প্রণব পাল-র কবিতা

নির্বিকল্প

বিকল্প নেই। নির্বিকল্প এক একটা গাছ ও মানুষের বাচ্চারা। সাইরেন বেজেই চলেছে শূন্যস্তুতে। দূরে কোথাও দোলা খাঁচার বাইরে ভিতরে অক্সিজেনের চলাচল। মাথা এখন সুনসান রাস্তার লম্বা ফটোগ্রাফ। ফাঁপরা নলকূপে জল ওঠে না অথচ ল্যাবরেটারিতে হুলুস্থুল আজকের বিশেষ সংবাদ। বন্ধুরা যে যার চশমায় ঘুম পাড়ায় নিজের ছায়া। স্লো মোশনে ড্রপ খাচ্ছে সূ্র্য। মাঞ্জালাটাই হাতে টানি ঘুড়ির অ্যানাটমি। হাত গুটিয়ে মারপ্যাঁচ খেলতে খেলতে হল্লা রাজার মিছিল ফেসবুক ডিঙিয়ে টিভির পর্দায়। উত্তেজনাহীন সবুজ পাতারা অনলাইনে সিজন প’রে কাটিয়ে ওঠে ধুসরামি।

অ্যালবামের ওপর দিয়ে হাঁটে স্মৃতি লজিকের ফ্যালাসি। ঝিম্ ধরা সময়ে জং সারাতে জিম করে দিমাক। একটু ফুরফুরে হাওয়ার জন্য নয় থেকে শূন্য হাঁমুখিয়ে আমাকে ডেকে তোলে। যাবতীয় জিন্দাবাদ গৃহবন্দী আজ। পাখির ডানায় শিকল পড়ানো যুগ দাপাচ্ছে হুঁজুগে আর একটা গোটা বিশ্ব নুকিয়েছে মশারির ভিতর খোলসে। ডিম ফোটার আগেই নীরব সন্ত্রাস ছুঁতে চাইছে হ্যান্ডসআপ দুনিয়ার মগজ তবু কোথাও যেন রোদ বোনা হচ্ছে আনচান ভিতর গরিমায়।

ভাষাকলি

কোথাও বাজছেনা হুইসেল ও গ্রীন সিগন্যাল। কালো বেড়াল পার হচ্ছে একটার পর একটা দরজা। জানালার শার্সি কাঁপিয়ে একটা নীরব শয়তানের আঁচড়। ভুলভলাইয়ার কুয়াশায় তরতাজা গ্লোবের হারানো রাস্তার খোঁজ ধুকপুক করছে ঘিলুর সাত তলায়। এখন শক্ত হাতে লাঠি নয় নিজেকে ধরার সময়। দশ দিগন্ত আলো করার জন্য মোমবাতির মিছিল নয় নিজস্ব কুপি জ্বালিয়ে বসে থাকা। আঙুলের মধ্যে বেঁচে থাকা কুসুম ফুটতে চায় ভোর বেলায়।

গিজগিজ করছে কথার যন্ত্রণা। গাছের মাথায় ঝুলে আছে পাকা ফলের হামাগুড়ি। ভিড়ের মধ্যে খুলে বসি অ্যালবাম। কত আনচান উঁকি মারে,হারানো ভ্রমন এক পেট ক্ষিদের যন্ত্রনা বলে। কাদের ঘরে কাপ প্লেট উড়ে যাচ্ছে দালির তেল রংয়ে আর সময় গলছে তাতান্নতায়। প্রকৃতির পেট চিরে যত সম্পদ গেছে, আহ্লাদ হত্যা হয়েছে তারা দশ আঙুলের আঁচড় লিখছে গ্লোবের গায়ে টাঙানো পোষ্টারে। কবিতার শব্দেরা বড়ো কষ্টে ভুখা আছে আজ। নির্বিকার আঙুলে চাষ করি, ফলাই নতুন ঋতুর জলসা। ঘুমানো অক্ষর নাচে কত্থক, লেখাপুরি ও ভাষাকলির ছন্দে। আবার ফুটবে বলে রাত জেগে বসে আছে রোদ। উঠবে বলে ঘাপটি মেরে পড়ে আছে সাত বেহালার ছড়। ডুব জলে লুকিয়ে একটা সাত ঘোড়ার নক্ষত্র।

Facebook Comments

Leave a Reply