ছাতারে… : সিন্ধু সোম
নারিকেল পাতার ফাঁকে আধ খাওয়া শব্দ লেগে থাকে…তাবড় কম্পন…তোমার জামার দাঁতে…ঘোষেদের ফাঁকা গোয়াল থেকে মাহতাদের নতুন এ সি বাস…এতদূর সন্ধে ছড়িয়েছে…কাটাঘায়ে মেঘ ঘিরে আসে…এতগুলা দিন…কেটে গেল আতা তলে বসে…এক কলি দুই কলি বীজ…কাকলি ফাটিয়ে ক্যাকোফোনি…কাকে প্রশ্ন করব? নিজের কাছে নিজে বহুদিন ভিড়তে পারি না…চড় লাথি…লোকে খালি মুখ চাপে…নাম লিলে কাইটবেক…বল তেনা…দড়ি…খুরি ঝুলে ঝুলে বিশেষণ ছুঁড়ে দিক সরাকের বেটা…বাউরি বলে ফেলে শেষে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, পাশের বাড়ি ঘণ্টা পাঁচেক হিক্কা তুলিতেছে…পুতলা বাউরির ভূত এসময় বাতাসের লোভে পড়ে নারিকেল পাতা শেষে গুঁড়া গুঁড়া বাউরির ছা…কানে শুইনথে লাইরথ বৈলে বাপে ডাইখথ তালি মাইরে…ছিল ছোটটিই…বিশেষ বল নাই…তার ভূতেরও…উড়তে গেলে জড়িয়ে পড়ে খেজুরে খেজুরে…’মাআআআআআ’…ঘোষেদের ছেলেটির আর্তনাদ ফাঁকা গোয়ালে ইকো হয়…
দূর থেকে দেখি আষাঢ়ের ঘন মড়াখেকো ভূত…বিবর্ণ…নির্জন…মাহাতাদের গলা তাকে চিৎ করে ফেলে ফের আড় দিয়ে কাটে…বাসের ব্যবসায় সেই সুখ নাই রে ভাই! তবু এসি বাস আর লাশ বওয়া গাড়ির মাঝে ফারাক নাই…এই যা রক্ষে! এসেছি অনেক দিন পর…এইবার…অস্তিত্ব দিনশেষে ফ্যাকাশে পেঁয়াজ…ঝাঁঝহীন নদী জুড়ে চেতনার লাশ…বহুদূরে…কানা পারা দুইটা আদিম ডট, তার মধ্যিখানে পচে গলে সার সারি সারি বিবর্ণ নাড়ি…সুপ্রিয়র বিয়ের সময় আসতে পারি নাই, এইখানে এলে মনে পড়ে…অথচ খাটার কথা ছিল…গতর খাটানো দেখে গা ম্যাজম্যাজ করে…দোতলা ছাদের থেইকে উয়াদের একতলা ঠেরে ঠেরে ফিরি…কেউ লাই…আসমান হুদহুইদ্যা…এমনই মিশির পারা কালো…কত শব্দ…চিলছাদ থেকে সিধা ছায়া ফেলে পানি ওঠা ভিতে…চেনা নাল চুষে চুষে মাড়িদের কানা ফুলে ঢোল…
তালপাতে চেরা বাউরিপাড়ার ঢুকতেই চোখে ঠোনা…দেয়াল লাল করে টি এম টির ওয়ালিং করে গেছে…বুড়ো বট…পঁদে জ্বলে প্যাথোলজি ল্যাব…সে থাক যার যেমন বাতি, অন্তত তেমন বলে কাল্ট ফিগারেরা…তার গোড়ায় থুতু শুঁকে শুয়োরের পাল ফিরে আসে…বাসন্তী মন্দিরের উল্টাপাশে গা এলানো নতুন দোকান বর্ষাদের…সেখানের হাওয়া বেশ, কিন্তু গাঁয়ের মুখ চেপে যেন দমবন্ধ লাগে…সাইকেল ভর্তি অন্ধকার…এথোড়ায় কয়লা চলছে…না চালালে সরকার চলবে না…আমি দেখি কয়লার বস্তা বাঁধা ডবল রডের হেলানো সাইকেলের পিছনে পুতলা বাউরির ছোটবেলা বসে বসে কানে ভরে দিচ্ছে গরম গরম টি এম টি বার…অ্যাসবেসটসের ছাতে পাঁজরহীন হিংসা, তাই…চুলকানোর আরামে…চীৎকার…আর্তনাদ…ক্যাকোফোনাস চাই বাল…অথচ আরামে…আওয়াজ জড়িয়ে ওঠে মরে আসা নারিকেল পাতাদের ফাঁকে…এ সি তে জুড়ানো ক্ষীর, সে আওয়াজ আলবাত মিঠে…মাহাতার ডিজে শুনি, রিয়ার ছেলের অন্নপ্রাশন…আমাদের সাথেই পড়ত…ফোঁটা ফোঁটা জমা জল…এই ছুঁড়ে দেওয়া, ঔদ্ধত্য পুতলাকে কোনো দিন শুনতে হবে না—এ পর্যন্ত ভেবে দশটা বন্ধুর বিয়ে দমাদ্দম কাটিয়ে দিতে পারি…না শুনলে দোষ নাই…প্রয়োজনে নিজের কাছে ভিড়ে নিজেকে লেলিয়ে দেব সেইসব অচ্ছুৎ কান বরাবর…কালা ভূত কেটে কেটে কাঁপে…চেনা পুঁজ চুষে চুষে মাড়িদের কানা ফুলে ঢোল…সে সমেত দাঁত মেলি…বাউরি পিষে রাখি…অন্ধকারে নাল আর চিকা মিলে চিকচিক চিকচিক…চিকচিক চিকচিক…বেশ লাগে…ক্যাচেকাইজেশনের দিন…মুখে বলি…ধৌর বাল, বসে থাকা দায়…
Posted in: August 2021, PROSE