পৌলমী গুহ-র কবিতা
বর্ষামঙ্গল
১.
তার নধর গা থেকে ঝরে রাজরক্ত।
প্রেমে যে বালিকা বেদনাতমা
তার গ্রীবাভঙ্গি মনে করে রাখি,
বোধহীন অশুদ্ধ আলোকে উথাল-পাতাল
ভালোবাসা নিষিদ্ধ ডালিম হয়ে ঝোলে।
একটি আগলহীন ঘর খাঁ-খাঁ করে।
বিছানায় পাতা থাকে ফুলছাপ।
তার জন্মদাগে আধপোড়া বিকেল নামে,
নামে আরো কিছু অগ্নিকুন্ড
একপাশে নতজানু একটি অন্তিম ভোর।
কারা যেন বেঁধে নিয়ে যায় একটি আগোছালো দীঘি…
২.
জড়ো করে রাখা থাকে অবিনয়ী ক্ষত।
বেদনাশীর্ষে ঝনাৎকার বাজে।
একটি নামগান সুর থেকে হতে থাকে ধ্বনি,
খসখসে হাত থেকে ভিক্ষা আসে।
পাড় ভেঙে ভেঙে শ্যাওলার ঘর ডোবে
একটি দুঃখী মাছ অনন্ত জ্যোৎস্নায় চিৎ হয়ে থাকে।
যে সানাই বাজেনি বলে
আমি রোজ রাত জেগে থাকি,
সে সানাই কোন জলে ভেসে যায়
তার খবর রাখে না কেউ।
জুলাই আসার আগে
একটি শহরের ভেতর ঘুম হয়ে ঝরে পড়ে চাঁদ।
কপালের এলোচুলে
যবনিকা পড়ে যায় দ্রুত।
পায়ের গোছে শিরশিরে কাদা,
কখনো এক আঙুল জলেও ডুবে যায় গলা।
রাতে খালি সার্সির ফিসফাস।
কেউ জাগে, কেউ বড়ো ভুলোমনা।
সকালে বালিশে খালি একপাশ জুড়ে
অগোছালো ভেজাভাব থাকে।
জুলাই আসার পরে
লাল ছাতা নিয়ে ওই যে যায়,
ধোঁয়া ধোঁয়া বৃষ্টির আড়ালে।
গল্পের শুরুটুকু লিখে ফেলে
ফুরিয়ে যায় বাকিটা।
কাতর পঙক্তি ঝুলে থাকে তবু,
তার ডাকে ওঠে না ঢেউ।
রোজ রাতে স্বপ্নে লেগে থাকে,
একটি লাল ছাতা।
টের পাই…
বাবা চলে গেছে বহুদিন ভাবিনি।
Posted in: July 2021 - Cover Story, POETRY
Khub valo likhecho!