প্রদীপ চক্রবর্তী-র দুটি কবিতা

শরীরখেলা

এক .

অনুক্ত গ্রীবা শিহরণ
নিহত হওয়ার পরে
নতুন অস্ত্রের গায়ে
কত দামি কণিকা রেখেছেন রাজা

রাজার ডাকে নিলাম চলছে
এক এক করে বিক্রি হচ্ছে শরীরের জ্বালানি
উন্নাসিক গ্রন্থি ,
ঘুরে ঘুরে নুয়ে যায় রঙের রসায়ন হয়ে

একফালি মৃণালিনী যদি কিছু খনন নিয়ে ফেলে
তার শরীরের ডাল ভাত মেখে নিচ্ছে
ফোঁটায় ফোঁটায় গন্ধ লেবুর ধারণা

রাজার ডাকে নিলাম চলছে
মধ্যাহ্ন মায়াবী রোদে
পৃথিবী ছলকায় আর পানিপাঁড়ে জল ভরে ভোরের ,
দিশি নদী চুনিয়া …

দুই .

পাঁচমিশালি পাখিদের জন্য
অগোছালো মুখখানা
কোনও পুরোনো গলির মুখে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতো রোজ …

হরিণীর দেহভান্ডে আমিষের পরিমাণ আছে কতটুকু
ওই ধাবমান প্রশ্নে ,
ছায়াবাঘ ভোজ্যের টুকরোগুলো কুড়িয়ে নেয়

যে – পাপ অর্শেছে অর্গাজমে
বাঁধানো দাঁতের পেশাকর , ফড়ে আর বিদূষক
মুহূর্তবাদী |
হায় মালেক ! … মেখলিগঞ্জ থেকে ভেসে চলেছে হেমশশী

কত বর্ষার আলসেমি , নোংরা সবুজ ছিটের জামা মেঘমেদুর ,
যতই সে দূরে চলে যায়
অরক্ষিত আশ্চর্য সজীব
ততই সে কাছে আসে
বাগ মানাতে সাপের মতো হিসোচ্ছে তার হাপর
রক্তের শেষ বিন্দুটুকু অবিকল নেই আর …

তিন .

বাড়ির বিষয়ী দিনদুনিয়ার জোনাকিসমাজ …

শিখর শহর থেকে লাল নীল রঙ ধরেছে আকাশে

চৌকিদার আর মালি আর আমি
হানিফ , মকবুল , শশী
দুদিকের দুই গোলপোস্টে দাঁড়িয়ে পড়ে
সূর্য আর চাঁদ , গেরস্থ আর চোর
দীঘলখানি ভেঙে পড়ে খেলায়

দৈবাৎ ময়ূরীকে দেখতে পাই সাহুজির হাভেলিতে ,
কুহকে কুহকে কত চাঁদ আগে তুমি মুনাফা লুটেছো ময়ূরী ?

মেঘে ঢাকা তারা

(উৎসর্গ : প্রণম্য ঋত্বিককুমার ঘটক)

ভাষা একটা খালি টেবিল
ঘুমন্ত পানীয়র খোঁজে আমরা চেয়ার ছেড়ে উঠে পড়লাম আর ইতিহাস ঘাই মারছে কুয়াশায় |
দুর্বোধ হাওয়ার তলপেটে সাপের মতো হিসোচ্ছে
তার হাপর , জ্বলছে মানুষ আর তৈরী হচ্ছে গয়না

এই স্বর্ণধাতুর ভ্রমণ কাহিনী তবু চনমন করে ও শর্ত দেয়

মুখের মধ্যে মারিচ বধের পালায় ভল্ল হাতে শিকারী | দীর্ঘ রাত পরিত্যক্ত , পাথরের বাড়ি ,
পাথরের চোখ দুটো জ্বলছে নিভছে আর তিলে তিলে তৈরী হয়েছে পাখিদের খড়কুটো |
অতঃপর বৃষ্টির সম্মতি ছাড়াই জ্বলতে থাকে বিজাতীয় তোমারই মতো আনা দুআনার খোয়াবসম্ভার দেখা উদ্বৃত্ত মানুষের চোখ

কোটি কোটি নক্ষত্র , ছায়াপথ পেরিয়ে তখনো নিজের নেশায় নিজেই মত্ত দিশি মদের আত্মবমন ,
নুনবৈভব বা দুএকটা হুসহুস গোল্লাছুট লুকোচুরির দুপুর

খুঁজতে খুঁজতে টাইম মেশিনে চড়ে পরিত্যক্ত ধানক্ষেতের জমি আবিষ্কার করেছেন রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
লাবণ্যমন্থর নতজানু স্তাবকেরা
অশরীরী রক্ত খুঁটে খুঁটে পুরোনো খতিয়ান আগলে রেখেছে বুকে
মেঘে ঢাকা পেয়ালা পিরিচ থেকে উপচে পড়ছে নীতার বুকের চাপ চাপ রক্ত ۔۔۔۔

দাদা ۔۔۔۔ আমাদের দেশ গাঁ কার খিদের মানচিত্রে সিঁধিয়ে গেছে ۔۔۔?

শহরতলী সংলগ্ন ভাঁড়গণ মৃদুগন্ধে মন ভরে আছে ۔۔۔

Facebook Comments

Leave a Reply