সৌমনা দাশগুপ্ত-র কবিতা

কলমকারি

গলুইয়ের চোখ এসে দৃশ্যে দাঁড়াল

মুখ তো ভণিতামাত্র, রক্তই নিজস্ব স্বর
খুন ঝরে খুন

গাছে গাছে মেধাফল, আমি শুধু মজ্জা চুষে খাই
আকাশ পেতেছি হাতে – কত কত শিশু উল্কা
তারাদের রেষারেষি ঘেঁষাঘেঁষি
নিজের করোটি খুলে উগরে দিচ্ছি ছাই

ঘাসে ঘাসে নক্ষত্রপ্রলাপ
স্ট্যালাকটাইট গুঁড়ো গুঁড়ো

ক্যালসিয়ামের বনে আমি তো হাঁটিনি
চুনে চুনে ঝলসানো জিভ
গান নিভে গেলে শুধু বোবাস্বর

অস্তির পাখিটি তবু বকম বকম

এ-কাফেলা আমারই পেছনে হাঁটে
যেন এক ফেউ, শিকারি নেউল

দেখি তার জিভে-দাঁতে মাংসের দাগ
রক্তের কলমকারি

কাফনগন্ধের রতি

ইচ্ছেই আসল রাজা; বাকিটা বিভ্রম
সোনার খনির থেকে দলা দলা পাঁক

পথ তো চলেছে কত বেগানা রাস্তায়

ঘরজোড়া চামচিকে; কটুগন্ধ
আর্দ্র বাড়িটির ভাঁজে কে যেন রেখেছে
মৃত্যুবীজ – কঙ্কালফসলে ভরা
গোলাঘরে নত হই সেজদায়

কাফনগন্ধের রতি

জমাজলে আলুথালু শুয়ে আছে মেঘ
এই তো বর্ষার গল্প; এখন আর সেভাবে টানে না
লবণে আক্রান্ত হয় বাড়ির কপাট

কী সাজাও দেয়ালে দেয়ালে
প্লুত হাড়, ছায়ার মুখোশ

নিভন্ত তন্দুরে রাখো খোলা জিভ
ভাপ ওঠে ভাপ

কাওয়াখাড়ির পথে যেতে
আমিও দেখেছি কত বোমারু বিমান
বাজ পড়ে খুলির ভেতরে

শার্সিতে ও কার মুখ
সে কি কোনো তরল অশনি

গলানো সোনার স্রোতে বাঁকাচোরা
মুখোশেরা ইশারায় ডাক দিয়ে যায়

Facebook Comments

2 thoughts on “সৌমনা দাশগুপ্ত-র কবিতা Leave a comment

  1. সৌমনাদি তোমার কবিতার ভাষাই আলাদা।নিজস্ব একটা ডিকশনে তুমি লেখো। প্রত্যেকটা কবিতা থেকে সেই ভাষার চমৎকারিতা পাওয়া যায়। নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল কবিতাগুলি। ভালো থেকো তুমি।

Leave a Reply