অভিরূপ মন্ডল-এর কবিতা
আঁধারে ঘর
স্বপ্ন জুড়ে মৃত মুখ
রন্ধ্রে জাগে স্থাবর আস্থাবর সুরা।
ফিরে যাওয়া কঠিন
প্রজাপতি হতে শুঁয়োপোকা খোলসে।
পায়ের পাতায় সময়ের ছাপ
কঠিন নিদান তুলাদণ্ডের নিচে,
অন্ধ আড়ালে থিতিয়ে পরে
বুকের মাঝে জাগা মিনার,স্ট্যাচু
ভেঙেয়ায় চাতকের শব্দমালা
সীমানার খোঁজে সামরিক শিশুদল।
দেশ খোঁজে যারা
প্রতি তলদেশ খুঁজে
বড়ো কঠিন ছুড়ে ফেলা – আঁধারে যে ঘর।
মুখোমুখি বসে
মুখোমুখি বসে তাদের
মুখোমুখি বসে যাদের
অতীত ছেড়ে আসা চামড়াতে
মুখ ঢাকে নিকষ কালো বেড়াল,
এ শহরের আলোরা ঢেকে দেয় প্রিয় বান্ধবীর মুখ।
পরিচত প্রতিটি মৃতদেহর সামনে দাঁড়াতে দিচ্ছে না খুনে মশার দল,
এক এক সময় আকাশ জুড়ে চাঁদ
এক এক সময় চাঁদ জুড়ে অসম এক প্রেম।
এ শহরের আলোরা পরিচিত এক সুর ধরে,
স্মৃতি খুঁজলে শুধু সময়ের হেরফের।
শান্ত প্রহর ,
কিছু সোজাসুজি ঘৃণা,
নতুন দেহে পালন জন্মদিন।
অন্ধবিলাপ বকে তারা
অন্ধবিলাপ বকে যারা
দূরে সরে যায় স্রোত- ছিলো যত অভিমানী বাস্তু সাপ।
দূরে সরে যায় পৃথিবী থেকে পৃথিবীর অণু রূপ।
প্রসব
এ প্রতিচ্ছবি নিজস্ব নয়
এ প্রতিচ্ছবি সবার ও নয়
কেবল অনন্ত অন্ধকার মাখা সে মুখের প্রতিটি ভাঁজে
শীতল থেকে শীতশতর কুয়াশা,
এখন আর অশ্রু নামায় না মজে যাওয়া এ হ্রদের জল,
তীব্রতর ভূমিকম্পে জেগে ওঠে না পর্বত।
এ বাগান,
এ বসত বাড়ী ,
নিজস্ব কিছু নয়
উঠোন ময় গোধূলী বেলা তীব্র আছাড় খায়,
নৌকার মত ভেসে বেড়ায় শুক্লপক্ষের রাত।
দেখ
যেভাবে দেখতে হয়
উদ্বায়ী তরল সুখেদের।
এ ভাবে কি কাঁদে মানুষ?
এ ভাবে কি ফিরে যায় ?
এ ভাবেই ফিরে যায়
ধানের নাড়ায় বিদ্ধ অবধারিত নিয়তি
শেকড় জুড়ে যখন মৃত্যু প্রসব হয়।
বসন্ত পার করে বৃষ্টি নামে
অনন্ত সন্ধ্যে পারকরে যখন বৃষ্টি নামে
মনেপড়ে কাল রাতে জাগিয়ে রেখেছিলো
নদীর পাশের স্বরনীয় কারাগার।
এ বাগানের সব গাছে কি তোমার চেনা
হাতের রেখার মত বিন্যাস
বালিতে বালিতে কি পুরানো চাঁদের দাগ।
বুকপেতে রোদ শুষে নেয় তারা
তুমি ভালোবাসে যাদের জন্মদিনের আয়োজন করবে
বলেছিলে;
তারা অপেক্ষা করে
রাতশেষে তারা ভেঙে গড়ে নেয়
তোমার বাগানের বুকে জমে থাকা সব অদ্ভুত খেয়াল।
অনতি উষ্ণ কারাগারের ধোঁয়া জমে মুখে
অনন্ত ছায়া জমা জল খেয়ে ঢোক গেলো ;
তোমার বাগানের গাছে টাঙানো থাকে
রঙিন মাছের আঁশ।
কান পেতে রাখো
বৃষ্টি নামলো বলে দীর্ঘ বসন্ত পারকরে।
Posted in: August 2021, POETRY