তনুজ-এর কবিতা

উন্মার্গসঙ্গীত মেড ইজি

৯.

শ্রীম-কথিত বইটির ডালা
খুললেই খটকা লাগে

মনে হয়

অজান্তে বাংলাভাষার
অন্দরমহলের ডালা খুলে ফেলেছি

মূল চরিত্রটি সেখানে
স্ত্রীয়ের বাসি শাড়ি গায়ে
প্রতিমা ও প্রতীকের ঘরে লুকোচুরি খেলছেন

যেন একই সংসারে একাধিক নারী

প্রসঙ্গের আঁচল বুকে টেনে ঘন ঘন
চলে যাচ্ছেন শরীরের অন্তরে,সংলাপের অন্তরে

সহসা রূপ ও রসিকতার অক্ষত পর্দা ঠেলে
কখনও আবছা দেখা দিলে
পুরুষের যোনি

তার অর্ধ-পরিচিত স্ত্রী সেই অর্ধ-পরিচিত ত্রিভূজে
নিজের অর্ধ-পরিচিত তালুর মোম ঘষে
ষাট-ষাট আউড়ে যান

পুরুষটি:

হে রতিযন্ত্র,আমাকে কাব্যের কাছে নিয়ে যাও
হে রতিযন্ত্র,আমাকে কাব্যের কাছে নিয়ে যাও

দাঁড়ানো শিষ্যরা ভাবছে,
একটু অতিরেক হলেই বা ক্ষতি কী!

রাতারাতি তো আর পেট হয়ে যাবে না
বাংলাভাষার

বিশ্বস্ত শ্রমণেরা বলেন,
বাংলাভাষা হচ্ছে এক বিজন চাতকের ভাষা

যে ভাষায় পুরুষে-কাব্যে সঙ্গম হয়
যে ভাষায় নারী লিখতে গিয়ে কেউ লিখে ফেলে নাড়ি

যে ভাষায় একবার সন্ধ্যা নেমে এলে নদীর পিঠে
অদৃশ্য মাটির প্রদীপ জ্বলে ওঠে।

১০.

অবশ্য,কোনো এক সময় মদ ফুরিয়ে যেতই

পরোয়া নেই,ফি-শনিবার রাত বারোটার পর
বিহারী শ্রমিকদের ঝুপড়িগুলো কী আর ঝুপড়ি থাকে?
তারা হয়ে যায় অজস্র আনকাট,লো-ডেসিবল ড্যান্সফ্লোর,
দুপুরের হাড়ভাঙ্গা সব নিমুয়া,ববুয়ারা
ততক্ষণে ভ্যানড্রাইভারদের ছম্মকছল্লো হয়ে গেছে

কারো গলায় দশটাকার মালা কাঁপছে তো
কেউ ব্রায়ের চটক থেকে একটানে বার করে আনছে
টকটকে লাল রাজু গুটখা,আরো সাহসী কেউ হয়তো
লেহেঙ্গার গোপন দেশ জয় করে একের পর এক
নিপ্,হাফের নির্লজ্জ গনেশ উলটে দিচ্ছে
উদগ্রীব জনগণের হাতে

এই রেক্সিনছেঁড়া রাতে যদি উদ্বৃত্ত মদ চাও,
পায়ে পা মিলিয়ে,বুকে বুক মিলিয়ে,
চোটে চোট,বিটে বিট

নাচতে হবে

শুধু নোট দেখিয়ে সিল ফাটবে না,গুরু
ছত্রিশবার কামনা করতে হবে তাদের

প্রমাণ করতে হবে নিজেকে
তবেই,না হলে ‘লন্ড উঠাকে ভাগ্ ভোসড়িকে’

আমার পরাধীন বন্ধুর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল,
এই বিকল্প সমবায়ী ব্যবস্থাতেই নাকি
আসলি সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর খুশবু
করে লপালপ,কমরিয়া

শালা সোয়াইন,দু’পয়সার ড্রিমার

পেছন ফিরে একবার তাকা,
দ্যাখ,তোর স্বপ্নের গাঁড়ের ভেতরে,
আরো ভেতরে
যদুবংশের শেষ ললিপপ ঢুকছে।

Facebook Comments

Leave a Reply