যান মাঝারের জান : অর্ঘ্য দত্ত বক্সী
A ও B দুটিরেখা। স্পষ্টতই B যদি A-এর থেকে বেশি দৈর্ঘ্যের হয় তবুও গোটা ক্লাসের ৯৯ জন শিক্ষার্থী যদি বলে ওঠে যে, A বেশি দৈর্ঘ্যের তাহলে ১০০ নম্বর ছেলেটি ভাবতে বাধ্য হয় যে তারই তাহলে কিছু একটা গণ্ডগোল হচ্ছে। সে জানেও না এটি একটি পরীক্ষা আর সকলেই আগে থেকে নির্দেশিত-গটআপ। তাই সে বিনা প্রতিবাদে তা মেনে নেয়। কিন্তু সে যদি এই ৯৯ জনের বিপ্রতীপে গিয়ে বলত যে এটি ঠিক নয় তবে ডেস্টিনি পুরুষার্থে পরিবর্তন করে নিয়ে সে হয়ত জীবনে হত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট।
চার বছর অন্তর অন্তর হয় ফুটবল বিশ্বকাপ। কাগজ ম্যাগাজিনগুলি ফুটবলের খবরে ভরে থাকে। এভাবে ও ফেসবুকে পড়েছিল ইংল্যান্ডের জর্জ বেস্টের কথা। যিনি নাকি তুলনাহীন প্রতিভাধর হওয়া সত্বেও বিশ্বকাপ খেলেননি। মূলত বেহিসাবি উচ্ছৃঙ্খল হওয়ার কারণেই তাদের প্রতিভানাশ হয়ে যায়। আবার কোচের মুখে ‘আমার টিমে মারাদোনা আর দশজন ফুটবলার আছে’ এমনও শোনা যায়; অবান্তর হয়ে যায় ৮৬এর বুরুচাগা ৯০এর ক্যানিজিয়া ইত্যাদি।
মানুষের চিরকালীন খোঁজ নিজেকে একা হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা। যে যে ও যা যা সকলে পছন্দ করে বলে তাদের কাছে তুলে ধরা হয় তারা তাই পছন্দ করে। একা হয়ে যাওয়া এড়াতে সকল মধ্যবিত্ত মেনস্ট্রীমে বয়ে যতটা পারা যায় পরস্পর একাত্ম হয়ে অবিকল একই রকম হয়ে যায়। আর ডার্বিতে মাঠের একজন ছোকড়া ইস্টবেঙ্গল সমর্থক-সে তখন যৌথ অবচেতনে উদ্বাস্তু। সে গ্যালারি দ্বারা পরিচিত হয়, তার পারসোনা তখন গলে জল হয়ে যায়, শুধুমাত্র একটি ও একটিই গুণ বা বৈশিষ্ট থাকে তার… সে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। পুরো গ্যালারির ক্রাউডে মিশে গিয়ে তার আচরণ তখন গ্রুপমাইণ্ড। তার সত্তা সম্পূর্ণ গ্যালারির মধ্যে মিশে যায়। এবং নিজের নিজের ইণ্ডিভিজ্যুয়ালিটি হারিয়ে তরুণ ইস্টবেঙ্গল তখন নির্জ্ঞান দ্বারা পরিচালিত এক ট্রানস্পারসোনাল রেসিয়াল বিরাট উদ্বাস্তু আর্কিটাইপ। অথবা গণপিটুনি, মুসলিম ঘৃণা সব সব এই গণ-মনস্তত্ত্বের খেলা।
কাহিনির নায়কের একটা নাম আছে। ডাকনাম। বিজয়ন। সে নামের পিছে ভি এক কাহানি হ্যায়। প্রথমবার জাতীয় লিগ জিতেছিল জেসিটি। তার অন্যতম সদস্য ছিল বিজয়ন। আর সেসময় জাতীয় দলে বাইচুং-বিজয়ন যুগলবন্দি অধিকার করে নিয়েছিল গোটা উপমহাদেশ। তার বাবা ছিলেন একজন ফুটবল-রসিক। তিনিই আদর করে গরিবের কালো ছেলেটিকে বলতেন বিজয়ন। পরে সেই নামেই সবাই তাকে ডাকত। পরিবারে ফুটবলপ্রীতি থাকার কারণে ছোট্টবেলা থেকেই বিজয়নের ফুটবল খেলার নেশা। শোনা যায় পরিবেশ ৩৩% অবধি মানবের আচরণ নির্ধারিত করে।
তো সেই ছোট বিজয়ন ছোটবেলায় একটা কার্টুন পড়তে খুব ভালবাসত। এবং তা হল ‘বিলির বুট’। কাহিনিটি ছিল এরকম যে সেই বুট বিলিকে দিয়ে খেলাত, সবকিছু বুটজোড়াই করত শুধু বিলি ছিল তার যন্ত্র। বিজয়নের পরিবার তত ধনী ও মধ্যবিত্ত ধোপদস্তুর ছিল না, যে কারণে দামি কাগজ তাদের বাড়িতে রাখা হত না। কমদামী কাগজের কম জনপ্রিয় কার্টুনের স্বপ্নে তার কেটে যেত সকালবেলা কিছুক্ষণ। বড় হয়ে এসব সে ভুলে গিয়েছিল। মারাদোনা এসেছিল কলকাতায়। তারপর বিশ্বকাপের বাজারে বড় কাগজে ছোটগল্প বেরিয়েছিল যার নাম মারাদোনার বুট, প্লট ছিল বিলিরই মতো অনেকটা। তাতে তার মনে পড়ে গিয়েছিল শৈশব।
বিজয়ন তাই নিয়মিত ফুটবলচর্চা করত। তার পায়ের ডিমই তা প্রমাণ করে দিত। ক্রমে সে সেকেণ্ড ডিভিশনে খেলেছিল, ডিফেন্সেই খেলত, আদর্শ ছিল রবার্তো কার্লোস। পরেরবার তার প্রথম ডিভিশনে খেলার কথা চলছিল। প্রতিদিন খাওয়ার সময় সে ভাবত যে সে একদিন ইস্টবেঙ্গল ক্যাপ্টেন হবে! সে খাওয়ার সঙ্গে ফুটবলকে কন্ডিশনিং (ঘন্টা ও কুকুরের লালা) করে রেখেছিল যাতে প্রতি খিদেতে তার ফুটবলের কথামনে পরে।
এখন সে যুবক। ছিপছিপে লম্বা, জ্বলজ্বলে চোখ, হলদেটে হাসি, কালো মুখটি অপু অপু এলেবেলে মিষ্টি। মুখের চামড়া টিকটিকির ত্বক যেমন টানটান মসৃণ তেমনটির বেশি বই কম না। কিন্তু ত্বকের নিচে সে মানুষটা সরীসৃপ নয়। বাস্তবকে অবশ্য সেভাবেই আচরণ করতে দেখে সে আর বাস্তব পরস্পরকে চিনে নিয়েছে।
এখন তার পিতা যেহেতু দীর্ঘদিন গত হয়েছেন সংসারের হাল ধরেছে সে-ই। পাড়ায় পাড়ায় সিক্স এ সাইড, সেভেন এ সাইড টুর্নামেন্টগুলোয় খেপ খেলে বিজয়ন তাই। আবার ব্যারাকপুরে শ্রমিকের কাজও করে। সুতরাং প্রায় আনকালচার্ড নিম্নবর্গ। ডার্বি সে প্রায় মিস করেই না আর সে মাঠে মদ খেয়ে মস্তি করতে যায় না। খেলাটা মন দিয়ে দেখবে বলে সামান্য দুই-একজন বন্ধুর সঙ্গে যায়। এখনও এই বয়সের যুবক সে যার পরিণয় থেকে বিবাহ হয়ে একটি কন্যাসন্তান আছে; এখনও হাঁটতে শেখেনি, বৃহস্পতিবার জন্মেছে বলে নাম রাখা হয়েছে কমলিকা। আর আছেন মা, চারজনের চাহিদাহীন শান্তির সংসার।
তবু হৃদয়ে কোমল তার ইস্টবেঙ্গল আটকে গেলে এখনও কান্না গিলতে হয়।কারণ আদতে সে তো একজন ডিফেন্ডার। গোল খেলে নিজের দায় যেন এড়াতে পারে না। একবার অন্তত সুপার হসপিটালিটি গ্যালারিতে বসে আই.এস.এল দেখার বড্ড লোভ ছিল তার। পাড়ার দুইএকজন নেতা বা প্রতিপন্ন মানুষকে সে বলেওছে তার ইচ্ছার কথা। এতে লোকে আড়ালে হেসেছে। কারণ যে সে তো নিম্নবর্গ শ্রমিক, ফুটবল বেশি বুঝলেও কেউ- কেউই তাতে তাকে কোনও অন্য চোখে দেখে না।
(২)
অদ্য অষ্টমী। তার মেয়ের জীবনের প্রথম অষ্টমী। এবার লেগেছে রাতের দিকে।কিছু সস্তার প্লাস্টিকের খেলনা, ক্যাডবেরি, তিন প্যাকেট হান্ডি বিরিয়ানি আর পুজোর ফুল-মিস্টি নিয়ে সে বাড়ি ফিরছে। এসব জোগাড় করতে তার বিস্তর ধৈর্য ও পরিশ্রমের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। তবু গায়ে কিছু লাগেনি কারণ কাল ইনিয়েস্তা দু-দুটো অসাধারণ ফ্রি-কিকে গোল দিয়েছে। এই রোনাল্ডো আর মেসির যুগে কে আর এদের ফ্যান হয়! সেসব ভাবতে ভাবতে আর বিরিয়ানির সুবাসে তার মন আনমনা হয়েইছিল, উপর্যুপরি স্টেশনের এক নম্বরের কাছে এসে সে দু নম্বরে দুই ক্লাবকর্তাকে দেখতে পায়। তাদের থেকে শেষ তিন চারটি খেপের টাকা পাওনা বাকি। টাকার এবার খুব খুব দরকার, মেয়েটির জন্যই আরো বেশি করে। তাই সে দ্রুত লাইন পার হয়ে তাদের নাগাল পেতে যায়। সে তাড়ায় গ্যালোপিনের ঘোষণা কার্যত মিস করে যায়।
(৩)
অ্যাকসিডেন্ট যেভাবে হয় সেরকমই কিয়দ-মুহূর্তেই অ্যাকসিডেনটালি সে আবিষ্কার করল যে তার পা দুটো হাঁটু থেকে কেটে গিয়ে ঝুলছে। কিছু চামড়া মাংস ও মোটা ডিম তালগোল পাকিয়ে জানান দিচ্ছে এটা তারই পা! এছাড়া পা দুটোকে লাওয়ারিশ মালিকহীনও বলা চলে। ট্রেনটি তাকে পোকামাকড় নিয়ে খেলার মতো খানিক টেনে নিয়ে গিয়ে শেষে হয়ত মমত্ব দেখিয়ে বিড়ির ফুঁতে ছুঁড়ে ফেলে রেখে যায়।
(৪)
এই অবস্থাতেও আমাদের ডিফেন্ডার ভাবছিল… ভাবতে পারছিল অচেতন না হয়ে গিয়ে। তার মাথা ও স্নায়ুরস যে এতটা ধাতব পারদ তা সে নিজেও জানত না। সবই সে বুঝতে পারছিল এবং দেখছিল তার কাটা পা – চারপাশে মানুষের ভিড়, ছড়ানো বিরিয়ানি রক্তে গ্রেভিময়…লাল আর হলুদের মিশেল
সে ভাবল তার মেয়েটি,তার স্ত্রী ও মা-কে এমত পঙ্গুত্বে কীভাবে পেটের ভাত যোগাড় করে দেবে? প্রাথমিকভাবে সে বুঝল যে সারাজীবনের জন্য তাকে অপাংক্তেয় বোঝা হয়ে পরমুখাপেক্ষী হয়ে কীটপতঙ্গের মতো বাঁচতে হবে…
পা কাটা শ্রমিক কখনও দেখেছেন আপনারা? সেও তার শ্রমিকজীবনে দেখেনি। ‘যন্ত্রে গ্রাস করতে পারেনি’তবে জংধরা যন্ত্র বানিয়ে রেখে গেছে…
আমার চাকরি আর থাকবে না…
আর কী হবে তার ফুটবল খেলার? কী হবে তার ইস্টবেঙ্গলে খেলার স্বপ্ন? মাস তিনচার পর তার ফার্স্ট ডিভিশনের ট্রায়ালের? ফুটবল থেকে আয়ের কিহবে?
নাঃ, হাত কনুই থেকে কাটা স্ট্রাইকারের ইতিহাস বিশ্বকাপের আদিমপর্বে আছে বটে… কিন্তু পা নেই এমন পেশাদার ফুটবলারের কথা কেউ কদাপি শোনেনি!
গুপিবাঘার বর চাওয়ার সঙ্গে কি আমরা সদ্য পরাজিত (ডেস্টিনিতে) এই তরুণ যুবকের বর্তমান চিন্তার ধাপের কোনও মিল পাই? গুপিরা আগে ভেবেছিল পেটের কথা। যাহা খুশি খাইতে পারি। তবে তো বাঁচব! তারপর অ্যাডভেঞ্চারের কথা, যেথা খুশি যাইতে পারি যৌবনের টানে মগজের পুষ্টি বিধানে ভাগ্য পরীক্ষায়…আর একেবারে শেষে বেসিক বেঁচে থাকার সব চাহিদা পূরণ হলে তবে শিল্প গান শখ ফুটবল… এইতো ছিল তাদের ও ভূতগ্রস্থ বাস্তবের ব্যাপার। বুদ্ধিমানের বিদ্যা তবে অন্যকে চুপ করিয়ে রাখে।
(৫)
এই হয়ত প্রথম ও শেষ সুযোগ তার সুইসাইডের। পঙ্গুত্ব হয়ত তাকে এতটাই মন থেকে অসহায় করে দেবে যে তার আর আত্মহত্যার মানসিক শক্তিটুকুও থাকবে না। অথবা হয়ত সাহস থাকলেও অবসরটুকুই পাওয়া যাবে না আর। এভাবে গোল হজম করতে অন্তত বিজয়ন রাজি নয়।
আত্মহননের বিষয়-আশয়ে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণকরা,তাও পূর্বপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘ চিন্তার শক্তিতে নয়, এরকম অকস্মাতভাবে সবকিছু নিমেষে হারিয়ে ফেলার মুহূর্তে এবং যখন এখন সে জনতার ভিড় ও তাদের দৃষ্টির আকর্ষণের দ্বারা পরিবৃত আর এই খোলা আকাশের নিচে… এই পরিস্থিতিতে এতদ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তাকে কার্যকরী করার কথা ভাবার মধ্যে—ব্যাপারটা যখন আত্মহনন— তখন এটুকু সময় যেন বড্ড বড্ড কম, খুব খুব কম সময়, পরিমাপের গণ্ডিতে আর থাকে না সময়।
দূর থেকে কালো বিন্দু ডপলার এফেক্ট দিতে দিতে ক্রমশ যন্ত্ররাক্ষস তার নিনাদময় উপস্থিতি জানাতে জানাতে এগিয়ে আসছে। আরো আরো বেশি আগ্রাসী দ্রুততায়। চারপাশের ভিড় ২-৩ নম্বর প্লাটফর্মের দিকে সরে যেতে থাকে। তার ক্লাবের লোকদুটির অশ্রুময় চোখগুলো বিজয়নের নজরে পরে আবারও। সে যেন পরিত্রাহি চিৎকার করে জানাতে চায়:
– টাকাগুলো মা কে দিয়ে দিও…
তবুও এই কল্পনাতীত যন্ত্রণাতেও সে একবারও নিজের জন্য কঁকিয়ে ওঠে না। তার নার্ভ ফেল হয় না তখনও। নিজের থেকে বেরিয়ে সে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।
এবং কাহিনি প্রায় ফুরিয়ে এল যে দেবতা বিজয়ন এখন একাকী হয়ে একাকী হতে পেরে একাকীত্ববোধ নিয়ে ডাউন গ্যালোপিনে মাথা দেয়। ট্রেন চলে গেলেও তার মুণ্ডটি খানিক চড়কির মতো ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে থেমে যায়। শরীর পাঠক গুনে নিন চারভাগ হয়ে গেল। যে সংখ্যার অর্থ পূর্ণতা! জীবনের গান।
আমাদের অনুমান দুর্গা রাগের দুর্গে মাতে দেবী আবার হ্যানা ত্যানায় চড়ে আসবেন, চারদিন ধরে মহিষের মাথা কাটবেন আর একাদশী থেকে বাকী ৩৬১ দিন আবার মহিষ মাথায় চড়ে বসবে সকল মাথাতেই যেহেতু শয়তান থাকবেই কারণ তা সৃষ্টির অংশ। যাবতীয় অশুভ শক্তি তাই সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার থেকে বর পায় ও সহস্রদল অধিকার করে রেখে দেয়। শুধু অষ্টমীতে এদের ভাব হয়, অশুভদিকগুলিকে স্বীকার করে নেওয়ার মাধ্যমে সেও চেতনের অংশ হয়ে ওঠে, অবদমন কমে যায়, ভারসাম্য আবার প্রতিষ্ঠিত হয়। এমন যুগান্তকারী মুহূর্তে, অষ্টমীতে বিজয়নের পরিবার আর আনন্দ করবে না, বিরিয়ানি খাবে না আর অঞ্জলিও দেবে না হয়ত। তাদের পরিবার থেকে বর্তমান হারিয়ে গেল, শুধু রইল অতীত মা আর ভবিষ্যৎ কন্যাপ্রতিমা। প্রতিটি ফ্যামিলির যে হৃদয় সমাজঅস্তিত্ব নিয়ে চলে… চলা অবধি তার চলা… তারপর ক্ষতবিক্ষত হৃদি ভেসে গেল রক্তবমন জলে
বিক্রমের বেতাল বা বেতালের বিক্রম যাই হোক শিক্ষা দেয় তবু বড্ড সেয়ানা কথকতা মারে।
– বলুন রাজন, এ মৃত্যু অ্যাকসিডেন্ট না আত্মহত্যা?
– বিজয়ন বীর না কাপুরুষ?
– আদতে ডিফেন্ডার না জাত স্ট্রাইকার?
দার্শনিক প্রশ্ন এটিই। যা পাঠক সিদ্ধান্ত নেবেন…
মৃত্যুর কারণ –
অ্যাকসিডেন্ট
না
আত্মহত্যা?
প্রত্যেকদিন ভারতে চার পাঁচ হাজার মানুষ ট্রেনে কাটা পড়ে, রোড অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়। তাদের কজনের সত্যি অ্যাকসিডেন্ট আর কটা সুইসাইড আর কটা পরিকল্পিত হত্যা অথবা গার্ডই যখন অ্যাকসিডেন্ট করাতে চায়, রেফারীই যখন চায় খেলোয়াড় চোট পেয়ে মাঠের বাইরে যাকতখন উসে কৌন বঁচায়ে ইত্যাদি ইত্যাদি উদ্দেশ্য গুলিয়ে দেওয়া চলে।
খালি তাই চলে… তাই চলতেই থাকে… পরিত্রাণহীন প্রতিক্ষণে মৃত্যু খালি চলেএএএ প্রেতলোকের বৈতরণী বেয়ে… প্রতিটি ক্ষণ পরক্ষণেই মরে যায়… যা আছে তোমার মনে তাই অভিক্ষেপিত হয়ে প্রতিটি ক্ষণেই তোমার জীবন নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গী তোমাকে ক্ষণে ক্ষণে আরো বেশি বাঁচাতে বা মারতেথাকে…ব্যক্তিসত্তারস্বতঃস্ফূর্ততামরে যেতে থাকে… প্রতিদিন বেঁচে ওঠে… আবারও মরে, বাঁচে…এইরকমইকালী খালি ধেই ধেই নেচে চলে…
প্রতিষেধক পত্রিকার প্রথম বর্ষ প্রথম সংখ্যার উৎসর্গ:
“ ‘দমদমের সেই বেওয়ারিশ লাশটাকে’-
যার স্বপ্নভঙ্গের মধ্যে দিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখার শুরু”।
Posted in: November 2020, STORY