জয়শীলা গুহ বাগচী-র কবিতা

ডুবসাঁতারের রান্নাঘর

(১)

মানুষ ডুবে গেলে
তার কিছু চাহিদারহস্য
কিছু যোগানের নকশা
বেঁচে থাকা শেষ নির্জনের প্রতিলিপি
ইত্যাদিরা…
অল্প অল্প মাছিদের ওড়া হয়
কিছুটা নিভে আসা কথা যেন…
কথার জোনাকি সেভাবে কাঁদে না
যে কাঁদে সে ফুলের বাতাস হয়ে
গল্প নিভিয়ে ফেলে
তখন আবার আগুন জ্বালো
আগুনের গন্ধ জ্বালো
কতসব হাড়ের শিস…
মানুষ ডুবে গেলে
সেইসব অজানা জানালায়
সম্ভাবনা নামে গুণগান লেখে সাঁতার
আলগা দীর্ঘ নেমে যায় ভেতরে
জল সরিয়ে ছবি দেখে
ছবির আকাশ থেকে ছবি ঝরে
যাবতীয় ঘুমেরা আদর লিখে রাখে
পরবর্তী মৃত্যুতে
এই রান্নাঘরের দিন
ডুবে থাকা প্রণালীর ধোঁয়া
ফিরে আসে কোমল উড়ানে
একটি সকালগন্ধ শ্বাস নেয়
তারপর পর্যাপ্ত সাঁতার
সাঁতারের আবছায়ায় ডুবন্ত মানুষ
ক্রমাগত আশ্চর্য লেখে রক্তে… অনন্তে…

(২)

কখনোই চলাচল ছাড়া হইনি
জলের ভেতর মৃত মুহূর্তও নই
এইটুকু নিজের কথামাছ
নিজের দিন-রাতের জল-আলোয়
একটা আস্ত রেসিপি দেখতে দেখতে
ভাবি…
মানুষের জলে কতগুলো রান্নাঘর থাকে
কতগুলিই বা খিদেনুনের গন্ধ
আঁজলা আঁজলা খিদে তুলে দেখি
অর্ধেক জুড়েই নকলনদী লেখা
যা কিনা তার নিজস্ব ছিল না কখনো
যেসব ছায়াকে সে গিলে নিয়েছিল
তারা তার রান্নাঘরে আকাশ জ্বালেনি
তাই হৃদপিণ্ডের কোনো আলো হলো না আজও শুধু ভাবনা জুড়ে রান্নাঘরের জন্ম হলো
গন্ধের ভেতর স্বাদ হল না
স্বাদের ভেতর জীবন হল না

Facebook Comments

Leave a Reply