সমীরণ ঘোষ-র কবিতা

কাটাহাত যা লিখতে পারত

১.

যোনি থেকে বিস্ফোরণ। যোনি লাভার মুকুট
আমি কী জন্মলাম। ডানায় যকৃতের লাল
আমিই কী শূন্যভর কণার বনেদি
নদী পাথরের। ফাতনার শোলার ফড়িং
ভয় টোপ গিলছে। লাফাচ্ছে উঠোন
বঁটির সকাল ভেসে আতঙ্কের মিশ্র ভাষায়

২.

দুই কাটাহাত কথা বলছে আত্মভূমিকাহীন
ধাতুর অস্পষ্ট
কাটাজিভ ভিমরুলের ডানার যোজন
মরচে পৃষ্ঠায় নিব। খাঁখাঁ। খুলি ছুরির হেমন্ত
কাটা পা-ও ফিরবে। ছায়ার সিপিয়ায়
দিগন্তের দূত
কাটা লিঙ্গ অন্তরিক্ষে সুষুপ্তির লাল
কাটা কূপের স্তনেও মেঘ ফিসফিসে চর্বিসরল

৩.

কী গানে তোমাকে কাচবে এঁদো পাথরের ঠোঁট
খুনের অববাহিকায় ছেঁড়া হাঁস। ছেঁড়া বিকেল
পড়েছে
শিকের জানলায় দুই হাতের কঙ্কাল
কোটরে খুলির ঘুঘু। মৃত রবারের বন
ঠোঁটের পাথরে হাঁপ। ফাঁপা স্তনের দিব্য
রাত্রি কাচছে সরু গানে

৪.

বসে বসে লাল হয়ে উঠলাম
মুছে মুছে ক্যানভাসের সাদা
কেউ একজন আঁকবে তার স্তনের পাথর
খুব বৃষ্টি করছে
একজন আঁকবে তার শিশ্নের লোহা
টেনে তুলছে খনির গরজ
একজন আঁকবে যার ফুসফুসের সাদা
মৃতদুই পাখির শীৎকার
ক্যনভাসে বিয়ে করছে যৌনাঙ্গ উপড়ে আনা
সিন্ধুঘোটক
ক্যানভাসে হোলি খেলছে কাকতাড়ুয়ার
ছেঁড়া মাথা
ক্যনভাসে বাচ্চা দিচ্ছে কোটিবছরের
চুনের ঝিনুক

৫.

ফুলের পাথরে দুই মধুচোর তিরতিরে
গানের গোধূলি। চোখের মার্বেল ছুড়ে
শূন্য খেলছে। ভাঙা দিগন্তের দাঁড়
দুই কাটাহাত ফিসফিসে দাবার শিহর
কাটামাথা পরস্পর প্রদক্ষিণ করছে
পরস্পর চুমুর সূর্যাস্ত
মায়ের পিতল বেঁকে বাবার লোহায়
ছেলেমেয়ে ধাতুচুর। খেলার গর্জন

৬.

কাটা পা কোমরে গুঁজে ব্যাঙবাজি করছে
গোধূলির সং। কালো ঝিলের অঞ্জনা
তীর লোহার মহিষ। আলোর মরচে ঘরবাড়ি
কাটাহাত দাঁতে চেপে খঞ্জনা বসাচ্ছে পোড়া স্তন
যোনি প্রাচীন দেওঘর। শবাসনে ডিম্বাণু
তাজা শুক্রের মুণ্ডু চেবাচ্ছে

৭.

মরুআত্মার নিচে কীযেন ইঙ্গিত করছে ভাঙা
ক্যারাভান
জিপসি তাঁবুর টঙে কাটাহাত ততটাই আত্মবর্বর
হাড়ের ঘাগরায় যত মেয়ের মেরুন। ঠোঁট
আগ্নেয়শিলার শিস
কাটাহাতে ইশারা দিচ্ছে যত স্তনের পিতল

৮.

সাতমণ লোহা ঠুকে ঘুম আজও নিজেকে খুঁড়ছে
সাদা ফুসফুস পাখির ধাতব। দাঁড়ে অনন্তের কুহু
সূর্যাস্ত বসছে। গুয়াপান। পিয়ানোর ধুধু
মৃত জিভ রাতের ফকির
মৃত ঠোঁট ঘুমের লোহার

Facebook Comments

1 thought on “সমীরণ ঘোষ-র কবিতা Leave a comment

Leave a Reply