শুভদীপ মৈত্র-র কবিতা
দৈনিক যাপন ও দ্রাব্যতা
৬
কোনো সংক্রামক সাড়া নেই
অথচ একটা করে সকাল চলে গেল
রোদ্দুরের বিলাসবেলা কাটিয়ে,
অতিথি তিথির জন্য কেন এত আয়োজন
কেন এত না-বলায় লীন হয়ে আছো…
কুহরের পর্দায় অপেক্ষা ঢাকা আছে
ওপারে, তোমার চিরুনি বোলানো শুরুয়াৎ
ফোলা চোখ আর মাজন ফেনানো মুখ;
এত দূর পর্যন্ত ভাবতে পারা যায়
যদিও আমার ঘুম কাটতে কাটতে
তুমি বোত্তিচেল্লির দেবীর মতো সুচারু,
আমি তাই ভেঙে ভেঙে দেখি পারিপার্শ্বিকে।
১০
চিকেন আ-লা-কিভের মতো
গলে পড়ছে না মুখরোচক সময়
আগুপিছু নেই শুধু একটা জিভ
লকলকে চেটে সাফ করে দিচ্ছে
প্রাকৃতিক নিয়ম নাকি অন্তর্ঘাত
ভাবী পৃথিবীর ডায়ানোসরেরা জানবে
আমরা বাক্স-মানুষেরা অপেক্ষা করব তাও
শুধু অপেক্ষা, বেগুনি অপেক্ষা সবুজ অপেক্ষা
মুচকি হেসে বলবে চলো আজ উদযাপন
অজু করো নতজানু হও ঊষরতম বালিতে
বাগান-মানুষেরা একদিন এই হননবৃষ্টি থামিয়ে
ভালবাসা ফোটাবে।
১১
বান্ধবীরা পাহাড়ে বেড়াতে চলে গেল,
যদিও একসঙ্গে নয় – আলাদা আলাদা।
সেখান থেকে তারা পাঠাচ্ছে রোদ আর কুয়াশা-মাখা চিঠি।
আমি পাহাড় থেকে নেমে আসার পরে
৪০০ বৈশাখে বিল্লি-ঝগড়া আর বিয়ার যাপনের পরে
শেষ রাতের সিনেমার প্রেক্ষাপটে সেই পাহাড় দেখছি
ঠাটবাটের পাহাড় আর ভবঘুরের পাহাড়
টলমলে শুঁড়ির পাহাড় আর শান্ত শ্রমণের পাহাড়।
এখন দুপুরে গরমে ঝিম ধরছে বার দুয়েক স্নানের পর,
এখন ঝিম-ধরা চোখে দেখছি
আমি তোমার জন্য ভেঙে আনছি লাল-শাদা গুরাসের থোকা
অথবা পীত রক্তের মতো গুরাস মদ
ঢেলে দিচ্ছি তোমার পাহাড়ি ছবি আঁকা গেলাসে।
১২
না বলা বাণীর মিয়নো ব্যাকুলতা নিয়ে বসে শ্রডিঙ্গারের বিড়াল।
আছে ও নেই হালকা ফুলকা প্রেমের কথা। মজারু হরমোন
তামাক-উচ্ছ্বাসে শিরা উপশিরায় কাঁপুনি ধরাল।
অনুভূতি ছাড়া সব কিছুরই নামকরণ হয়। এমনকি ঝড়েরও।
অপেক্ষা
মুঠোভাষের ধ্বক ধ্বক শব্দ। একটা টিক। দুটো টিক। নীল উপশম।
পাকাচুলে তরাস লাগে এমনকি এ মারণবেলায়।
তাই গুচ্ছের কাজ আমাকে বেছে নেয়, চিরুনির নিপুণ তল্লাশে।
ভেনিসের জল-সড়কে নাকি ডলফিনও ফিরেছে শতবর্ষ পরে
এদিকে আমার জো নেই কয়েক পা দূরে কোনো রমণীয় কাফিখানায়।
পকেটে রয়েছে ট্রাম্প কার্ড। যেমন জেমস বন্ড শেষ-দানে ফেলে।
তুরুপ মারার আগে হাত ফেলে দিতে হয় কখনো কখনো
এ-কথা ভুললে কী করে!