তুষ্টি ভট্টাচার্য-র কবিতা
কাঠের প্যাঁচা
৪৯
আর ওই অনন্ত নক্ষত্রলোক
ডাকে, হাতছানি দিয়ে ডাকে কাঠপ্যাঁচাকে
নিশ্চল ডানায় ভর দিয়ে সে উড়ে যায় কল্পলোকে
আমি তখন উড্ডীন চন্দ্রমা কোলে
আমারও ডানার ছায়া পড়ে কলঙ্কসমূহে
স্থির একজোড়া চোখ দেখে নেয় অবহেলা ভরে
যেন অর্বাচীন অতি এক মুখর গৌণকে প্রত্যক্ষ্ করেছে
অস্পৃশ্য ভেবে সরিয়ে রেখেছে দূরে।
ক্লীব সে, জড় বস্তু। প্রাণহীন রজোগুণে ভরা তাকে
আমিও হেলায় ঠেলেছি
দূরত্বের সংজ্ঞা নিয়ত পরিবর্তনশীল জেনে আকাশও
আমাদের থেকে সরে গেছে দূরে।
পড়ে থাকা ছদ্ম পালক আর কাঠের গুঁড়োয়
জন্ম নেবে কিছু ছত্রাক নিকট ভবিষ্যতে
৫০
তবুও তো প্রাণ!
বার্তা রেখে যাবে ওরা প্রত্যয়ের সাথে
নিশ্চল, স্থবির ওই কাঠপ্যাঁচা
না-দ্যাখার গ্লানি নিয়ে চিরনির্বাসিত হবে।
আমারও দৃষ্টি সরে যাবে অচিরেই-
অন্যদিকে তাকিয়ে আমিও বলে উঠব-
‘জীবন মানে যন্ত্রণাই শুধু নয়’।
সহজতার পাঠক্রম খুলে বসব পাঠশালে
নবীন এক চারাগাছ কতটা ঝড়ঝাপটা সয়ে
বৃক্ষের রূপ পায়—জানার কৌতূহলে আরেকটু বড় হব।
আমার ওই শূন্যকলস, আমার এই অপদার্থতা জুড়ে
নিশ্চল বসে থাকবে ওই কাঠের প্যাঁচাটিই।
দূর থেকে অন্ধকার ভেদ করে একজোড়া জ্বলজ্বলে চোখ
আমাদের আলো দেবে, আলো দেবে……
Posted in: October 2020 - Cover Story, POETRY