত্যাহৃত আপনি — আপনার পরবর্তী সীমিত সংস্করণ বেঁচে যাওয়াটুকুকে অন্যরকম ভালোবাসাতে শেখায়। চায়ের ঠেকের সামাজিক আড্ডা থেকে পালিয়ে, বন্ধ ঘরের আদিম বিনিময়প্রথা থেকে প্রত্যাখ্যাত নিজেকে নিয়ে আপনি দেওয়ালটির গা ঘেঁষে দাঁড়ান। শুকনো শ্যাওলা, কালচে। যেন আবহমানের রক্ত পরতে পরতে চেপে ধরেছে দেওয়ালের কাঠামো। আপনি বুঝতে পারেন দেওয়ালটা উদাসীনতায় নয়, আতঙ্কে মূক হয়ে আছে এত ভার সয়ে। যেমন এর আগে আপনি মেয়েটির মাথায় হাত রাখতে পারেননি, দেওয়ালটি পাতেনি তার আশ্রয়, এখন তেমনি পড়ে থাকা আপনারা দুজন মধ্যবর্তী দূরত্ব বজায় রাখলেন। আপনাদের পারস্পরিক বোঝাপড়া দেখতে পেল, আপনি দিব্যি প্রার্থিত আহ্বানের থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবার সামর্থ্যে পৌঁছে যাচ্ছেন আর দেওয়ালকে আষ্টেপৃষ্টে আঁকড়ে ধরছে একটি তুলতুলে লাল পাতাওয়ালা বটের চারা। ফলে দেওয়াল ও আপনি একে অন্যের নতুনতর সময়ের দিকে এগিয়ে যাবার সম্ভাবনা পড়তে পারছেন। আপনাদের একে অন্যকে ছুঁতে হচ্ছে না। না ছুঁয়েও ছুঁতে পারার ব্যথা নিয়ে দেওয়াল বটের ঝুরির ছায়া বেড়ে উঠতে দেখে, আপনি আর্ট পেপারের খোঁদল থেকে উঠে কিছু আলো পান করেন। আপনারা দুজনেই অন্যকে বুঝতে পারার তৃপ্তির সংলগ্ন নিজেকে বোঝাতে না পারার ব্যর্থতা বয়ে সময় বাইতে থাকেন। খোঁদলের অন্ধকার আর বটের ঝুরি পরস্পরের দিকে অনিবার্য এগোয়।

Facebook Comments

Leave a Reply