লৌকিক – অলৌকিক – অলীক মানুষ : উমাপদ কর

[কবি ও গদ্যকার উমাপদ কর বছর আটেক আগে গল্প ও উপন্যাসকার সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের অনন্য উপন্যাস “অলীক মানুষ” নিয়ে চরিত্রভিত্তিক একটি দীর্ঘ আলোচনা তথা গদ্য লেখেন, যা প্রকাশ পায় “বিনির্মাণ” পত্রিকায়। সম্প্রতি অপরজন পত্রিকার তরফে সেই গদ্যটি প্রকাশ করতে চাইলে তিনি পূর্বোক্ত গদ্যটিকে সংযোজন-বিযোজন-বিবর্ধন ইত্যাদির মাধ্যমে পুনর্লিখিত করেন। গদ্যটি দীর্ঘ। লেখকের সম্মতিক্রমে আমরা বেশ কয়েকটি কিস্তিতে (৬-৭) আলোচনাটি প্রকাশ করব ধারাক্রমে প্রতিমাসে। এই সংখ্যায় তার চতুর্থ পর্ব।]

শফিউজ্জামান (আগের কিস্তির পর/ এই কিস্তিতে শফিউজ্জামান শেষ/ বাকি চরিত্রের কিছু অব্যাহত থাকবে।)

এখন কেন এই হত্যালীলা, এত রক্ত কেন?

শফি কি উন্মাদ, কামার্ত, স্বদেশী, বীতশ্রদ্ধ, অবদমিত কোনও কাম-ক্রোধের জ্বালায় জর্জরিত, ব্যর্থপ্রেমিক, দার্শনিক, মানসিক ভারসাম্যহীন, সিরিয়াল কিলার? প্রথমে উপন্যাস থেকে এ সম্পর্কে কয়েকটি মন্তব্য দেখা যাক। অর্থাৎ ঔপন্যাসিক নিজে এই সংক্রান্ত বিষয়ে পাঠকের চিন্তনকে কীভাবে আলোকিত করতে চান বা চান কিনা! তাঁর নিজস্ব কোনো তত্ত্ব এর পেছনে কাজ করছে কিনা সেটাও দেখা দরকার। শফি যে অত্যন্ত সাধারণ ও স্বাভাবিক একজন মানুষ তা তার কার্যাবলিতে প্রকাশ পায় না।

উপন্যাসের ভেতরের ভাবনা

ক) বারিচাচা – “বারি চৌধুরী শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বললেন, দেন ইউ আর এ হোমিসাইডাল ম্যানিয়াক।”

খ) খোকা – (দিলরুখ বেগম ও মণিরুজ্জামানের নাতি)। এর মন্তব্য শফির ফাঁসির পর। “ভ্যাট! ছোটদাদাজি— আমার ধারণা, ফ্রিডম ফাইটার ছিলেন না, বুঝলি কচি? উনি ছিলেন অ্যানারকিস্‌ট। বুঝিস কাদের অ্যানারকিস্‌ট বলে? যারা রাষ্ট্র বলে সরকার বলে কিছু মানে না। যারা বলে, মানুষ বর্‌ন-ফ্রি।”

গ) শফি – প্রায় প্রতিটি খুনের বিষয়ে শফির নিজস্ব মনোভাবনা বা কিছু কথা উপন্যাসে আছে। দেখা যাচ্ছে, কিছু খুনের ক্ষেত্রে সে তার ভাবনাকে আইডেন্টিফাই করতে পারছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে সে নিজেই জানে না, কেন সে খুন করছে বা করেছে। যেমন— “আর সেই মুহূর্তে একটি কথা ভাবিয়া শিহরিত হইলাম। সিতারার জন্য পান্না পেশোয়ারিকে আঘাত করিয়াছিলাম। এইবার স্বাধীনবালার জন্য স্ট্যানলিকে আঘাত করিলাম।” অর্থাৎ এ-দুটি ক্ষেত্রে সিতারা ও স্বাধীনবালা যে তার দুর্বলতার জায়গা, এবং দুই নারীই যে বধ্য দ্বারা পীড়িত আহত তা পরিস্কার। আবার অনন্ত নারায়ণকে হত্যার পেছনেও রত্নময়ীর ইচ্ছা কাজ করেছে। কিন্তু গোরাসাহেব, কাল্লু পাঠান কিংবা মুন্সি আবদুর রহমানের হত্যা যেন হত্যার জন্যই হত্যা। শুধু কি নেটিভ শুনে আত্মঅবমাননা বা স্বদেশীয়ানার উন্মাদনা, শুধু কি সিতারার প্রেমহীনতা বা কাল্লুর থেকে পুলিশের ভয়, কিংবা শুধু কি রত্নময়ীর সঙ্গে দেখা করতে না-দেওয়ার ক্ষোভ ইত্যাদিই এই খুনগুলির পিছনে? এখানে কি নিজস্ব পাগলপারা ভাব ও হতাশা, নিজেকে স্বাধীন প্রতিপন্ন করা ও একদা সিতারার কামনার আহ্বান এবং রত্নময়ীর জন্য অজানা এক কাতরতা ও নিজস্ব অহং-এর প্রকাশ ঘটছে না? মুন্সি আবদুর রহমানের ক্ষেত্রে যেন “সাময়িক মোহ মাত্র। অথবা তাহাকে জানাইবার ইচ্ছা ছিল যে, তাহার বাঞ্ছা পুরণ করিয়াছি।”

ঘ) দর্শন চিন্তা – পৃথিবী দুঃখময় এমন একটি দর্শনাক্রান্ত শফি। এই দর্শন নেতির দিকে মানুষকে ঠেলে। এমন কারণও কি এর পেছনে কাজ করে? উপন্যাস থেকে ছোট্ট একটি কথপোকথন—
“বারি চৌধুরী— জীবন তোমাকে কি কিছুই দেয়নি?
শফি— পৃথিবী দুঃখময়। বাসযোগ্য নহে।
বারি চৌধুরী— বেশ তো! তাকে বাসযোগ্য করার জন্য লড়াই করো।
শফি— সেটাই তো করছিলাম।”
পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার জন্য একের পর এক ব্যক্তিখুন। যুক্তি হিসেবে খুবই দুর্বল, কিন্তু একজন ব্যক্তিদ্রোহী্র এছাড়া যেন কোনো উপায়ও থাকে না।

উপন্যাস থেকে উঠে আসা সম্ভাবনা

এক বন্ধু, উপন্যাসটি খুঁটিয়ে পড়া এক পাঠকও, বলেন— আমার মনে হয় শফি ‘সেক্সসুয়াল সিরিয়াল কিলার’। আবার কেউ ভাবতে পারেন— উন্মার্গগামী লুম্পেন। কিন্তু শফি চরিত্রটি আমার কাছে যেভাবে ধরা দেয় বা প্রতীয়মান হয়, তা অনেকটা এইরকম— শৈশব পরিবেশ অলৌকিক গল্পে ভরপুর, যার সঙ্গে আপাতভাবে শিশুর দেখার কোনো মিল নেই। পরিবারের কোথাও কোনও শেকড় নেই, ফলে কোনও স্থানিক-ক্ষেত্রের ওপর তার সেভাবে মায়া গড়ে ওঠেনি। বরাবর পিতৃস্নেহে বঞ্চিত, বরং বলা যায় পিতা বহু দূরের এক আজব মানুষ বা মানুষের মতো অন্য কেউ। ঠাকুরমা-মার স্নেহ সে পেয়েছে, কিন্তু তাতেও এত অলৌকিকতার ঘনঘটা এবং পিতাকে জড়িয়েই, যে, সে অবাক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাস্তববোধের থেকে দূরে সরেছে। পাঠশালায় ও পরে ইংরেজি স্কুলে পড়ার সুবাদে শৈশবের নিজস্ব পাঠের সঙ্গে সম্পর্কহীনতায় ভুগেছে সে। এসবই তার মধ্যে শৈশব-কৈশোরে এক বিভ্রম সৃষ্টি করেছে। প্রাকযৌবনকালে প্রথম প্রেমিকাকে হারানোর ব্যথা ও কষ্ট শফি সারা জীবন বয়ে বেড়িয়েছে। প্রেমিকার বিয়ে হয়েছে তারই প্রতিবন্ধী কামলোলুপ দাদার সঙ্গে, যা তার মধ্যে সৃষ্টি করেছে ঘৃণা-বিদ্বেষ-অসহিষ্ণুতা। ব্যর্থপ্রেমে আঘাত পেয়েছে বা হার মেনেছে তার স্বাভাবিক আবেগ, যুক্তির জয়ে তার পরবর্তী বাঁচা। বারি চৌধুরীর প্রকৃতিপ্রেমের পাঠে সে মুগ্ধ, কিন্তু তাকে আত্মস্থ করতে যে বয়ঃক্রম ও নিমগ্নতার প্রয়োজন তা তার ছিল না। প্রকৃতিপ্রেম ও মানবপ্রেমের পার্থক্য না-বুঝেই হঠাৎ করে প্রেমহীন যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হয়ে পড়া ও তার ফলে তার মনে ঘৃণার উদ্রেক, নিজের শরীরকে অপবিত্র ভাবা তারমধ্যে প্রভাব ফেলেছে, যা স্বাভাবিক নয়। বড়ো গাজির নাস্তিকতা অথচ মুসলিম ধর্মের সাহায্যে এগারো বিবি, আবার তার মুসলিম-অস্মিতা, সর্বোপরী একটা রইসি অহমিকায় শফি চমকিত, কিন্তু সেভাবে প্রভাবিত নয়। এরপরে আর কোথাও নারীপ্রেম আর তার সেভাবে হলোই না। সিতারা, স্বাধীনবালা বা রত্নময়ী হয়তো তার দিকে প্রেমের ইঙ্গিত দিয়েছে কিন্তু ভালোবাসেনি। উলটে তাদের চোখের জল বারবার তাকে পীড়িত, উত্যক্ত, অসহিষ্ণু করেছে। স্বদেশীদের খুনের রাজনীতি যেমন সহজেই তাকে আকর্ষণ করেছে, তেমনি ব্রাহ্মধর্মের প্রভাবও সহজেই তার ওপর পড়েছে। বোঝা যায় সহজেই সে মানুষ ও মানুষকথিত নানা তত্ত্বে আস্থা রাখে, কিন্তু স্থির থাকতে পারে না। কোনো নিজস্বতা তৈরি হয় না তার মধ্যে। পরিবারের পিতা-কাকা-দাদাদের কুকীর্তি ও ওইরকম পিরদের পরিবারে এসব ঘটতে পারে, তা ছিল তার স্বপ্নের অতীত। যখন ঘটে, তখন রাগ-দুঃখ-অভিমান আর শুধু পরিবারেই সীমাবদ্ধ থাকে না, ছড়িয়ে পড়ে গোটা সমাজ চিন্তায়, সামাজিক কাঠামোর ওপর। আচার-আচরণ পড়াশোনায় হিন্দুদের মতো হলেও, কার্যত যে সে মুসলমান, সামাজিক অবস্থান বারবার তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেয়, যা তার মধ্যে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করে এবং ক্রমশ যে-কোনো ধর্মের প্রতি আস্থা হারিয়ে নাস্তিকতার দিকে নিজেকে ঠেলে দেয়। কার্যকারণে ব্যবহৃত হয়ে পড়া মানুষটি নেতির দিকে ছোটে, প্রেমহীনতায় ভোগে, ভেতরে ভেতরে ক্ষয়ের শুরু হয়, ক্রোধ বাড়ে, অজানা অস্মিতায় ভোগে, প্রায় অর্বাচীনের মতো দর্শনকে আঁকড়ে ধরতে চায়— জীবন ও মৃত্যু বস্তুত শুধুমাত্র উপাদানগত পার্থক্য। এক উপাদান থেকে ভিন্ন উপাদানে রূপান্তর। মূলত স্বপ্নে এক প্রেমময় সুন্দর পৃথিবী, মানুষে মানুষে ভেদহীন পৃথিবী, প্রকৃতির সৌন্দর্যে লালিত পৃথিবী, স্বাধীন বা মুক্তভাবে বাঁচার পৃথিবী। কিন্তু স্বপ্নভঙ্গের বেদনা তার নিত্যসঙ্গী। পৃথিবীটা বাসযোগ্য মনে হয় না তার। তাই এক ব্যক্তিক লড়াইয়ের দিকে অনেকসময় উদ্দেশ্যহীনভাবেই তার চলা। অবদমিত প্রেম-কাম-স্বপ্ন-বাসনার ভার বয়ে বেড়ানো এক মানুষ বারবার আত্মজনের বিশ্বাসভঙ্গের সম্মুখীন। ফলে সে মুক্তিকামীর বদলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে। স্বাধীনচেতার বদলে অস্মিতাযুক্ত হঠকারীতার পথে হাঁটে। জীবনের যত জটিল ফাঁস তা তার গলায় এসে জোটে, ভাবনাগত এই জটিলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার লোভে অবিবেচকের মতো কাজ করতে থাকে। যেন এক ঘোর, যেন এক স্বঘোষিত উন্মাদপনা, খুনেই যেন রিলিফ মিলতে পারে। তাই শফির চরিত্র এক জটিলমানসিকতার চরিত্র, বাস্তবের ধার ঘেঁষে এই চরিত্রেও যেন অবাস্তব বা অলৌকিকতার ছোঁয়া আছে। বাস্তব ও অতিবাস্তবের মেলবন্ধনে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন ঔপন্যাসিক ওইরকম একটি পরিবারের উত্তরাধিকারের সম্ভাবনাকে বাস্তবে মেশাতে।

চরিত্রের স্বাভাবিকতা অস্বাভাবিকতা

নানারকম স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যে ভরা কৈশোর থেকে শুরু করে সেলে বন্দি অবস্থা পর্যন্ত এই শফিউজ্জামান চরিত্রটি। স্ববিরোধিতা তার চরিত্রটিকে অনেক বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

ক) বুজুর্গ পিরের পুরুষ সন্তান সে। পরিবারের মধ্যে বাবাকে ঘিরে যে অলৌকিকতা তা তার কৈশোর জীবনে যেমন ছাপ ফেলেছে বা যেভাবে প্রভাবিত করেছে, তার একটা রেশ রয়ে গেছে, বোঝা যায়, নাস্তিক হয়েও দেখা গেছে, সে তার পারিবারিক ধারা ও ঐতিহ্যের প্রতি দায় রেখে যেন বারবারই নিজেকে দায়বদ্ধ করতে চেয়েছে। প্রভাবিত করেছে স্বল্প বয়সেই যাযাবরী জীবন। সেভাবে কোনো শেকড় নেই যেন জীবনে। এর প্রভাব পড়েছে তার পরবর্তী জীবনে। কোনোকিছুকে গভীরভাবে আঁকড়ে ধরার ক্ষেত্রে সে দৃঢ়বল হতে পারেনি। অনেকটা ভেসে ভেসে গেছে।

খ) কৈশোরকালের শেষ পর্যায়ে এসে প্রথম নারী-ভালোবাসা ব্যর্থ হওয়া এবং যেন যুক্তিতে বা ভিন্ন কারণে তার ভালোলাগা ভালোবাসার নারীকে অন্যের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া, সে আজীবন মেনে নিতে পারেনি। তার ভেতরে ক্রোধ, দ্রোহ সৃষ্টি হওয়ার পেছনে এটা প্রথম ও প্রধান কারণ। সেই রাগের রেশে কৈশোরেই আচমকা ঝোঁকের সঙ্গে নারীসঙ্গ, একই সঙ্গে শরীর কেন্দ্রিক ঘৃণার সৃষ্টি। এই নারীসঙ্গকে সে অপকর্ম হিসেবেই মেনেছে ও তার জন্য পরিতাপ করে গেছে। এটাও তার মধ্যে বিশেষ ধরনের এক রাগের কষ্টের জন্ম দিয়েছে, যার দায় সে মিটিয়েছে নানা অন্যায়কর্মে লিপ্ত হয়ে।

গ) যুবতী ও সুন্দরী নারীরা প্রায় সারা জীবন তার সঙ্গে ভালোলাগা ও ভালোবাসার অভিনয় করেছে বলেই তার বারবার মনে হয়েছে। হয়তো পূর্বপ্রেম ভোলার জন্য, সে আশ্রয় খুঁজেছে নারী-প্রেমে, কিন্তু সিতারা, স্বাধীনবালা, রত্নময়ী সবাই যেন তাদের কার্যসিদ্ধির টুলস হিসেবেই তাকে ব্যবহার করেছে। কেউ অন্তরের ভালোবাসা দেয়নি। পরিবারে মা ছাড়া সেভাবে ভালোবাসা পায়নি, সমাজে পেয়েছে গুটিকয় মানুষের কাছে, যারা আবার ভুলও বুঝেছে তাকে। কখনো তার মনে হয়েছে, মুসলমান হওয়ার জন্য সে ভালোবাসা পায়নি, কখনো বুঝেছে, হয়তো তার মধ্যেও ভালোবাসা বলে আর কোনো মূল্যবোধের অস্তিত্ব নেই। ভালোবাসার টানাপোড়েনে বিক্ষত-বিক্ষুব্ধ শফি তাই স্বাভাবিকভাবেই প্রেমের ক্ষেত্রে স্ববিরোধিতায় ভুগেছে।
ঘ) শফির ধী-শক্তি অসাধারণ। সে গড়পড়তা অন্য মুসলমান যুবকের চেয়ে বিদ্যায়-বুদ্ধিতে-উদারতায় অনেক ক্ষমতাসম্পন্ন। কিন্তু ভীষণ অস্থিরমস্তিষ্ক। কোনো কিছুতেই সে বেশিদিন নিজেকে স্থিত রাখতে পারেনি। আরেকটা বিষয়ও তার জীবনকে নানা খাতে বইয়েছে। সে সহজেই কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিত্বর, যারা প্রথার বাইরে নতুন কোনো তত্ত্ব তার কাছে হাজির করেছেন, দ্বারা ভীষণভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়েছে, এবং সেই ঘোরে কাটিয়েছে বেশ কিছু সময়।

Facebook Comments

Leave a Reply