তরুণ মার্ক্সের দিশারী এঙ্গেলস : শঙ্কর রায়

বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের যৌথ প্রতিষ্ঠাতা কার্ল হাইনরিখ মার্ক্স ও ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস। তিনি ১৮৪৪ সালে মার্ক্স-সম্পাদিত জর্মন-ফ্রেঞ্চ ইয়ারবুকের (Deutsch-Französische Jahrbücher) জন্য দুটি প্রবন্ধের একটিতে প্রথম বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নীতিসমূহের প্রাথমিক ভাষ্য বিবৃত করেন। এ ধারণাও চালু আছে যে এঁরা দুজনে মার্ক্সবাদেরও যুগ্ম জনক এবং দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদের স্রষ্টা। এই অভিমত মান্য কি না, এখনকার মার্ক্স-চর্চাবিদেরা (যাঁরা মার্ক্স ও এঙ্গেলস-এর সমস্ত মূল রচনাবলী, চিঠিপত্র, ডজন দুয়েক পাণ্ডুলিপি ( ১৮৪৪ সালের প্যারিস পান্ডুলিপি থেকে ১৮৮০-দশকের একেবারে গোড়ার দিকে শেষ করা গণিতবিষয়ক পান্ডুলিপি ও তৎসহ বেশ কিছু অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি, লেখাজোখা আবিস্কার ও চর্চা, যা রাশিয়া বা চিনের সরকারী কমিউনিস্ট আমলারা স্তালিন জমানার একেবারে গোড়া থেকে অন্তরালে রেখে অবহেলা করেছেন) নিজেদের সচেতনভাবেই মার্ক্সবাদী বলেন না। এর ঐতিহাসিক কারণও আছে। মার্ক্সবাদ শব্দটি মার্ক্সের জীবদ্দশায় ১৮৮১ সালে চয়ন করেন, মার্ক্সের প্রথম জীবনীলেখক ফ্রানৎস মেহরিং। বিরক্তই হয়েছিলেন মার্ক্স। ফ্রান্সের দুই প্রধান সমাজতন্ত্রী নেতা পল লাফার্গ (উত্তরকালে মার্ক্সের জামাতা) ও জুল গিদে-কেও তার কয়েক মাস পরে সে বছরেই মার্ক্স চোস্ত ফরাসী ভাষায় বলেছিলেন: Ce qu’il y a de certain c’est que moi, je ne suis pas Marxist (আমি যদি কিছু নিশ্চিতভাবে জানি তা এই যে আমি মার্ক্সবাদী নই)।

যাঁরা মার্ক্সবাদকে বিজ্ঞান বলে মনে করেন ও প্রচার করেন, তাঁদের কাছে বিনীত জিজ্ঞাসা, নিউটনবাদ বা আইন্সটাইনবাদ বলে কোন শব্দ বা অভিধা শুনেছেন? ভারতের সরকারী মার্ক্সবাদী দলের তাত্বিকেরা হয়ত পালটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেবেন, ‘কেন ডারউইনবাদ কথাটা তো চালু ও গ্রাহ্য।’ ঠিক কথা, কিন্তু চার্লস ডারউইন ছিলেন মূলত সমাজবিজ্ঞানী। মার্ক্স ও এঙ্গেলস দুজনেই বৈজ্ঞানিক বিচারপদ্ধতি অনুসরণ করতেন। আমি একটা শব্দ ব্যবহারের পক্ষপাতী ও ব্যবহার করি- মার্ক্সিয়ান টেম্পার (বাংলায় বলা যেতে পারে মার্ক্সীয় মেজাজ)। অনুসরণ করেছি জওহরলাল নেহরুর চয়ন : সায়েন্টিফিক টেম্পার (বৈজ্ঞানিক মেজাজ)।
দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ শব্দবন্ধ নিয়েও প্রশ্ন তুলছি, কারণ এই শব্দবন্ধ মার্ক্স-এর নয়, তিনি সুত্রায়িত করেছিলেন বস্তুবাদী দ্বন্দ্বতত্ব।প্রসঙ্গত স্মরিয়ে দিই, দ্বন্দ্বমুলক বস্তুবাদ শব্দবন্ধ মার্ক্সের জীবদ্দশায় উচ্চারিত/লিখিত হয় নি। তাঁর পর্যাণের চার বছর পরে ১৮৮৭ সালে চয়ন করেন জর্মন সমাজতন্ত্রী দার্শনিক Peter Josef Dietzgen ।এঙ্গেলসের বিখ্যাত উক্তি, ‘সাম্যবাদ গোঁড়ামি নয়, কর্মের দিশারী’ (জর্মন ইডিওলজি)। অথচ ভারতের সরকারী মার্ক্সবাদী দলগুলি দেয়ালে দেয়ালে লিখত, ‘মার্ক্সবাদ আপ্তবাক্য নয়,কর্মের দিশারী।’ এগুলি বিকৃতি, বিভ্রান্তিজনক।

এঙ্গেলস-এর প্রথম অতি উল্লেখযোগ্য নিবিড়-সমীক্ষাভিত্তিক ও গবেষণা-লব্ধ গ্রন্থ ‘কন্ডিশ্যন অফ দি ওয়ার্কিং ক্লাস ইন ইংল্যান্ড’-১৮৪৪-র সেপ্টেম্বর থেকে ১৮৪৫-এর মার্চ কালপর্বে রচিত। মার্ক্সের সঙ্গে তাঁর পরিচয়ও ১৮৪৪ সালে। ঠিক তার আগে এপ্রিল-অগাস্ট ১৮৪৪-এ মার্ক্স লেখেন ইকনমিক অ্যান্ড ফিলজফিক ম্যানুস্ক্রিপ্টস অফ এইট্টিনফর্টিফোর (যা প্যারিস পান্ডুলিপিনামে পরিচিত)। ‘প্যারিস পান্ডুলিপি’-তে ‘বিযুক্তি’র (alienation) মৌলিক ও নতুন ব্যাখ্যা আমাদের কাছে পুঁজিতন্ত্র কেন পূর্বের যে কোন সমাজ-ব্যবস্থা থেকে আলাদা, তা স্পষ্ট হয়ে গেল। ‘দাস কাপিতাল’-এও ‘বিযুক্তি’ উল্লেখিত। অথচ লেনিন, ত্রোৎস্কি, বুখারিন-এর (স্তালিন ও মাও তো দূরস্থান) চোখে পড়ল না। ‘বিযুক্তি’ ব্যতিরেকে ‘দাস কাপিতাল’-এর মর্মবস্তু অনুধাবন সম্ভব নয়। কেউ বলতেই পারেন যে লেনিন-এর জীবদ্দশায় তো ‘প্যারিস পান্ডুলিপি’ প্রকাশিত হয় নি। মার্ক্স-এঙ্গেলস ইন্সটিট্যুট এর (পরে নাম পালটে হয় মার্ক্স-লেনিন ইন্সটিট্যুট প্রতিষ্ঠাতা ও বিংশ শতাব্দীর সর্বোত্তম মার্ক্স-স্কলার দাভিদ বরিসভিচ রিজানভ (এ বছর তাঁরও সার্ধজন্মশতবর্ষ পূর্তি, যদিও সরকারী মার্ক্সবাদী দলগুলি তাঁকে স্মরণ করে নি-অবশ্য আগেও করে নি) ১৯৩২ সালে তার রুশ অনুবাদ প্রকাশ করেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাবনায় অন্যভাবে ‘বিযুক্তি’ এসে যায়। ‘রক্তকরবী’ নাটকে দুই মজুর বলছে, তাদের কর্মস্থলে কোন নাম নেই, তারা ‘৪৭-এর ফ, আর ৬৯-এর ঙ’।
যাই হোক ‘কন্ডিশ্যন অফ দি ওয়ার্কিং ক্লাস ইন ইংল্যান্ড’ ও ‘প্যারিস পান্ডুলিপি’- পরম্পরা ‘দাস কাপিতাল’ লেখার বনিয়াদ গড়েছিল।
এঙ্গেলস ১৮৪৭-এ কমিউনিস্ট লীগ-এর জন্যে লিখলেন ‘প্রিন্সিপ্লস অফ কমিউনিজম’। মার্ক্স ও এঙ্গেলস ১৯৪৮ সালে প্রকাশ করলেন ‘কমিউনিস্ট ইস্তাহার’, যার সহায়ক ভূমিকা নিয়েছিল ‘প্রিন্সিপ্লস অফ কমিউনিজম’।

‘কন্ডিশ্যন অফ দি ওয়ার্কিং ক্লাস ইন ইংল্যান্ড’ রচনার পরিপার্শ্ব ও প্রেক্ষাপট স্মরিয়ে দিই। ভিক্টোরিয়ান যুগের ইংল্যান্ডের শ্রমিকশ্রেণীর এক অসাধারণ সমীক্ষা। তাঁকে ১৮৪২-সালের শেষ নাগাদ ম্যানচেস্টারে পাঠানো হয় তাঁদের পারিবারিক বস্ত্র কারখানায় কাজ করার জন্যে। সেই সময় এঙ্গেলস ম্যাঞ্চেস্টার ও আশেপাশ বস্ত্রমিল শ্রমিক ও তাদের পরিবারের শোচনীয় অর্থনৈতিক দুরবস্থা, তাদের মনুষ্যেতর জীবনযাপন, যা তিনি কাছ থেকে দেখেছিলেন। শ্রমজীবি মানুষের ন্যায্য অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করার সেটাই প্রথম প্রয়াস। তিনি দেখান যে, পুঁজিতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় মালিকরা কিভাবে তাঁদের শোষণ করত। কিন্তু সেই শোষণভিত্তিক ব্যবস্থা বেশিদিন চলতে পারে না, চলা অযৌক্তিক। অন্তর্নিহিত কারণে অর্থাৎ মালিক-শ্রমিক দ্বন্দ্বের কারণে ভেঙে পড়া অবশ্যম্ভাবী। তখন চার্টিস্ট আন্দোলন শেষের দিকে, যা তীব্রতম হয়ে উঠেছিল ১৮৩৮-থেকে ১৮৪৮ কালপর্বে। ব্রিটেনের শ্রমজীবি জনগণের প্রতি নিবেদন করে লিখলেন: “Working Men! To you I dedicate a work, in which I have tried to lay before my German Countrymen a faithful picture of your condition, of your sufferings and struggles, of your hopes and prospects. I have lived long enough amidst you to know something about your circumstances; I have devoted to their knowledge my most serious attention, I have studied the various official and non-official documents as far as I was able to get hold of them — I have not been satisfied with this, I wanted more than a mere abstract knowledge of my subject, I wanted to see you in your own homes, to observe you in your everyday life, to chat with you on your condition and grievances, to witness your struggles against the social and political power of your oppressors. I have done so: I forsook the company and the dinner-parties, the port-wine and champagne of the middle-classes, and devoted my leisure-hours almost exclusively to the intercourse with plain Working-Men; I am both glad and proud of having done so. Glad, because thus I was induced to spend many a happy hour in obtaining a knowledge of the realities of life — many an hour, which else would have been wasted in fashionable talk and tiresome etiquette; proud, because thus I got an opportunity of doing justice to an oppressed and calumniated class of men who with all their faults and under all the disadvantages of their situation, yet command the respect of every one but an English money-monger; proud, too, because thus I was placed in a position to save the English people from the growing contempt which on the Continent has been the necessary consequence of the brutally selfish policy and general behaviour of your ruling middle-class”। ভাষান্তর করলাম না, এমন কাব্যিক ভাষা বোধ হয়.অননুবাদনীয়। মূল জর্মণে যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা এই লেখকের ঈর্ষাভাজন।
তখন তিনি সদ্য-প্রকাশিত বামপন্থী সংবাদপ্ত্র ‘রাইনিশে সাইটুং’এ (রাইন অঞ্চলের সংবাদ’) ফ্রিডরিখ অসওয়াল্ড ছদ্মনামে প্রবন্ধ লেখা শুরু করলেন, প্রধানত স্থানীয় শ্রমিকদের দারিদ্র্য ও দু:খদুর্দশা যার

মার্ক্সের জীবনাবসানের পরে এঙ্গেলস ‘দাস কাপিতাল’-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড সম্পাদনা করেন। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে সেখানে অনেক খামতি ও অসম্পূর্ণতা আছে। তার সবটা অসত্য নয়, কিন্তু তিনি মার্ক্সের লেখা বিকৃত করেছেন, এটা কুৎসাত্মক। খামতি ও অসম্পূর্ণতার অন্যতম কারণ মার্ক্সের খারাপ হাতের লেখা, যা পুনরুদ্ধার কঠিন ছিল। কিন্তু তা সত্বেও এঙ্গেলসের অসতর্কতা কিছুটা ছিল, যেমন‘জর্মন ইডিওলজি’তে। এ নিয়ে দুটি গবেষণা উল্লেখ্য। একটি ২০১৪ সালে প্রকাশিত টেরেল কার্ভার ও ড্যানিয়েল কার্ভারের “আ পোলিটিক্যাল হিস্ট্রি অফ দি এডিশ্যন্স অফ মার্ক্স অ্যান্ড এঙ্গেলস’স ‘‘জর্মন ইডিওলজি ম্যানুস্ক্রিপ্টস”। আরেকটি ২০১৮ সালে ইয়োরোপিয়ান জার্নাল অফ দি ইকনমিক হিস্ট্রি থট-এ প্রকাশিত ইজুমি ওমুরা-র ‘রি-একজামিনিং দি অথরশিপ অফ দি ফয়ারবাকগ চ্যাপ্টার অফ দি জর্মন ইডিওলজি অন দি বেসিস অফ হাইপথিসিস অফ ডিকটেশ্যন’ (মূল অভিসন্দর্ভ জাপানি ভাষায় লেখা)। এ দুটি নিয়ে আলোচনার অবকাশ নেই, কারণ এ নিয়ে দুনিয়া জুড়ে মার্ক্স-চর্চাবিদেরা উচ্চমানের গবেষণা করেছেন, প্রকাশ করেছেন, আরো গবেষণা চলছে। কিন্তু আমার এ নিয়ে লেখার দ্বিধা অন্যত্র। তা হ’ল আমি জর্মন জানি না আর এগুলিতে অনেক জর্মন উদ্ধৃতি আছে (মার্ক্স ও এঙ্গেলসের পান্ডুলিপির ফোটোকপিসহ)।
এ প্রসঙ্গে এঙ্গেলসের ১৫০তম জন্মশতবর্ষে (১৯৭০) ম্যাক্সিমিলিয়ন রুবেলের (বিংশ শতাব্দীতে রিজানভের পরেই শ্রেষ্ঠ মার্ক্স-স্কলার) “দি লিজেন্ড অফ মার্ক্স অর ‘এঙ্গেলস দি ফাউন্ডার’ থেকে প্রাসঙ্গিক অংশ হতে উদ্ধৃত করছিঃ … as pioneer of Marx’s theories, Engels expressed many ideas which Marx could not, of course, accept without critique; the silence of Marx can be explained by his desire to scrupulously respect the solidarity which he held with his friend. We cannot confirm the extent to which he should be identified with everything that Engels had said or written, but this problem is minor, considering his acknowledged admiration for the intellectual gifts of his friend: after all, he considered himself Engels’ disciple. That which Marx did not allow himself has today become a strict duty: we must break the bewitching charm of this legend, and determine the place of Engels’ oeuvre in the development of the intellectual inheritance of socialism, in relation to the destiny of the workers’ movement.”
মার্ক্সের জীবনাবসানের পরেএঙ্গেলস ‘দাস কাপিতাল’-এর দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ড সম্পাদনা করেন। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে সেখানে অনেক খামতি ও অসম্পূর্ণতা আছে। তার সবটা অসত্য নয়, কিন্তু তিনি মার্ক্সের লেখা বিকৃত করেছেন, এটা কুৎসাত্মক। খামতি ও অসম্পূর্ণতার অন্যতম কারণ মার্ক্সের খারাপ হাতের লেখা, যা পাঠোদ্ধার এঙ্গেলসের পক্ষেও অনেক সময় কঠিনছিল। কিন্তু তা সত্বেওএঙ্গেলসের অসতর্কতা কিছুটা ছিল, যেমন ‘জর্মনইডিওলজি’তে।এ নিয়ে দুটি গবেষণা উল্লেখ্য। একটি২০১৪ সালে প্রকাশিত টেরেল কার্ভার ও ড্যানিয়েল কার্ভারের “আ পোলিটিক্যাল হিস্ট্রি অফ দি এডিশ্যন্স অফ মার্ক্স অ্যান্ড এঙ্গেলস’স ‘‘জর্মন ইডিওলজি ম্যানুস্ক্রিপ্টস’। আরেকটি ২০১৮ সালে ইয়োরোপিয়ান জার্নাল অফ দি ইকনমিক হিস্ট্রি থট-এ প্রকাশিত ইজুমি ওমুরা-র ‘রি-একজামিনিং দি অথরশিপ অফ দি ফয়ারবাকগ চ্যাপ্টার অফ দি জর্মন ইডিওলজিঅন দিবেসিস অফহাইপথিসিস অফ ডিকটেশ্যন’ (মূল অভিসন্দর্ভ জাপানিভাষায় লেখা)। এ দুটি নিয়ে আলোচনার অবকাশ নেই, কারণ এ নিয়ে দুনিয়া জুড়ে মার্ক্স-চর্চাবিদেরা উচ্চমানের গবেষণা করেছেন, প্রকাশ করেছেন, আরো গবেষণা চলছে। কিন্তু আমার এ নিয়ে লেখার দ্বিধা অন্যত্র। তা হ’ল আমি জর্মন জানি না আর এগুলিতে অনেক জর্মন উদ্ধৃতি আছে (মার্ক্সও এঙ্গেলসের পান্ডুলিপির ফোটোকপিসহ)।
এটাও ঠিক, দাস কাপিতাল-এর প্রথম খন্ডের ষষ্ঠ অধ্যায় ( সেল অ্যান্ড পারচেজ অফ লেবার পাওয়ার’। মার্ক্স সেখানে লিখেছিলেন যেউদ্ব্বৃত্ত মূল্য মূলধনের চক্রাবর্ত M – C বা C – M লেনদেনের মাধ্যমে উদ্বৃত্তমূল্য সৃষ্টি হয় না। মার্ক্স-এর যুক্তি। তা শ্রম-শক্তি হিশেবে এক বিশেষপণ্য যা উদ্বৃত্ত মূল্যেরউৎস ) মার্ক্স ও এঙ্গেলসের জীবদ্দশায় মুদ্রিত হয় নি। ‘ “Sale and Purchase of Labour-Power,” and it discusses the nature and value of labour-power
তথাচ এঙ্গেলস-এর স্থান মার্ক্সের পরে যা লেনিনোত্তর কালে (অর্থাৎ স্তালিন যুগে) বলশেভিক নেতারা মনে রাখেন নি। লেনিনের প্রয়াণের পরে মার্ক্স-এঙ্গেলস ইন্সটিট্যুটের নাম পালটে করা হয় মার্ক্স-লেনিন ইন্সটিট্যুট। মার্ক্সের জামাতা পল লাফার্গ মার্ক্স স্মৃতিকথায় লিখেছেন, “মার্ক্স এঙ্গেলসকে ইয়োরোপের সবচেয়ে শিক্ষিত জন আখ্যা দিয়েছিলেন, ‘never tired of admiring the universality of his mind’। ক্রিস আর্থার লিখেছেন, মার্কসের উপর এঙ্গেলসের প্রভাবকে এঙ্গেলসের মতো হ্রাস করার চেষ্টা সমীচীননয়, ‘মার্কস নিজেও অন্যদের বৌদ্ধিক ঘাটতি বিচার করেননি তাঁর সমসাময়িক সকলের মধ্যেই এঙ্গেলসকেই ঘনিষ্ঠ বৌদ্ধিক অংশীদারহিশেবে বেছে নিয়েছিলেন। এঙ্গেলস কেন, মার্ক্সেরও নির্মোহ নিরীক্ষা হোক, কিন্তু ছোট করা যেন না হয়।

Facebook Comments

Leave a Reply