প্রদীপ চক্রবর্তী-র কবিতা

ছায়াসুর

এক .

আহত নদীর ভেতর সুড়ঙ্গ আছে …

কাঠের নবীন পেরিয়ে আজ
ডুঙরি ডগায় কাঠের ক্লোরোফিল
ব্যথাগ্রস্তের গানে নৌকোটি দুলছে
দুলছে বাংলা গানের শশাঙ্ক

অলীক ধোয়া সাইকেল সওয়ারি চলে যাচ্ছে দূর

মানুষের স্লেটে লেখা গাছ
শারীরিক রঙে বিন্দু এঁকে নেবে
উল্টোদিকে পলাশ
কত খোসবাই
পলাশের লাশ কই ? লাশের লাস্য

মজা নদী মৃত মাছ
মালতি থই পায় না কোন নদীতে আঙুল ছোঁয়াবে
কোন নদীতে বাংলাদেশের রাকা

পৃথিবীতে গুরুং হবার মতো পাহারায় কেউ নেই

দুই .

নিষাদ নীল , অতি নীল নিষাদ …

সমস্ত দিনের দাগ আর রঙ মুছে
বাসন্তীগ্রামের শশী বিড়বিড় করেই যাচ্ছে :
‘আপনা টাইম আয়েগা …আয়েগা আয়েগা
আপনা টাইম ‘…

তার ঘোড়ার শুনানি চলছে

চলচ্চিত্ত – চঞ্চরিতে ভবদুলালের সেজো মামা
ঘিয়ের ব্যবসা করতো
পাড়ার বয়াটে ছেলেছোকরা তাকে ‘ গব্যঘৃত ‘ বললেই রেগে টং

আজ দেখি গুঞ্জন বাজারে তার ফচকে ঘোড়া ফিকফিক করে সমানে হাসছে

চোখের কলাপী কথকথায় বাসন্তী গ্রামের পোয়াতি দিগবালারা ,
খুচরো পয়সার মতো হেসে ওঠে
হাসে আশরফের টাঙ্গা , প্যারাবোলা স্যার , জোনাকি পেশকার

পুরোনো বাড়িটার খসে পড়া পলেস্তরা জুড়ে মৃদু কালোয়াতি
বর্ষার পিঁপড়েরা আস্ত ও অটুট চলেছে
দলে থাকলে পিঁপড়েকেও হাতি মনে হয়

দুনিয়ার ভেতর থেকে এক একটা সুর নোটেশনে যায় …

গোলকধাম

এক .

মুখ দাও নি , মুখর ধুলোশব্দ
অনেকদিনের হাওয়া ঘুরে ঘুরে বিষয়ী হলো

ছায়াটুকরো চিরে পাতার ভেতর গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে মিশে থাকে বেহালা কাঠের এস্রাজ …

কার রক্তে কত দামি লিয়রের কণিকা
অলিভ ফুলের ঢল
আমিষের অবসাদে ঝুরো টোল
ছবিটি মুখস্ত কার ?

সুতোকল হিতার্থে তোমার প্রকল্প কী ?

গোটা দেশের চিৎকারে নিভে যায় ধূপ আর পিতলের প্রদীপ …

পাখির আঠা গড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর নাভিতে
বিভিন্ন যুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে কাকপক্ষীর ভিড়

তণুমুখে মেঘের কুকুর ডেকে ওঠে মেঘে
কত রঙ ভোরে ধোওয়া ,
তার কাছে পৃথিবী আর কতটুকু গোলক

দুই۔

কয়েকটা ছায়াশরীরী উঠ পিঠে বোঝা নিয়ে
শূন্যপথে ঝুঁকে ঝুঁকে হেঁটে মিলিয়ে গেলো

ছায়াহীন পৃথিবীতে বিবাহযোগ্যা মেয়েরা কুয়ো কাটতে চলেছে দলবেঁধে
সংকেত অভিজ্ঞা ওরা
গামছার খোঁটায় বাঁধা নিরক্ষীয় গ্রীষ্মের রাত
মহাশূন্যের মাথায় উড়ছে

কয়েকটা ছায়াশরীরী
কাঁচের পৃথিবী থেকে
দূরবীন কষে দেখছে তাদের …

Facebook Comments

Leave a Reply