অর্ক মন্ডল-এর কবিতা

তিনটি কবিতা

১.

ছেলেমানুষী গোপন কান্নার মতো ছোটো ছোটো ফুল ফুটেছে বাগানে। অযত্নের বাগান। ভ্যাপসা গরম। আকাশটাও তেমনি মেঘলা। আবহাওয়া অফিসের বার্তা, দক্ষিণবঙ্গের মনমেজাজ কিছুদিন এইরকম থাকবে। ফেরিওয়ালারা দুপুরবেলা যেমন রোয়াকে এসে বসে, বসবে। ডুরে লাল গামছায় সারাদিনের ঘাম মুছতে-মুছতে প্রাপ্য জলটুকু চাইবে। আলোপিসি, তার হলুদ হয়ে যাওয়া বোতলটা ফেলে দিয়ে নতুন বোতলে জল ভরে দিতে পারে।

২.

সুখুমিয়ারা অবিশ্রাম নামতা শিখেছে। রোদে স্নান করা কদম গাছে অগুনতি ছোটো ছোটো ঘুম। নেশার মতো রিমঝিমে ঘাম পিঠ। মেঘের মুকুট। জলচর পোকারা খাঁখাঁ দুপুরে সাঁতার কাটে। মান্তু বিড়ালীর কী চকচকে গা। দূরে কোন দোকানের সাটার খোলার গানে টফির মতো চঞ্চল হয়ে ওঠে নেড়ানেড়ি। সন্ধ্যের বেলি ফুল ধীরেধীরে জাঁকড়ে ধরলে মশারিকে কুয়াশা বানাতে ভালো লাগে। দুখুমিয়ার দুদন্ড সময় নেই। দুখুমিয়ারা কোথায় পৌঁছবে? দুখুমিয়া কোনোদিন মশারিকে কুয়াশা জানে না।

৩.

বিদুষী মালবিকা কানন, আপনার কণ্ঠে কোনো রাগ শুনলেই মনে আসে এক গ্রামীন পথ। পথটি ধীরস্থির পাড়ার ভেতর দিয়ে গিয়ে ধানমাঠে মুক্তি পেয়েছে। দুপাশে সজল ক্ষেত। কখনো মেঘ, কখনো রোদ। আপনার সংযত লয়ে ধীর বাতাস বয়। যত বার সমে পৌঁছন, পথ মৃদু বাঁক নেয়। প্রতি মীড়ে একেকটি বাবলার ছায়া। প্রতিটি গমকে পথ মৃদু অসমান, আরোহীসুদ্দ কাঁপে। খেয়াল যত দ্রুত, তত বাড়ে পথটিরও গতি। শেষে ছোট্ট তিহাই পার করে পৌঁছয় এক সাদা বাড়িতে। মাধবীলতায় ছাওয়া দরজা।

Facebook Comments

Posted in: August 2021, POETRY

Tagged as: , ,

Leave a Reply