সৌমনা দাশগুপ্ত-এর কবিতা
ভিজে গ্রামাফোন
সেই থেকে বেঁকে আছে ঘাড়। ডানে সূর্য, বাঁয়ে অস্তে চলেছেন শুকতারা।
উত্তরের দিকে চিবুক উঁচিয়ে বসে আছ। রিল্যাক্সড বস, অনলাইন শপিং-এর লিস্টে অন্তত দু’শ গ্রাম বুলেট রাখতেই হবে। আরে আরে এভাবে আঁতকে উঠো না, কাঁচালংকার পোশাকি নাম বুলেট। আপডেটেড হও।
কপালজোড়া বিরক্তির অলকাতিলক। তুমি পেরিয়ে যাচ্ছ মাংসের দোকান।
প্রলম্বিত সাইরেন আবিষ্ট করেছে বারবার। মন্ত্রের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে কার্তুজ, ভাঙা কাচ, দোফলা চাকুর আত্মজিজ্ঞাসা। জীবাশ্মের দ্বীপে বসে ঘোড়ার ছবি আমিও এঁকেছি বারবার। খোলামাঠ। একটি চৌকাঠ। নাচছি তুমুল
ভেজা গ্রামাফোন। কাপড় উড়ছে
নেই থেকে শুরু করে উপচে উঠছে হাত
শিঙার স্বভাব তো এরকমই, ঘাড়ত্যাড়া, প্যাম্পার্ড বাচ্চার মতো চেঁচিয়েই যাচ্ছে, চেঁচিয়েই যাচ্ছে। সিঁড়িতে পায়ের শব্দ শুনে এই যে বর্মের ভেতরে ঢুকিয়ে নিচ্ছ ফুসফুস, অথচ দ্যাখো, ছেড়ে রাখা দরজার কাছে ফিরে আসে চাবি, রুবিক-কিউবের খেলা, মেলাতেই হবে।
বস্তুতন্ত্র, আর্কিটাইপ গোধূলি। কামান তাক করে বসে আছে দশচক্র। ভূত হতে হতে নিশ্চয়ই একদিন ভগবান, নিশ্চয়ই একদিন হাইবারনেশান থেকে জেগে উঠবে মহাসর্প
সাজাও রঙ্গোলি
হাঁটুর মধ্যে মাথা গুঁজে দিতে দিতে তুমি তখন আলো কল্পনা করছিলে, আর ওজোনস্তর ফুটো করে উড়ে যাচ্ছিল নভোচারীর অশ্রু। পাগলকে যতোই বলো না কেন, সাঁকো ধরে সে ঝাঁকি দেবেই দেবে, আর ইচ্ছে ধরে টান মারতে মারতে চরিত্রগুলি একদিন উবে যাবে হাতের তালু থেকে।
খুব গরম ছিল সেই রাতে। টেলিভিশনের পর্দায় বারবার ভেসে উঠছিল সতর্কবার্তা। নিম্নচাপের। থান্ডারস্টর্ম, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পাক খেতে খেতে আমাদের দুঃখগুলি ক্রমেই হারিয়ে ফেলছিল তাদের গ্রহণযোগ্যতা, হাল ও গলুই। আর এ কথাও তো সত্যি, এতোবার এককথা ঘ্যানঘ্যান করলে একদিন না একদিন বরফের মধ্যে জমাট বেঁধে যাবে সমস্ত সান্ত্বনাবাক্য।
রক্তপলাশের ব’নে ঠিকরে ঠিকরে পড়ছে টিটকিরি। থুতু ও পেচ্ছাপ।
গজ আর ব্যান্ডেজের নিখুঁত আবরণ ফাটিয়ে উঠে দাঁড়াচ্ছে ছুরি, গা ঝাড়া দিচ্ছে, আড়মোড়া ভাঙছে। অস্থিরভাবে ঘড়ি দেখতে দেখতে তুমি আসলে হারিয়ে ফেলছ শীতকাল। আর এইমাত্র তোমার উদ্যত সিগারেটের সামনে আগুন তুলে ধরল যে লাইটারটি, তাকেও তুমি হারিয়ে ফেলেছ কোনও এক দীপাবলির রাতে। সাজাও রঙ্গোলি সাজাও। একে একে মেলে ধরো কবোষ্ণ পাখিডানা।
জলে পা ডুবিয়ে দেওয়ার পর মুছে যায় সবটুকু নীলরং, সবটা আকাশ
Posted in: October 2020 - Cover Story, POETRY