রাগীব আবিদ রাতুল-র কবিতা

চিরচেনা অচেনা মুখ

বাতাসের আড়ালে কার যেন শব্দ শুনি,
চোখ বুজে তার নীল মুখ ছুয়ে দেখি।
বাতাসেই কেবল তার লুকোচুরি,
আমাকে ছুয়ে যায় সে কেবলই নীরবতার ভেতরে।
সময়ের সাদা রঙে তার সীমানা,
নিঃস্ব ঘরের আঙিনায় তার আনাগোনা স্পষ্ট,
আলোর বেড়াজাল ভেদ করে,
সংগোপনে অস্ফুটস্বরের মত ঢুকে পরে
নিয়মের বাহিরে বসবাসরত লোকালয়ে।
স্বপ্নে আবার ঝাপসা কাচের বিপরীতে,
চেনা মুখ সরে যায় বহুদূর।
বাতাসেই কান পেতে থাকি,
শেষ বাতাস পর্যন্ত তার অনুভব জেগে থাকে।

গোপনে বেড়ে উঠা শব্দ

শহরে, আকাশের বুক ভারী হলেই,
খুব শূন্য হয় চারপাশ,
পৃথিবীর মুখ খুজে ফিরি,
গাছের সাথে নীরব প্রানের প্রনয় ঘটে,
দূরে সরে যাই যে সীমানা ভেদ করে,
তাকে ঘিরেই এগোতে থাকি নিজের আড়ালে।
প্রেম বিনিময়ে গোপনেই রয়ে যায় বহু আবদার,
তাতে ঘুরে ফিরে কেবলই সময়ের প্রত্যাশা,
কি একটা যেন পূরন হয়েও হলো না।
নীরব সন্ধ্যা তাকে যত্নে পোষ মানিয়ে রাখে,
আমার চোখে মুখে খুব ব্যথা জেগে উঠে,
কি একটা যেন পূরন হয়েও হলো না।
এত কলরবেও শুনশান নীরবতা বিরাজ করে ভিতরে;
কেউ দেখেনি তা,শোনাতে পারিনি
পৃথিবীর পরে জেগে উঠা কিছু অব্যক্ত আওয়াজ।
সব আওয়াজ আমাকে ভীষন ভাবে আলাদা করে,
আমি সংশয়ে পড়ে যাই নিজের বোধশক্তি নিয়ে।
আমিও বধির হয়ে যাবো একদিন,
চিনে যাবো এই প্রান্তরের সকল রেখা,
মুছে যাবে সব বিভীষিকা,
আমিও মিশে যাবো পৃথিবীর ধূলিকনাতে।

দূরত্বের মিশ্র ভাবনা

মাটির চোখে নীলাকাশের বিস্তৃত নীলিমা
পুরোটা কি চোখে পড়ে,
নাকি পাহাড় দেখেছে পুরো নীলাকাশ।
সাগর তো বলেই দিয়েছে আকাশের মিতা,
কখনো মরীচিকায় ভ্রম হয়ে একাকার হয়ে যায়।
পাখির চোখে আকাশটা পৃথিবীর মতো চঞ্চল,
আগুনের চোখে আকাশটা যেন
শুধুই ধোয়ায় মিশে যাওয়া এক সভ্যতা।
বাতাসের চোখে আকাশ তুচ্ছ,
শিশুর চোখে আকাশ বিস্ময়,
যৌবনে আকাশ থাকে ব্যস্ত প্রেমিক,
আর বৃদ্ধের চোখে আকাশটা তার মতোই পুরনো।
আকাশের চোখে আকাশ কেমন?
আকাশের চোখে আকাশ খুবই সাধারণ,
যেমনটা প্রাচুর্যের শূন্যতা।
যেমনটা আড়ালে রাখা আমাদের দুঃখ।

Facebook Comments

1 thought on “রাগীব আবিদ রাতুল-র কবিতা Leave a comment

Leave a Reply