রাহেবুল-এর কবিতা
ঘূর্ণন দেখছি ২: ধুর ব্যাঙ
ব্যাঙের ন্যাটো, একটা ব্যাঙাচি উল্টো করে কনডোম পরেছে মাথায়,
টুপি নাকি টোপর নাকি ফেজ টুপি, কী হিসাবে তার ব্যবহার হইবেক সে তো বাচ্চাকাচ্চা, জানে না।
জিজ্ঞাসিল মাওকে। মাও কান্দন করে। ব্যাঙের ছা ভাবে কেন কান্দে মা? মাও কিছু কয় না।
ব্যাঙাচি কহিল “মাও, বাপ কোথা মোর”? আম্মা তখন মুখে আঁচল চেপে, মৃদু মাথা নেড়ে সড়ক দেখাইল।
বুঝিল না কিছুই বাছা। সে শুনেছে সড়কে গেলে গোরুতে খায়। মধ্যেমধ্যে কাছেকার-কোথাওকার চোং হইতে
চাঁইচাঁই আও-আওয়াজ আইসে, নক্ষত্র আর নেতারাই নাকি যুগ যুগ টেকে, তাই তারা যোগী। তাই ব্যাঙের ছা
ঠ্যাং ভাঙবার ভয়ে লাফায় কম। তবু রাস্তা যেতি হবে, যেতি হবে সড়ক পাড়। কোন-বা ক্রমে ভিটেহারা ঘুঘু কিংবা
ডি-নাগরিক জনের ন্যায় অতি অস্থির, বুক চাপড়ানি নিয়ে ব্যাঙের ছাওয়াল সড়ক পাড় উঠে পড়ে, আহ্ স্বস্তি।
ব্যাঙের ছা মাথা উঁচু করে দ্যাখ্বার চেষ্টা করে, ওদিক-এদিক-সেদিক। বিস্ময়ে দ্যাখে এ তো কেবলই চাকা
আর চাকার ঘূর্ণন। গতি আর গতি, প্রগতি। তার বাপ মরিয়া আছে চাকার নীচে।
ঘূর্ণন দেখছি ৩: সাপ-ব্যাঙ
লম্ফ দিতে দিতে একটা ব্যাঙ মনুষ্যের কাছে ভিড়ছিল। মনুষ্য এক বিষম বস্তু সে তো তাহা জানে না।
আব্বা বারান্দায় বেরিয়েছিল, ব্যাঙটা পারে তো প্রায় কোলে এসে ওঠে। আব্বা বুঝতে পারছিল না এমন কেন।
প্রাণেরা, পরানেরা পলায়। একদিন। সে বাবা জানে। তবু পলায়নমুখী নাদান সে ব্যাঙের প্রতি বাবার কিছু একটা অনুভূতি হল, যেমন ঔৎসুক্য। হতে, আব্বা মাথা বাড়াল আরও কিছু বারান্দা হতে বাহিরে, গাড়ির কাচে বিপজ্জনক গলা বাড়ানোর ঢক। তখনও বারান্দার ভেতরেই বাবার মাথা, বাইরে বাবার চোখ—একটা হাড়-হাভাতে জলঢোঁড়া, লোকে সরকারি ত্রাণের জন্যে হুলুস্থুলে, কাড়াকাড়ি করছে, এমন।
বাবা ভাবছিল এ সকলই পরানের জন্যে, উচাটন এ দীনদুনিয়া। আবার এ সকলই প্রাণের জন্যে, মোদের প্যাট সামলানো। বাবার চশমার কাচের ঝাপসায় গোল গোল বাফারিং।
Posted in: October 2020 - Cover Story, POETRY