অনুভাবনায় দেখা “কুকুর একটা সিঙ্গল ফার্টিলাইজার” : তপোন দাশ
যৌনতা একটি স্বাভাবিক ধর্ম। পবিত্র ঘটনাই। ঘোড়ার সাথে যৌনতাও বহুকাল আগের তৃপ্তি। চিৎ হয়ে সকাল যেমন ভোর চুঁয়ে দেখে কিছু মানুষ। শীৎকারের ছবি আঁকো তো হে! যৌনতা নিয়ে মেলা ফচফচ অনেক ঝারলে! মাদি শহরের পিছনে যে সব দৌড় রোজ হামাগুড়ি দেয় তাদের সাঁকো গুলো পুরুষ কিনা দেখেছো? যা সব পার হচ্ছে সব গুলোই গড়িয়ে পড়ে না। মানুষের আর্তনাদ কখনও কখনও রাস্তায় চেন খুলে দেয়। মেয়েটার ঘোড়া একটা মানুষের থেকেও অনেক মার্ক্সবাদী। নাভিতে নেতিয়ে পড়া সমস্ত শহর এখন রেলিঙ খুঁজে বেড়ায়। মেয়েটি ঘর দখলের ফুটো নিয়ে জ্যামিতির ভাষা মেপে বেড়াচ্ছে। সে এক শুনশান যুবতী। তার মাথার ভিতর ঘুপচি আলো। চোখ ছড়ানো সমস্তই সে ধর্ষণের বিজ্ঞাপন। দরজা খুলে তার আর কোন রোমাঞ্চ দেখা যায় না। ছোটবেলার ঊরুসন্ধি এবার জিন্সের ফাঁক থেকে নেমে যাবে। দ্রুতির কোন সঠিক পরিমাপ হয়না। কোনের কোন স্টেশন হয়না। তার গলে যাওয়া প্যাকেজে শুধু মানুষেরই ওঠানামা। তার পেটে বিস্তৃত মাঠঘাট বয়ে চলে। মানুষ মাত্রই দুধে হারায়। মসৃন আলোরা মাদারির খেলা পেতে রাখে। ফাটা মানুষেরা প্রকৃতই ধূসর লালসায় অন্ধকার পুষতে থাকে। থিয়া লাগানো জঙ্গল ওঠার দিকে গাইয়ার পথ গড়ে ওঠে। মানুষ জট পাকাতে থাকে ক্ষমতার বহুধায়। লিফানি মাত্রই উদ্বায়ী আলো সমস্ত কাটিয়ে আবার জন্মে উঠবে। শীতভাষ দূরবর্তী মাথা গুলো আরো কিছু নন-ফিকশন বেঁধে দেবে। একটা ধারালো শীতকাল পুরো চামড়ার গা বেয়ে উত্তরাধিকারের গল্প শোনাবে। বিয়ারিং খুলে দিলে আজন্মের স্পেস গুলো থেকে বেড়িয়ে আসবে উত্তম পুরুষেরা। মাঝরাত আসলে পোকায় ঝলসে ওঠানো যৌনতা। তলপেটের নিচে শুয়ে থাকে রূপোদা। উৎপাদনকারী গোলার্ধ।
ভিন্নমুখী গল্পকার সৌগত বালীর “কুকুর একটা সিঙ্গল ফার্টিলাইজার” পড়ে চারপাশটা অন্ধকার দেখতে পাচ্ছিল সুহান। বাথরুমে পেচ্ছাপের বাইরে কতো রকম জৈবিক গন্ধ ভেসে আসে তার আন্দাজ করছে সে। পেচ্ছাপের দুটো ধারা আসলে সে তার গন্ধ থেকে আলাদা করে দিতে চায়। মানুষের কিছুকাল একই নালী থেকে অনবরত জন্মদোষ বেড়িয়ে আসতো। সুহান গল্পের ভিতর তলিয়ে দেখে কিভাবে শীতভাষ নালিজাম ছাড়িয়ে লিফানির সেলাইকল গুলো খুলে দেয়। মানুষের মতো করে নেয় সমস্ত তারতম্য। সে এখন অনন্তকাল গন্ধের পিছনে ছুটে যাবে। এবার শুঁকে নেয় নিজেকে। নিজের ভিতর কার্বনের স্তর জমতে থাকে। গা’য় অতলান্ত শহর গুলো মেখে তার লিঙ্গ পাল্টে নেয় সে। তার স্তন গুলো লোমে পুড়ে যাচ্ছে। বাথরুমে সে তার জিভ দিয়ে শারীরিক পোকা গুলো চেটে সাফ করতে থাকে। পিছনে লম্বা স্মৃতির লোমশ আকর্ষণ তার পিঠ ছুঁয়ে সমস্ত ঘ্রাণ শুষে নিচ্ছে এবার। সুহান অন্ধকারের ভিতর জ্বলজ্বল করে উঠলো। তার সামনের আয়নায় দেখা যাচ্ছে বারমুডা পরা চারপায়ী নিজেই নিজের সারিবদ্ধ স্তন গুলো মুখর করে তুলতে চাইছে। সে আরও অন্ধকার চায়। বাথরুমের গন্ধে মাখতে চায় স্তন গুলো। মেঝেতে চকচক করে উঠছে শরীর থেকে চুঁয়ে পড়া লালচে কালো রঙের সিঞ্চন। লিফানি তাকেও সাফ করে দিচ্ছে। সে টয়লেট শুঁকে দেখছে কিভাবে একটা গন্ধ স্বয়ংক্রিয় হয়ে ওঠে। সে পা তুলে দেয় দেওয়ালের একদিকে। তার মাথা থেকে খনিজ রস বেড়িয়ে আসছে গলায়। তলপেট উত্তাল হয়ে উঠছে পেচ্ছাপের সঙ্গে।
অরণ্য বুঝে ছিল এই গল্পটা বাড়লে শরীর থেকে সমস্ত কার্বন বেড়িয়ে যেতে পারে। সে না বুঝেই কয়েক পাতা চেটে দেখেছে মানুষের মুখের ভাষা অনেকটা কুকুরের দুধের মতো। সে লিফানির বুকের নিচে পাশ ফিরতে দেখেছিল আরও অনেক ত্রিকোণ মুখ গুলো। শীতে ভরা সেই সমস্ত স্তন গুলো সেও একদিন চুষে সাফ করতে পারে। দুজনে দুজনের উল্টো দিকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। জোড় লাগানো জমে যাচ্ছে তার ঊরুর ভিতর। লিফানির গায় লাগা বুনো দাগ গুলো তার খুব চেনা হয়ে যাচ্ছে। মাত্র কয়েক পাতা তাপ নেওয়ার পর অরণ্য মাঝরাতে নিজের স্ত্রীর তলপেটের নিচে আরো কিছু স্তনের খোঁজ করতে থাকে। রূপোদা এক স্মৃতির মধ্যে এক ধরনের প্রতিবর্ত ভাবনা। কিছু বিলিয়ন আগের রাস্তা গুলো হিমবাহে ফুলে উঠতো। সৌদামিনী সেই গাইয়া যুগের পুনরুত্থান। গ্রীবার ভিতর লুকিয়ে রাখা আলো গুলো সে জ্বেলে দেখে কতো বার তাকে প্রলম্বিত করা হয়েছিল। কনকনে শহরে অরণ্য ফিরে যেতে থাকে। নিজের আর কোন রকম সেরিব্রাল নেই। মায়াদি নেকড়ে মানবভর্তি ঘ্রাণ গুলো ঘনীভূত হতে দেখে তার চারপাশে। মানুষের এমন কোন উড়ে যাওয়া নেই। পেটের নিচে স্তরীভূত স্তন গুলো সে পকেটে পুরে নেয়। থেঁতলে যাওয়া কিছু স্মৃতি খুলে গিয়েছিল তার। পাতালে জমে থাকা ব্রিজটা দেবযানীর চামড়ার নিচে অনন্ত খাদ জমিয়ে রাখে। অরণ্য নিজের জন্মলগ্ন ভুলে গেছে সেই মুহূর্তে। কিচেন থেকে কিছু মাংসের ডেলা সে মুখে পুড়ে সুদূর আলোর থেকে সরে আসে। থেঁতলে ওঠা স্ত্রীর যোনিতে সে তার জিভটা ক্রমশ লম্বা হতে দেখছে।
অরিন্দম থিয়াকে ধরে রেখেছে কয়েক দিন ধরে। তার শরীরের ধার সে কিছুটা মাপতে পারছে এখন। কুকুর একটা গন্ধ নেওয়া প্রতিবেদনের ভিতর দাঁতের নতুন সংস্করণ। যৌনতার ধ্বংসাবশেষ গুলো সে তার রসাল ভাবনার ভিতর ঢুকিয়ে নিয়েছে। তার পাড়ার সমস্ত মানুষকে সে লেজ নাড়তে থাকা ছায়ায় দেখে শিরশির করে উঠছে। মানুষের ভিতর এতো কুকুর! কুকুরের ভিতর মানুষের মাংসাশী আশংকায় সে ক্ষতবিক্ষত হতে থাকে। তার আগের প্রেমিকার সাথে তার নিজের মামাতো ভাইয়ের যৌনতা নিয়ে তার আর কোন আক্ষেপ নেই। মানুষ যৌনতা নিয়ে পুরুষাক্রমিক লার্ভার দোষে দুষ্ট। ফাটাকে সে বুঝতে পারে। তার বাবার সুতো শেষ হলেও সে তার ব্যবহৃত চারপাশটা ভালো করে শুঁকে দেখতে পেয়েছিল। পড়ে যাওয়া আলোদের সে অন্ধকারে টেনে এনে শরীরে নতুন করে তাপ সৃষ্টির খেলায় মেতে ওঠে। অরিন্দম মানুষের ব্যক্তিগত খনন পদ্ধতি গুলো আজও বুঝে উঠতে পারে না। ফাটার শরীর থেকে বেড়িয়ে আসা হাওয়া গুলো নিয়ে সে তার শরীরে পুরে নেয়। পরিকল্পিত অন্ধকার সাঁতলানো এতো সহজ নয়। মানুষের মতো করে সারা শরীরে সাম্যবাদের বীজ বুনে দিয়েছে ফাটা। শুক্রাণুর লালসায় সম্ভাবনা গুলো আয়নায় বড়ো হতে থাকে। অরিন্দম ফাটা পর্যন্ত পড়ে নেওয়ার পর সমস্ত সম্পর্ক ভুলে গেছে। অনতিদূরের ভোর ফেটে তার কয়েকটি ছোট ছোট দেড়শো কিলোগ্রামের বাচ্চা ফুটে উঠছে। সে জাগতিক লেয়ারের মধ্যে গাইয়াতন্ত্রে মোড়া শহরটা দেখতে পাচ্ছে।
সুস্মিতা এই সব শুনে ঘিনঘিন করে ওঠে। শরীরের যাবতীয় ভিটামিন বছরের পর বছর জমতে জমতে ক্যালসিয়াম ফুরিয়ে আসছে। দাঁতের ভিতর অবহেলিত স্বাদ গুলো সে নতুন করে খুঁজে পায়। খাটের নিচে পড়ে থাকা হাড়গোড় গুলো চিবিয়ে খাচ্ছে লুসি। তার পেট ব্যাথা করে উঠছে দু’দিন ধরে। তার প্যান্টির ভিতর লাল রঙের ন্যাপকিন ভেসে যাচ্ছে। লুসি নোংরা জিনিসের গন্ধ শুঁকে দেখে না আর। সে এই রাস্ট্র ব্যবস্থা উপলব্ধি করতে পারে। বাবা আসা মাত্র পায়ের আঙুল গুলো সে চেটে কিছু আদর ভরে নেয়। মায়ের পিঠে লাট খায় ও’র লোম গুলো। প্রজননের সম্ভাবনায় সে পাশের বাড়ির এক ল্যাবকে নিজের শরীরে বিনিয়োগ করে। এমনকি কখনও সখনও পাড়ার নেড়ি গুলো পর্যন্ত চুলকে দেয় যোনির চারপাশটা। লুসি বিট্ খেতে থাকে দেড় বছর হতে না হতেই। টেকনোলজির ঘ্রাণ ছাড়িয়ে ঘরময় ভরে যায় উল্লাস। লুসিকে তার বাবা কয়েক দিনের বিট্ খাইয়ে লালা গুলো লুকিয়ে নিয়েছে ভেবে সুস্মিতা কিছু পরিমাণ স্পার্ম বের করে নেয়। সে ছোট থেকেই দেখছে তার মায়ের শরীরে অগুণতি মানুষের আনাগোনা। সে মায়ের অবর্তমানে নিজের যোনি বড়ো করে নিয়েছিল। লুসির রক্তের গন্ধে সে প্রবল ভাবে উল্লাস করে ওঠে। সে নিজেও জানে তার শরীরে যোগান দেওয়ার মতো একটি কুকুরের প্রয়োজন। সে দীর্ঘ একটি ল্যাকপ্যাকে কুকুরকে চারামাছের লোভ দেখিয়ে একটি চটচটে বাচ্চা প্রসব করিয়ে নিয়েছে। তার গভীরতর লালসায় আরও অনেকের সুতো শেষ হয়েছে। সে লুসির ফুলে ওঠা যোনিতে হাত রেখে নিজের উষ্ণতা গুলো লোমশ করে তোলে। দীর্ঘ কুকুরটাও তার ধারালো দাঁতের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। যে মেয়েটা এতো বছর নিজের সমস্ত প্রসাধনের গন্ধ শুঁকিয়ে বেড়িয়েছে অজস্র পুরুষদের মধ্যে, সে’ই আজ সাজানো পসরা নিয়ে বসেছে কাচের ভিতর। মানুষের মধ্যেই সে কুকুরের উত্তাপ নিয়েছে এতো দিন। সিনেমার ধোঁয়া ফুরিয়ে স্কার্টের নিচে ঘুমন্ত সকাল জেগে ওঠে। সুস্মিতা লুসির জমানো কাঁচা মাংসে টের পায় নিজের শরীরের বিস্ফোরণ গুলো। গুঁড়ো গুঁড়ো যৌবন চুঁয়ে ভেসে ওঠা যাপনের নিচে খুঁজে পায় তার পেটের সমস্ত মাংস। লাল হয়ে ওঠে জিহ্বা। শারীরিক ইঙ্গিত গুলো চুম্বক খুলে দেয়।
এভাবেই একটা বইকে অনুভাবনায় দেখা। ঘরদোর ছাড়িয়ে ফটোকপি পেতে বসেছে পৃথিবীর তামাম স্পর্শ গুলো। যৌনতার উল্লাস ফেটে পড়ছে লোহিত কণিকায়। কিছু নিন্মবিত্ত শহর ফুটে উঠেছে “কুকুর একটি সিঙ্গল ফার্টিলাইজার” বইটার মধ্যে। সৌগত বালী নানান রকম ভাবে আলোকিত করে তুলেছে অন্ধকার রিল গুলো। দেখা গুলো ফালাফালা করে দৃশ্যের ভিতর অজস্র নিজস্ব আয়নার কোলাজ বুনে দিয়েছে। ভাপিয়ে তুলেছে সামাজিক চেতনার অন্য দিক গুলো।
Posted in: BOOK-REVIEW, January 2021