ক্রন্সটাড বিদ্রোহের শতবর্ষপূর্তি : শঙ্কর রায়

‘তিতির পাখিদের যেমন মারা হয়, এদের সবাইকে ঠিক তেমন করে মারো’ – লেনিনের সাথে আলোচনা শেষে লিয়ঁ ত্রোৎস্কি পারস্পরিক সম্মতিতে ১৯২১ সালের ৫ মার্চ এমন নির্দেশ দেন সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে ক্রন্সটাড দ্বীপবর্তী দুর্গের বিক্ষুব্ধ ও বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে । তাঁরা ছিলেন ক্রন্সটাড সোভিয়েতের নৌসেনা। অকুতোভয় নৌ সৈনিক হিশেবে ক্রন্সটাড নাবিকদের গোটা রাশিয়ায় সুনাম ও জনপ্রিয়তা ১৯০৫ সালের রুশ বিপ্লবের সময় থেকে, যখন তাঁরা রোমানফ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ও গণবিপ্লবীদের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করেন। আবার ১৯১৭ সালের বলশেভিক অভ্যুত্থানের সময় হাজার হাজার ক্রন্সটাড নাবিকেরাই নেভা নদী বেয়ে অরোরা যুদ্ধ জাহাজ থেকে জারের শীত প্রাসাদে বোমাবর্ষণ করেন। তখন ত্রোৎস্কিই বাহাদুর ক্রন্সটাড নাবিকদের অভিনন্দিত করে শিরোপা দেন ‘দি রেডেস্ট অফ দি রেড।’ লেনিন বলেছিলেন, এরা বিপ্লবের গর্ব । তাই ক্ষমতাসীন বলশেভিক পার্টি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্রন্সটাড বিদ্রোহ রুশীয়দের মধ্যে বিস্ময় জাগিয়েছিল বৈকি, কারণ তাঁদের অগ্রণী বলশেভিক বলেই সবাই জানত, রেয়াৎ করত ।

বলশেভিক পার্টি ক্ষমতা দখলের পরে রাশিয়ায় প্রায় চার বছর গৃহযুদ্ধ শেষে ক্রন্সটাড নাবিকেরা স্বগৃহে ছুটিতে যাবার অনুমতি পান। গ্রামে ফিরে অগণিত মানুষের দুরবস্থা দেখে তাঁরা ব্যথিত, কুপিত হন। সেবার প্রবল শীতে শুধু ক্রন্সটাড ও পেট্রোগ্রাড নয়, প্রায় সব শহরেই ক্ষুধার হাহাকার। মানুষজন বলশেভিক শাসনে ক্রমশ তিতিবিরক্ত হচ্ছেন। যা সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ছিল, তা হ’ল যত মানুষ বস্তুগত বঞ্চনায় শিহরিত হচ্ছে, বলশেভিক হুকুমতের একনায়কতাবাদী চেহারা তত প্রকট হচ্ছে। পেট্রোগ্রাডের জনসংখ্যা ২৫ লক্ষ থেকে কমে ছ লক্ষে নেমে গিয়েছিল । ক্রনস্টাড নৌ সেনারা লেনিনের বিপ্লবী সমাজতন্ত্রের প্রতিশ্রুতির সাথে ভয়াবহ অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে বৈপরীত্য দেখে সংশয়ান্বিত এবং প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন। ক্রন্সটাড বিদ্রোহসহ এর মর্মন্তুদ বিবরণ আছে ভিক্টর সার্জের ১৯৪৫ সালে ফরাসী ভাষায় লেখা অসামান্য স্মৃতিকথা যা ১৯৪৭ সাল নাগাদ প্রকাশিত হয়। সার্জ তা দেখে যেতে পারেন নি। ইংরেজি অনুবাদ, Memoirs of A Revolutionary, ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয়। সার্জ ছিলেন বলশেভিক পার্টির সামনের সারির সদস্য। কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের প্রায় গোড়া থেকেই তার কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের উচ্চপদস্থ আধিকারিক। লেনিনের জীবনাবসানের পরে স্তালিন যখন আরো ক্ষমতাবান হয়ে ওঠেন, তিনি সার্জকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করেন। কারারুদ্ধ করেন। সার্জের মৃত্যুদণ্ডও হয়েছিল, সার্জের সাহিত্যানুরাগী রোমা রল্যাঁর হস্তক্ষেপে তা রদ হয়, কিন্তু রাশিয়া ছাড়তে হয়।

লেনিন ও ত্রোৎস্কি (সেই সময় বলশেভিক পার্টিকে সবাই বলত লেনিন ও ত্রোৎস্কি। রোজা লুক্সেমবার্গও তাঁর রুশ বিপ্লব রচনায় লিখেছিলেন লেনিন ও ত্রোৎস্কির পার্টি) তাঁদের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ ও হতাশার কারণ বোঝেন নি, বা বুঝতে চেষ্টাই করেন নি। অনেক পরে লেনিন তাঁর স্বহস্তে লিখিত শেষ লেখা, Better Fewer, But Better-এ বলশেভিক আমলাতন্ত্র ও তার বিষময় প্রভাব যে বৈপ্লবিক পথের অন্তরায়, তা কবুল করেন ও সেই প্রবণতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও নৈরাশ্য প্রকাশ করেছিলেন। বলশেভিক আমলের প্রায় প্রথম গেকেই রুশীদের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে অনেক বই ও গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। বামপন্থার বিপ্রতীপে নানা প্রবণতা দেখা দিয়েছিল রাশিয়ার কোনে কোনে। জনবিক্ষোভ নানা স্থানে ধর্মঘটে পরিণত হয়েছিল, অনেক জায়গায় দাঙ্গা হয়েছিল, কারখানা লকআউট ও তার প্রতিবাদ হলে, গ্রেপ্তার । অবশেষে ২৮ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় কমিউনিস্ট কর্তৃপক্ষ সামরিক আইন ঘোষণা করে। তথাচ প্রতিবাদ এবং প্রতিক্রিয়া তীব্রতর আকার নিতে থাকল, যা বিদ্রোহের দিকে ঠেলে নিয়ে গিয়েছিল ক্রন্সটাড বিপ্লবীদের।

ক্রন্সটাড বিপ্লবীরা চরিত্রগত ভাবে স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন, যেমন ছিলেন ১৮৭১-এর কমিউনার্দেরা, যাঁদের মার্ক্স অভিনন্দিত করেছিলেন, লেনিন ও তাঁর অনুগামী স্বতঃস্ফূর্ততার কঠোর সমালোচনা করতেন। মার্ক্স স্বতঃস্ফূর্ততাকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখেন নি বলেই কমিউনার্দ ও সাংবাদিক লিসাগারের লেখা ‘হিস্ট্রি অফ প্যারিস কমিউন’র উচ্চ প্রশংসা করতেন না।
বিদ্রোহ সবচেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছিল পেট্রোপাভ্লোভস্ক এবং সেভাস্তোপলে। কেন্দ্রীয় বলশেভিক নেতৃত্ব পেট্রোপাভলভস্কের প্রধান করণিক স্টেপান পেত্রিচেনকোর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিদ্রোহীদের কাছে পাঠিয়েছিল। তারা ২৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্রোহীদের ১৫টি দাবির একটি খসড়া তৈরি করেছিল যা ক্রনস্টাড সোভিয়েতে পেশ করা হয়েছিল।সেগুলির মধ্যে ছিল সমাবেশ ও বাক স্বাধীনতার সাবেক গণতান্ত্রিক অধিকার; সমতা ভিত্তিক পদক্ষেপ (যেমন সমস্ত শ্রমজীবী মানুষের জন্য সমান রেশন; এবং ক্ষমতার উপর বলশেভিক একচেটিয়া অধিকারের সমাপ্তি। ক্রনস্টাড নাবিকেরা ওয়ার কমিউনিজমের তীব্র বিরোধী ছিলেন কঠোর অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণেরও অবসান দাবি করেছিলেন। এ দাবিগুলি শুধু পেটোগ্রাড নয়, সারা দেশের মানুষের জন্যে চাওয়া হয়েছিল। বলা বাহুল্য, লেনিন-ত্রোৎস্কি সেসব মেনে নেয়া তো দূরের কথা, ক্রন্সটাড বিদ্রোহীদের প্রতি কঠোরতর অবস্থান নিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা ১ মার্চ এক জনসভা ডাকে। সেখানে প্রায় ১৬০০০ মানুষ শামিল হয়েছিলেন। বলশেভিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মিহাইল কালিনিন। কিন্তু তিনি ভাষণ শুরু করতেই তাঁকে সমবেত মানুষ বলতে দেন না। । পরের দিন পাভেল ভাসিলিয়েভ (ক্রনস্টাড সোভিয়েতের চেয়ারম্যান) এবং নিকোলাই কুজমিন (ভাইস-চেয়ারম্যান ও বাল্টিক নৌ বহরের রাজনৈতিক কমিশার) কমিটিটিকে প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিলে তাঁদের গ্রেপ্তার করে ও কারাবন্দী করে ।

যাই হোক, লাল ফৌজের প্রধান সংগঠক ত্রোৎস্কি ও মার্শাল মিহাইল তুখাচেসস্কি ক্রনস্টাড বিদ্রোহীদের দমন করতে গেলেন-তাঁরা ৫০ হাজার লাল ফৌজকে ত্রোৎস্কি বিদ্রোহীদের কোতল করার নৃশংস নির্দেশ দেন। ত্রোৎস্কি ও তুখাচেসস্কির নির্দেশে সাঁজোয়া বাহিনী ক্রন্সটাড দুর্গের উপর ক্রমাগত বোমাবর্ষণ করে চলে। এগারো দিন পরে লাল ফৌজ ব্যাপকতর আক্রমণ হানে এবং ১৮ ঘণ্টা যুদ্ধ চলে, যাতে প্রথম দিকে লাল ফৌজের ১০০০০ জওয়ান প্রাণ হারান। কয়েক শত বিদ্রোহী বন্দী হন, ৫০০ সেখানেই নিহত হ’ন এবং কমপক্ষে ২০০০ ক্রন্সটাড বিপ্লবীকে বিনা বিচারে বেয়নেটের গুঁতোয় কোতল করা হয়। বাকিদের সাইবেরিয়ায় গুলাগ শ্রম শিবিরে চালান করা হয়।

ক্রন্সটাড বিপ্লবীদের বিরুদ্ধে কুৎসার বন্যা বয়েছিল আর তার পেছনে ছিল লেনিন=ত্রোৎস্কির প্রচ্ছন্ন মদৎ। তারা নাকি শ্বেত সন্ত্রাসীদের শিবির ভুক্ত ছিল। তার কড়া জবাব আছে সার্জের স্মৃতিকথায়। ক্রন্সটাড বিপ্লবীরা বলশেভিকী দমন-পীড়নের সময়েও শ্লোগান তুলেছিল, ‘কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিক দীর্ঘজীবী হোক’। ক্রন্সটাড বিপ্লবীদের দাবি ছিল, সব ক্ষমতা সোভিয়েতগুলির উপর অর্পিত হোক। লেনিনেরও একই দাবি ছিল, তবে মুখে, কাজে নয়। বরং পার্টিতন্ত্রই কায়েম করার কথা বলেছিলেন, শ্রমিকদের শিক্ষা ও সামাজিক সংস্কৃতি সংক্রান্ত নিখিল রুশ কংগ্রেসে( ৩১ জুলাই ১৯১৯) লেনিন খোলাখুলি বললেন, ‘’হ্যাঁ, আমরা পার্টির একনায়কত্বই চাই, কারণ পার্টিই ক্ষমতা দখল করেছিল। “When we are reproached with having established a dictatorship of one party and, as you have heard, a united socialist front is proposed, we say, ‘Yes, it is a dictatorship of one party!This is what we stand for and we shall not shift from that position because it is the party that has won, in the course of decades, the position of vanguard of the entire factory and industrial proletariat”.(Lenin ,CW, Volume 29, 1972 pages 534-537)
ক্রন্সটাড বিদ্রোহের নায়ক ছিলেন আনাতোলি নিকোলায়েভিচ লামানভ, সেই সময় প্রকৌশল বিদ্যার তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তরুণ আনাতোলি ছিলেন ক্রন্সটাড সোভিয়েতের ভাইস চেয়ারম্যান (কিছুকাল চেয়ারম্যানও) এবং ক্রন্সটাড ইজভেস্তিয়ার প্রধান সম্পাদক। তিনি ১৯১৯-এ বলশেভিক পার্টির প্রার্থী সদস্য। তাঁকে ‘প্রতিবিপ্লবী’ ও ক্রন্সটাড বিদ্রোহের তাত্ত্বিক এই অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ও তা কার্যকরী হয়।

ক্রন্সটাড বিদ্রোহ নিয়ে অন্তত ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত সম্ভবত সবচেয়ে প্রামাণ্য গ্রন্থ ইসরায়েল গেৎসলারের Kronstadt 1917-21: The fate of a Soviet Democracy (৩০০পৃষ্ঠার অল্প বেশি) ভূমিকার গোড়াতেই বলেছেন, ‘Kronstadt is best known for its March 1921 uprising, when, with the battle-cry ‘All Power to Soviets and Not to Parties’, its disillusioned revolutionary sailors, soldiers and workers rose against Bolshevik Soviet power, the first and major example of left-wing protest from below against ‘the complete dominance of the Communist party. The revolt was all the more confounding to the Communist leaders since it came from the hard core of their social base, from the men who had been the shock-troops of the October revolution, the standard bearers of Soviet power during the civil war. The student of the Kronstadt uprising is well served by Russian sources, and by Western and Soviet studies (though the latter are very party-minded and tendentious)

গেৎসলার লিখেছেন বিপ্লবীরা শহরতলিতে ক্রনস্ট্যাড সোভিয়েতের দাবিগুলি সামনে রেখে লিফলেট বিতরণ করেন । তাঁরা বিপ্লব নবায়নের জন্য একটি বিকল্প কর্মসূচীর কথা বলেন, যার ভিত্তি ব্যাপক গণতান্ত্রিক পরিচালনা ধারা, গোপন ব্যালট সহ সোভিয়েতদের জন্য নতুন নির্বাচন সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি ইত্যাদি । এছাড়া প্রকৌশলবিদ ও কারিগরদের কর্মসংস্থানের স্বাধীনতা এবং রাস্তায় সেনাবাহিনীর টহলগুলি অবিলম্বে প্রত্যাহার। যা সাধারণ জনগণের দ্বারা বিনামূল্যে সরবরাহের পণ্যক্রয় রোধ করেছিল। ক্রোনস্ট্যাড সোভিয়েত, ক্রোনস্টাডেট গ্যারিসন এবং প্রথম এবং দ্বিতীয় স্কোয়াড্রনের নাবিকরা এই প্রোগ্রামটি গ্রহণের জন্য বিদ্রোহ করেছিল।
সুপরিকল্পিত কুৎসা প্রচার যে লেনিন-ত্রোৎস্কির আমলেই বলশেভিক সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছিল, গেৎসলার সখেদে লিখেছিলেন “Rumors played an ugly part in the whole business. With the official press carrying nothing but eulogies of the regime’s successes, with the Cheka operating in the shadows, every moment brought its new, deadly rumor. Hard upon the news about the Petrograd strikes, word reached Kronstadt that the strikers were being arrested en masse, and that the troops were occupying the factories. That was untrue, or at least greatly exaggerated, although the Cheka, running true to form, had undoubtedly gone about making stupid arrests. (Most of these arrests were for short periods.) Hardly a day passed without my seeing Serge Zorin, the secretary of the Petrograd Committee. I knew, therefore, how many worries he had on his mind, and how determined he was not to adopt repressive measures against workers. I also knew that, in his opinion, persuasion was the only weapon that would prove effective in a situation of this kind, and how, to back up his opinion he was bringing in wagon-loads of foodstuffs. He told me, laughingly, that once he had found himself in a district where the Left. Social Revolutionaries had popularized the slogan: “Long Live the Constituent Assembly!”—which clearly was another way of saying “Down with Bolshevism!”. “I announced”, he went on, “the arrival of several wagons full of food. In the twinkling of an eye it turned the situation upside down.”
ক্রন্সটাড বিদ্রোহ ১৯২১ সালে বলশেভিকদের শঙ্কিত ও বিস্মিত করেছিল এ ব্যাপারে সংশয়ের অবকাশ নেই। ক্রন্সটাড বিদ্রোহীরা বলশেভিক পার্টি নেতৃত্বকে ‘সোভিয়েতের হাতে সমস্ত ক্ষমতা’র আওয়াজ ছিল, যে শ্লোগানের জন্মদাতা লেনিন স্বয়ং। সেই লেনিনই সে পথ থেকে সরে বলশেভিক পার্টির একনায়কতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিলেন,দুনিয়া জুড়ে সরকারী কমিউনিস্টরা একে প্রলেতারিইয়েত বলে চালাতে চেয়েছিল। আজকে অনেকেই (যাঁরা মার্ক্সকে মার্ক্স-ইপ্সিত অর্থাৎ Doubt everythingএর শর্তে বিচারাগ্রহী)বলশেভিক শাসনের কিঞ্চিদধিক সাত সশজকে দ্বান্দ্বিক নিরপেক্ষতার নিরিখে দেখতে চান, তাঁদের কাছে ক্রন্সটাড বিদ্রোহ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। কিন্তু তথাকথিত ‘সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র’ (যা আসলে সোনার পাথরবাটি, কারণ মার্ক্স ১৮৭১এর এপ্রিলে বন্ধু লুড্বিগ কুগেলল্যানকে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, যে এইটিন্থ ব্রুমেয়ার-এ তিনি লিখেছিলেন যে তিনি রাষ্ট্ররই বিরোধী, এক রাষ্ট্রের বদলে আরেক রাষ্ট্রর কথা বলেন নি।উল্লেখ্য, লেনিন যেমন সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের মধ্যে পার্থক্য আবিষ্কার করেছিলেন, মার্ক্স তা কোথাও লেখেন নি।) লেনিনের সময়েই কার্যত পুলিশ রাষ্ট্রে পর্যবসিত হয়েছিল।পুলিশ রাষ্ট্রের জন্মদাতা স্তালিন ন’ন।

[লেখক – বরিষ্ঠ সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট মার্কসপন্থী চিন্তক।]

Facebook Comments

Leave a Reply