শৌভিক পাল-র কবিতা
উৎসব ও মৃত্যু
উৎসব আর মৃত্যুর মাঝখানে স্তব্ধতার মেঘলা আকাশ
বিগত ধানের ঋণ অযাচিত গন্ধে ভরিয়েছে গোলাঘর
তোমাকে আর স্বপ্নেও দেখি না,
বাগানে বাড়ছে কলাগাছ অটুট মাঙ্গলিক
কিশোরীর আহত জীবনের নৈমিত্তিক ইচ্ছের পাশে
উৎসব আর মৃত্যুর মাঝখানে তবুও আকাশ মেঘলা
কলার শাখায় রিনিরিনি স্তব্ধতা বাজে,
গোলাঘর স্ফীত হয় অবরুদ্ধ জলের টানে
যেন মুহূর্তেই নখাগ্রবেগে চৌচির করে দেবে পাড়া!
না-থাকার মতো এই যে থাকা মৃত্যুর সমার্থক নয়,
মৃত্যুও চায় তার আগমনে বিসমিল্লাহ্ সানাই বাজাক
পোশাকের উদগ্র গন্ধে স্মৃতিকাঠ লাবণ্যে জ্বলুক।
সম্ভাবনা
অনিবার্য ভেঙে দেখি ভিতরের সম্ভাবনা
অন্তঃসলিলা নদী।
অবগাহন …
নিরাশ্বাস মাটির ভিতরে আসমুদ্র জলের প্রতীক্ষা,
আদিম উত্তাপেও পৃথিবীর মায়াবী নম্রতা
কবিতার কথা বলে—
অনিবার্য দিগন্ত পেরিয়ে আরও এক হৃদয়-সভ্যতা,
জাগ্রত দিন, অমলিন রাত—
বিসর্জনের পরেও ছুঁয়ে থাকে
নমস্য প্রতিমা।
জন্মসূত্র
যদি বর্বরতা মিথ্যে বলি
তবে অপরাহ্ণের সহজ আকাশ
কিশোরীর শ্রান্ত ঘুমের মতো দুঃসহ।
আরেকটা দিন
অজ্ঞাত হেতুর পাশে স্বচ্ছন্দ কুটিরে
স্বাগত প্রদীপ জ্বালাব নিশ্চয়।
তখনও বর্বরতা—সন্ধ্যার সরীসৃপ
আলতা-মাখানো অবশ পা ছুঁয়ে ওঠে গঙ্গোত্রী শিখরে,
স্বচ্ছন্দ কুটিরে বর্ষা নামে
অজ্ঞাত হেতু তখন বিরূপ দামোদর!
ঘুম ভাঙে কিশোরীর,
এক মোহিত স্পন্দন শুনে
সত্য জেনেছে তার সম্ভাবনা—
অস্ফুট বুকে মাভৈ মাভৈ
অন্ধকার পায়ে বিস্ফারিত অতল
অতল ক্রমে বশংবদ
অতল ক্রমে স্তিমিত ভূমিকা…
নদীর পাশে অম্লান ভোরের কুসুম।
Posted in: January 2021, POETRY