অনিন্দিতা গুপ্ত রায়-এর

সরলরেখা ও বৃত্ত বিষয়ক

এক

সমস্ত কিছুকেই শূন্য দিয়ে গুন করলে তার মান আসলে শূন্য। এভাবেই ভুল সংখ্যার ফাঁদে সকাল বিস্বাদ হয়ে যায়। পরমায়ু থেকে দু একটা পাতা বাদামী। ধারাবাহিক বিস্ফোরণ-এ আলগা হয়ে আসছে পাহাড়তলির মাটি। ধসপ্রবণ এলাকা থেকে উঠে আসা সংকেত অগ্রাহ্য করছি। মেঘের রঙবদলে অন্য ঋতুগান। মেলে রাখা হাতের ওপর শুধু ছাই জমে যাচ্ছে। পুরনো বাসনপত্র ঘষেমেজে ফেলা ছাড়া আপাতত করণীয় নেই। তারপর ঢিমে আঁচে বন্ধ হাঁড়িতে দমপাক। দুষ্প্রাপ্য মশলা খুঁজে অভিযাত্রার কথাই শুধু পাঠ্যবই বলেছে, রন্ধনপ্রণালীর ইতিহাস নয়। তাই সঙ্গী হতে চাওয়া লতাগুল্ম জড়িয়ে থাকায় শিকলের ঝনঝন শোনে সভ্যতা শুধু। উপশমের আদর পায়ে মাড়িয়ে ঘোড়া ছোটে, টগবগ টগবগ…

দুই

চর্যাগীতি লিখতে লিখতে অনাবশ্যক কতকিছু ঢুকে পড়ে। সামান্য ইট সাজিয়ে শিশুটি পাহাড় গড়ে তোলে যেমন অনায়াস। রোদ বাড়তে বাড়তে কুয়াশা অলীক। নিজেকে অনাকাঙ্ক্ষিত জেনে নদীমুখ অন্যপথে।
দুরারোগ্য স্বপ্নের ভিতর ডুবে রোজ শ্মশানের ছাই চোখে ঢুকে আসে। অন্ধতা সম্বল করে বাড়ানো হাত স্পর্শে আগুন পেয়ে কুঁকড়ে অসাড়। তিতিবিরক্ত বাতাস চলে যায় উপত্যকা পেরিয়ে। ঝিঁঝিঁগান ও জোনাকিবিলাস থেকে এইবার মুছে ফেলা যায় সব বাতিল গল্পগাছা, স্মৃতির দালান। অনেক ওপর থেকে সামান্য খুঁড়িয়ে হাঁটাটুকু নজরে আসে না। আমরা তো জানি—
প্রতিটি স্বাধীনতাদিবসের গায়েই কিছু মৃত্যুর চিহ্ন লেগে থাকে নিয়মমাফিক!

Facebook Comments

Leave a Reply