মেঘ অদিতি-র কবিতা

কুরুবিন্দে অহেতু অঙ্গীকার

১.

শীত আসে অতিধীরে ক্ষতমুখ নিয়ে–

বনস্পতি পার হয়ে ছায়ার পীড়নে
আমরাও আগুনের বৃত্ত সাজাই
কেন্দ্রমুখে বুনে দিই স্বপ্নহীন দিন

কিন্নর কণ্ঠী এক কোথা থেকে ডাকে
আমাদের প্রদক্ষিণ করে এক মায়ার হরিণ

তুমি লেখো অনুপুঙ্খ অনুযোগ
খাগের কলমে, আমি তার
উত্তরে যথারীতি নীরব থাকি –
অহেতু রিরংসা জাগে
তবু কত রণসাজ চারদিকে, সহসা
জলে ভরে ওঠে এক উৎসবের খাম
হাইড্রার সহস্র মাথার ভেতর
জন্ম নেয় তৃণকাশ প্রেম
এক অবাক বিন্দুতে তখন চূর্ণপ্রায়
রূপকথা দিন..

তবু একটি মাত্র মন্ত্রের মাঝে অকস্মাৎ
বেজে ওঠে ধামাইল গীত আর
রাধিকার মানভঞ্জনের ঢঙে
তখনই তুমি
ঠিক কোন রন্ধ্রপথে
ঢুকে পড় চুপচাপ

ক্লান্তিময় অভিধানে
ঢাকা দিই সব অভিমান
আমাদের কাল্পনিক বাসর, বিষয়, বসন
সব ছুড়ে নগ্নতায় ডুবে যাই আর
লেহনের অবশেষে–
আমাদের দংশন করে মা মনসায়
তুঁত রঙা নদী বয় শিরায় শিরায়

তুমি কোন রন্ধ্রপথে গেলে ঢুকে যে..

২.

কী যত্নে কুড়িয়েছি যে অন্ধকার
এখন দেরাজে রাখতে গিয়ে ভাবি-
এত ক্ষয়, শোক, বিলয়ের মাঝে
তোমাকে আজ কোন নামে ডাকি

কাহিনির শেষে যা কিছু পথের হাওয়া
তাতে পতঙ্গরা মৃত হলদেটে পড়ে থাকে
মেয়াদ উত্তীর্ণ কালে কামানের গোলা
আর মেঘেদের উন্মুক্ত কুচকাওয়াজও
গর্জে ওঠে কী ভীষণ যে..
উড়ান ছাড়িয়ে আরও অনেকটা ওপরে
বহুজন্মের পরিভ্রমণ ফুরালে তবে
দেখা যায়

কয়েক স্তর “না”- এর আড়ালে
বোধনের আগে আমরা কেবলই মৃত্যু এঁকেছি

Facebook Comments

Leave a Reply