শতানীক রায়-র কবিতা
খাপছাড়া
১.
মৃত্যুর বেশে এদিক ওদিক সরে যাই। মৃত মানুষের স্বপ্ন দেখি যেন আমিই শব্দ আর শব্দাতীত গ্রহ। গ্রহণ-বর্জনে বেঁচে উঠি। জলের থাকার ওপর নির্ভর থাকি। আমাকে পাখি করে কেউ টেনে রাখে জলে। সুতোর এপিঠে শরীরের মতো উষ্ণ অথচ এতই তরল মেঘের ভিতর থাকি… প্রস্থান করি প্রসূতিগানে নিত্য নতুন যেন কিছুই ছিল না আদিতে ব্রহ্মাণ্ড ব্ৰহ্মলোক পর্যন্ত একই শরীর একই সময়ে আমি খাপছাড়া। ছেঁড়া গাছের মতো উন্নত। কোনো এক দেশের চিকিৎসায় অযথাই বেড়ে উঠি। এখন মানুষের মতো এই অদ্ভুত খোলে বেঁচে আছি। পুব আকাশের রাস্তা দেখছি নিয়ত…
২.
স্বরূপত শরীর। আর কিছু নেই। ছেঁড়া কথার মাঝে কীভাবে যে ভেসে গিয়ে অনন্ত হয়েছি। জীবন পর্যন্ত আমি কীভাবে শূন্য হয়ে আছি। কোন হাতের জন্য বসে আছি। ভাবছি আমারই মতো আরও একজন যেন দীর্ঘকালব্যাপী… স্থলপদ্ম ভেদ করে আছি। দেখেছি গানের ভেতরে দেহ। মর্মের ধারণে অনেক ছোটো জীবন। করুণা আসে কখনো। যেভাবে বাক্যের মধ্যে সংলাপ জড়িয়ে বাক্য হয় আরও। নতুন মানুষের কাছে মানুষের আশা রাখি পবিত্র নির্যাস থেকে বড়ো হওয়া। দীর্ঘ হওয়ার সময়। কেউ কাউকেই ডাকেনি। শুভ মুহূর্ত শুরু হয়নি অশ্রুর ভেতর নির্যাস। ভূমির মধ্যে ঘর। মাটি আর ব্রহ্মাণ্ডের জন্য এই এত রব! ভুল আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে। কে কাকে ডাকে! ভিড় হয়ে নেমে যাই। চিত্রে বড়ো হয়েছি। জীবন আর চিত্রের মাঝে কখনো কখনো শরীর আশ্রয় দেখে।
৩.
এই উন্মাদলিখন, এই বস্তুপরম্পরায় ভেসে যাই। সময়ের ভেতর ভেসে উঠি। মাছের শরীরের প্রবাহিত সোনা দিয়ে জগৎ সৃষ্টি। এইসব নিয়ম। আর কারাগার। মানুষ বাতাসে ভাসে— চিহ্নে জেগে থাকে। দেখে ভাঙা প্রাচীরের মধ্যে অটুট থাকে এখনও গাছ। ঋ মুক্ত শরীর আদিমতা পায়। কীভাবে যেন দেখে নেয় গঙ্গা। নদীর প্রতীকে ভাসে। এতবার ভেসে এতবার সঠিক শব্দের কাছে পৌঁছোনোর আশায় হঠাৎ লক্ষ করি এখানে সূর্যের বড়ো বেশি তাপ বড়ো বেশি প্রাপ্তি।