সমীরণ ঘোষ-র কবিতা
শতরঞ্জ
এক
পেয়ালা বাজছে। যাব না বলেই রাত। পাথরের
কালো। যাব না বলেই চাঁদ সুর্মাসামান্য। বনের
পেয়াদা
ছকের অতীত চরাচর। ভাঙা নদীর চর্বি
ঘুঙুরফুরোনো তুমি। হাওয়ার পাল্লায় কাঁপা শিখার
আধান
ছিদ্রের ফুঁ থেকে বাঁশি ফেরে পুরনো কামিজে
দুই
ছাপছবি। কুঁড়ির আলতো। জাহাজের ফেনার কস্মিন
ছড়ানো চুলের সোঁদা। ঢেউএর জোনাকি লেগে
পালঙ্ক ফুটছে
ছুরি ও কাচির ঘুম। ফলার পৃষ্টায়। ছকে জবার সুদূর
আমার ঘিলুর পাশে চোখের মণির রাত
স্কন্ধছেঁড়া হাতের বিদ্যুত। কাঁটাচামচের লুপ্ত বয়ান
তিন
দাবার দুপ্রান্তে আমাদের মাংসাশী ছায়া পড়েছিল
লোহার টেবিল আজও মরচে প্রসঙ্গ। দুই মুখের বরফ
গানের চারণ যায় ঘাসে ঘাসে হত্যা কুড়িয়ে
চরের পুতুলে শুয়ে সূর্যাস্ত উগরে দেয় বাঁশির দানব
হাড়ের ছিদ্রে বোজা সুরের অতীত
স্লেজ ফেরে। ধাতুর জোনাকি। জঙেভরা ক্লান্ত সমবায়
চার
কাটা আঙুলের গুটি ছকের সমরে। খোপে বেদনাশিবির
হাড়ের কিতাব খুলে রাত্রি ওলটায় ডিজেলগন্ধের
ঘরবাড়ি
নিম্নভূমির দেশ। বর্জ্যের কিনারে বসে বকের সন্ন্যাস
মাংসের অতীত থেকে পালটা রাখি সমরশিবির
খুলির শূন্যে ঝরে জবার প্রলাপ। বালিচাপা রাত্রি খুলে যায়
পাঁচ
ধসে যাওয়া ঘোড়ার খুরের দাগে আকাশ মুচড়ে হাওয়া। ডোবা গজের বৃংহন মকাইবনের শেষে
পাথুরে নির্জন
ছকের নৌকোয় তুমি ফুরোনো মাংসের ছায়া
নীচে ঘিলুর প্রবাস
আলো তুলে হঠাৎই এসেছ সমাপ্তিহীন স্তূপের মায়ায়
ছয়
দুজন কঙ্কাল। মুখোমুখি ছকের পতালে। মাংসের
অপরাহ্ণ
দুজন মাংসের সুর নির্বিকল্প গুটির সন্ধ্যায়
কাঁটাপোতা আমার ছায়াকে তোলে হাড়ের মৃণাল
চোখের কোটরে চাঁদ। যৌনকোটরে শতভিষ। নক্ষত্রের স্তব
হাড়েঠাসা বোড়ে গজ ঘোড়ার শূন্য এত বাজের রুপোলি
মৃত দুই নারী ও পুরুষশ্বাস ছকের অনির্দিষ্টেে বুজে
জবার কুহক
মাংসের চকমকি জ্বালে বিবাহের আদিম প্রকৃতি
সাত
আমাদের কাটামাথা ছকের দুপ্রান্তে নেমে অর্থহীন
হাওয়ায়
উটের খুরের রাত আমাদের চোখের গর্তে জমে
স্তব্ধ মরুগান
বোড়ের অনন্ত। আর পিঁপড়ের তীর্থ এসে খুলিশীর্ষে
সূর্যাস্ত খুলছে
চোখের রুপোলি চাল ছকের বিদ্যুত। বায়ুপোড়া গন্ধ
উঠে যায়
আট
জিভের অনস্তিত্বে তুমি সেটুকু বলবে, যেন ছকের ফটক খুলে যায়
হাঁমুখ কোটরের ধুনি তোমার গুটির পাশে গোয়েন্দা
করবে। এটুকুই চালের জ্যামিতি। দেহের খরগোশ
বীর্যহীন বায়ুর আধান
ছকের সন্ধ্যার আততায়ী আলখাল্লার নীচে মরচে
অবরোধ তুলে
আমাদের মুণ্ডদুই নাপাক হাউই। মেঘের পাথরে
পোঁতা হাঁসের চিক্কুর
ছকের আলখাল্লা শুধু মরচে পোড়ায়। গান ওঠে
সিঁড়ির শূন্যে
আমাদের মুন্ডদুই আহ্রাদে কণার আবেশ। ঘূূর্ণি
তোলে হাড়ের ফলক
নয়
ঝাঁপ দেবে বলে খুলির পূরবী থেকে সূর্যাস্ত সরালে
গোধূলি আমাদের পাপ। গোধূলি আমাদের ক্ষত
হাওয়ার হাশিশ
তোমার মুণ্ডে ওই অবিবেচক হাসি রাংতার বন
আমার দো-নলা শুধু ছকের অভিঘাত। ফেটে ধাতুর ভাষায়। চাকা ঘোরে। চাকার হিজরি থেকে চান্দ্রগণিত
ভূপালি-প্রাচীন দেশ। আমাদের মুন্ডদুই আত্মভূমিকাহীন। ছায়ার কাফতান
Posted in: October 2020 - Cover Story, POETRY