রিমা ঘোষ-এর কবিতা

শহর জুড়ে

সিঁথি থেকে চুঁইয়ে পড়া বিষাদ
কিম্বা, চোখের তলার একটুকরো কালোরাত
সাক্ষী থাকে সারাদিন ঘুরেও না বিক্রি হওয়া কবিতার বইয়ের প্রতিটি পাতার।

অল্প অল্প করে জমতে থাকে মুহূর্তরা, না পাওয়াদের হলুদ খাতায়।
রাতের পর রাত বালিশের গায়ে লেগে থাকে বেনামী অশ্রুকণার দাগ,
সমস্ত লেনদেন মিটিয়ে নিতে মন চায় সেই অক্ষত দাগেদের কাছে গিয়ে।
তবুও কবিতার ভিড়ে পড়ে থাকে প্রিয়তমা শব্দটি,
যা চাইলেও মেটানো যায়না বই থেকে,
এ শহরের প্রতিটা কাঠফাটা রোদ-কণা চেয়ে দেখে তোমাকে না মুছতে পারার অক্ষমতা।
যেই শহরের অলি-গলি বেয়ে তৈরি আমার শিরোনামহীন গল্পের
যেই শহর জানে আমার কবিতা বইয়ের দুঃখ,
যেই শহর জানে প্রতিদিন সেই দুঃখ বয়ে বেড়ানোর বিষণ্ণতা।

দোসর

এই কবিতায় তুমি আমি
একে অন্যের দোসর,
যেমনটা হয় মেঘ-পাহাড়।
নিভৃত জনপদের মেঘবালিকা
যেমন হেঁটে বেড়ায় পাহাড়ের বুকে

চারিদিক চুপ।

মেঘবলিকার নুপুরের আওয়াজে
আন্দোলিত হয় পাহাড়।
তেমন আমার হৃদয়ের ঝংকারে
কম্পিত হবে তোমার মন
না ছুঁয়েই বুঝতে পারবে আমার
ভালোথাকা।খারাপ থাকা।
এই কবিতায় তুমি আমি
আপন নই,পর
একে অন্যের দোসর।

শব্দের পিস্তল

সব মানুষ রাগে গর্জে উঠতে পারেনা।
তাদের শব্দ কবিতায় মাথা রাখে নির্ভয়ে।

কলমের কালি গড়িয়ে পড়ে কাগজের ওপর।
সেসব শব্দের পিস্তলের বুলেট আঘাত করে মিথ্যা স্তাবক কে।

স্তাবক দৌঁড়ে বেড়ায়,কিন্তু শব্দের বুলেটের দৌঁড়ের গতিবেগ স্তাবকের থেকে বেশি।
যুদ্ধ তলোয়ার ও হার মানে শব্দ পিস্তলের কাছে।

পিস্তল যখন গর্জে ওঠে শব্দেরা শান্ত হয়।
স্বপ্নের কবিতারা মাথা রাখে বুলেটের আগে।
শব্দের জয় হয়।

Facebook Comments

Leave a Reply