সৌরভ দত্ত-র কবিতা

খোঁজ

বসে ছিলাম তক্কে তক্কে,
জেগে ওঠার সাথে সাথেই
পিছু নিয়েছি সূর্যের–
অক্ষরেখা ধরে অনেকটা এগিয়ে
কিছুটা হাঁপিয়ে যাবার পর
শিরদাঁড়া খুঁজতে ঢুকে পড়েছি
রোদের শরীরে;
সমস্ত ব্রডস্ট্রীট গুলো
তীব্র আলোতেও ঝাপসা,
সাজানো গোছানো অসংখ্য সংকীর্ণ গলিপথের ধাঁধায়
ঘুরে চলছে অস্তিত্ব,
ছড়িয়ে পড়া আলো বেয়ে
চোখে পড়ছে সম্প্রসারিত নগ্ন ধূসরতা–
রোদের শরীরে বসে দেখছি সব;
অন্ধতার দ্রবণে চোবানো ধর্মীয় অভিসন্ধি
রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে
এ‍্যালকোহলের মত,
মাতাল পদক্ষেপ এঁকে বেঁকে শেখাচ্ছে নীতিকথা,
জুতোর কাছাকাছি নেমে এসে
বাড়ি ঘর খুঁজছে
নুয়ে পড়া আনুগত্য,
রোদের শরীরের বসেই দেখছি সব;
আলোর মেরুদন্ড প্রকাশ‍্যে আনতে
গোধূলি মুহূর্তে একটা প্রচন্ড বিষ্ফোরণে
গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ঝরে পড়ল আকাশ,
ছিটকে পড়লাম সূর্যের শরীর থেকে,
হুমড়ি খাওয়া মুখ তুলে দেখি
দিগন্ত বিস্তৃত শূন্যতার মাঝে
একটা কুড়ে ঘর,
সাইনবোর্ডে লেখা পৃথিবীর পাঠশালা–
এখানে শিরদাঁড়া তৈরি হয়…

বাজি

ডুবে যাকনা যা কিছু আছে সম্বল
থৈ থৈ জল উঠে গেছে বিপদসীমা পেরিয়ে,
কিছু অসহায় পেট
কিছু বাড়ন্ত হাঁড়ি
কিছু কঙ্কালসার দেহ গচ্ছিত ছিল যেখানে
ডুবে গেছে অনেক আগেই
জল ছেড়ে বিপন্মুক্ত থাকা বাঁধের গায়ে
মধ‍্যবিত্ত সীমারেখার দাগ
দাগেরও তো দায় আছে সামলে রাখার
সামলাতে সামলাতে সময়ের শরীর বেয়ে
উঠে এসেছে জল
শুধু ভেসে আছে নাকের ছিদ্র দুটো
চারপাশে আপোষের ঢেউ
ডুবে যাকনা তাও
ডুবে যাক শেষ সম্বলটুকু
পতঙ্গপ্রাণ সঙ্গে নিয়ে
দিন মাস বছরের কালক্ষয়ে
মরে গেছে সব সম্ভাবনার ভ্রুন
আরও কিছুটা ডুবলে
একেবারে পুরোটা ডুবলে
হাঁটু মুড়ে নাভি সামলানোর দিন শেষ হবে
সাদা কালো হিসেব গুলো চেনা যাবে তখনই
বেঁচে থাকার দুর্বলতা আর আগলাবেনা
সুবিধাভোগের ধ্যাষ্টামি
সব অসহ্যগুলো জড়ো হয়ে
তোলপাড় করে দেবে
অন্ধতার রাজপাট
সবকিছু ডোবার জন্য বসে আছি জীবন বাজি ধরে

Facebook Comments

Leave a Reply