তানিয়া চক্রবর্তী-র কবিতা

বিস্মৃতি

লিখছি তোমায়, ভাবছি তোমায়

ভাবনা মানে বৃত্তে তুমি আবর্তিত হচ্ছ

লিখছি তোমায়,
লিখতে লিখতে হারিয়ে যাবে তুমি
লিখতে লিখতে হালকা হবে আরো…

লেখা একটা স্বার্থপরের নেশাসক্ত ক্ষয়
লেখা মানে তোমার আমি সবটা নিচ্ছি শুষে

লেখা মানে মনের ভেতর থাকছ না আর তুমি
বেরিয়ে আসছ, ফুরিয়ে যাচ্ছ….

এবার হয়ত কেটেও যাবে মোহো
মোহোর মধ্যে মাছির ওড়া থাকে

মাছিরা সব কান্না জমা লোভের দড়ি বাঁধে
ফুলের ভেতর ফুল,মধুর ভেতর বিষ

আমরা তাই প্রিয় সব দূর থেকেই দেখি
কিন্তু তুমি গন্ডি পেরিয়ে এলে…
হয়ত এখন তোমায় ভুলেও যাব দ্রুত….

কিন্তু তুমি জবাফুলের রাশি
পায়ের ভেতর মেয়েলি গোছে হাঁটো
স্বপ্নে শিশুর কান্না হাসি রাখো
তাই এখন তোমায় ছাড়ার ইচ্ছে নেইও তেমন…

ঘাটের জলে মরা পদ্মের ঢেউ
বাতাসের কাল বারুদ ছিল খুব
কাকের পালক নাভি হয়ে ঠোঁটের হিসেব নিল…
বলল এমন মুখ লাল চিহ্ন ছাড়া?

ভোগ করে নে পাপী…
ভোগ না এলে যোগের ঘাটে মুখও লাগবে না

তোমায় তাই প্রসাদ ভেবে খাচ্ছি
..গঙ্গাফড়িং তারার গায়ে গ্রহের গতি দেখছে…
কেরোসিনের বাটি হয়ে
তোমার জন্য পাখনা মেলে উড়ছি.

ধরো,ধরো, একটু পরেই পালিয়ে যাব আমি
একটিবার মূর্খ হয়ে লটারি খেলো ক্ষ্যাপা…
এমন যদি বোতল পাও
মদও তোমার রক্তগঙ্গা মাংস দিয়ে রাঁধবে….

সন্দেহ

মধ্যরাত একটা প্লাস্টারের শব্দ
যে মানুষগুলো শুয়েই ঘুমিয়ে পড়ে
তাদের প্রেমিকা হলে প্লাস্টার খুলে যাবে
হাড় জোড়া লাগার আগেই….
মধ্যরাত্রে বৃষ্টি নেচেছে আবার
মানুষ আর ভিজতে জানে না
তাই বৃষ্টি নেমেছে গভীর সন্দেহে

ভিজেছিলাম সেদিন
কিন্তু যতখানি ভাবনায় ,ততখানি সামনে নয়
কেঁদেছিলাম সেদিন,
যতখানি তোমার কাছে, তার চেয়ে অনেক বেশী একাকী

লবঙ্গফুল নিয়ে ঘরে যাব তোমার
মোম জ্বালিয়ে বলব আবার ফুয়ে ফু রাখ
ফু দিতে দিতে দেখবে
তোমার অজস্র মায়াবী বেলুন
সেই প্রেমের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েছে….
যে প্রেম তোমার আমার অনেকটা খেয়েছে আগে
আমরা তার পয়ারে বসে ধুঁকছি….

এখন তুমি ঘুমিয়ে পড়তে বলো…
হয়ত তুমি কেউ তো ছিলে আমার
নাহলে কেন এত বড় পুরুষ ভর্তি রাজ্য জুড়ে
গন্ধে তোমার নাক বসল আপন মনের

অচেতন এক লেবু পাতার দু:খ
যাকে কেউ ধরতে পারি না
..তবু কেউ তো তুমি কখনো ছিলে আমার
তাই তো এত অচেনা হয়েও
চেনা হলে স্বপ্নে…
শরীর এত বীর তো নয়
যে প্রেমের গন্ধ জানে…
ও কাটাতে পারে মাংস খাওয়ার নেশা…

এসো, পঙ্গপালের সঙ্গ করি চলো…
খেতের মধ্যে উনুন হয়ে
তোমার দাড়িহীনের কালো মুখে সরষে রাখি তুলে,
এসো লাঙল চষি রোজ…
গরুর মতো বদ্ধ হয়ে ধর্ম করি একটু…

দেখো, কেমন শরীর ছাড়াও ভাবতে পারি তোমায়
দেখো, কেমন টানের বেগে টানতে পারি তোমায়

আমারও কিছু যোগ ছিল
এখন তা বিয়োগ করে ভোগ
ভোগ ও ভাগ যোগের বুদ্ধি দেয়….
এখন শরীর পিপাসা রাখছে চেপে
আলোর মতো পালক হয়ে
দুলিয়ে দাও ঝুঁটি…

রক্ত জানে,কেঁটে যাওয়ার স্বপ্ন…
এভাবে তাই মাঝের পথে ছাড়তে দিতে নেই
ছাড়ার মধ্যে জ্বরের জোর চেপে বসে থাকে

Facebook Comments

Leave a Reply