সাগরিকা রাজবংশী-র কবিতা

ফেরিওয়ালা

জি––––কে নেবেন ?

খুব ভাল

আমি তাকিয়ে দেখলাম যতদূর দেখা যায়
লোকটার অবশিষ্টাংশ
রোদে পুড়ে খাঁ খাঁ

টলতে টলতে শরীর চলছে
দুটি শরীর
শুধু আকাশের নীল ওপর থেকে
বাবুই বাসায় আরাম কেদারায় বসে দুলছে

লোকগুলো চেয়ে দেখছে
ছায়ায় বসে থাকা লোকগুলো
ধূলিধূসরিত অবয়ব
ডালপাতা বিহীন
……………শুধু
দুজোড়া পা বিপরীতমুখী ছুটে চলেছে
রাস্তা থেকে ধীরে ধীরে ওপরে আকাশ ছাড়িয়ে
নক্ষত্রমন্ডল ছাড়িয়ে
অনেক অনেক দূরে !

ঘুড়ি : একটি রাজনৈতিক কবিতা

১.

একটি ঘুড়ি। দুটো ডানা মেলে ধরেছে চিল পাখির দৃষ্টিতে। অনমনীয় রঙের খেলা। ছোট ছোট ডোরা কাটা দাগ পেরিয়ে গাঢ় রং দৃশ্যত।গোলাপি– নীল– হলুদ– লালের সমাবেশ। বড়ই সাহসী। লেজ দুলিয়ে দুলিয়ে অতীত বর্তমানের শূন্যতা পূরণ। আবার চোখে চোখ রেখে এগোতে ভয় পায় না। ভিড় ঠেলছে। ওই ভোকাট্টা।

২.

একটি ঘুড়ি। দুটো হাত মেলে ধরেছে সমুদ্রের নীল গভীরতায়। প্রাণপণে লাটাই টানছে। ঘুড়ি বাঁধা পড়ে রয়েছে লাটাইয়ে। ঘুড়ি সর্বদাই বাঁধা লাটাইদের দলে। হাত টানছে লাটাইয়ের চিল পাখির চঞ্চু। রক্ত ঝরছে। ঘুড়ি টানছে লাটাই। প্রাণপণে। শুয়োপোকার রেশম গুটির মত। একের পর এক গভীরতা পেরিয়ে যাচ্ছে। চেনা মানুষ, রাস্তা ঘাট, বাস ট্রাম সব পেরিয়ে গেল। এখন অনেক ওপরে ভেসে থাকারাও আর ছুঁতে পারে না। ভোকাট্টা।

ঠিক ফুলের মত

আমি ফুলের কথা লিখতে পারি না। ফুলের রেনুর নির্যাস বেরিয়ে আসে। আমি তা গায়ে মেখে নেই। কলম চলছেই। দুটো হাত পা হামাগুড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে। ফুল তো। বন্য। হলুদে সবুজ মিশে যায় রাস্তায়। দেখেই ছুটে আসে। চোখ দুটো বুজে আসে। নিদারুণ ঘুম। ঘুম ভেঙেই আবার হাঁক পাড়বে। বীজ অবয়ব ধারণ করছে। দেখতে দেখতেই তা ছড়িয়ে পড়বে চড়ুই পাখির বাসায়। খড়কুটোর সঙ্গে দানার বিনিময় হবে। দানা অঙ্কুরিত হয়। সবুজে সবুজে হাড়গুলো ছেয়ে যাচ্ছে। একটা হৃৎপিণ্ড নড়ছে। বুকের ভেতর নরম। দু-একটা ফুলও ফুটেছে। এসেছে প্রজাপতি।

Facebook Comments

Leave a Reply