বুদ্ধদেব হালদার-এর কবিতা

সাইকো

৪৬

আজকাল হতাশায় প্রায়শই আত্মহত্যা করার কথা ভাবছি।
আমি, বাবা আর মা দরজায় তালা এঁটে পচে মরছি এই
কানাইপুরে। বড়দা বিদেশে আছে এখন। মেজদা ডানকুনিতে
শাশুড়ির ফুটোয়। আমি পাগল হয়ে গেছি অনেকটা। বাবাও
কিছুটা পাগল। ডাক্তারের মতে ‘স্প্যাস মোডিক ট্রান্সভার্স
কোলেন’ নামক এক জটিল মানসিক রোগে ভুগছেন আমার
মা। আমরা তিনজন একসাথে বিকেলে ছাদে উঠি। পাখি
উড়ে যায় আমাদের মাথার উপর। আমরা বমি করি। গান
গাই। কান্নাকাটি করি প্রতিদিন। ভেঙে ভেঙে একা হয়ে গেছে
মা। ভেঙে ভেঙে টুকরো হয়েছে বাবা। তেরো বছর নিয়মিত
ওষুধ খাওয়ার পর কিছুই আর স্বাভাবিক নেই এখন। বাবা কি
আত্মহত্যার কথা ভাবছে? মা-ও কি মৃত্যু নিয়ে ভেবেছে কিছু?
আমরা তিনজনে ঘুমের ভেতর একে অপরের সঙ্গে ঝগড়া করছি
বীভৎস চেঁচাচ্ছি। তড়পাচ্ছি একে অপরের উপর। হাইপ্রেসারে
তরতর করে ঘেমেনেয়ে বাবা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে
বলছে, ‘তুই আমাকে মারবি? মার, মার ..’

৪৭

বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে এখন। এই ঘরে আলো নেই। কাঠের চেয়ারে
বসে রয়েছি আমি। তোমাকে চিঠি লিখব ভেবেছি। যৌনতার
আবেদন জানাব। ‘শূন ভেল দশ দিশ শূন ভেল সগরি।’ মাঝেমধ্যে
জ্বর বাড়ছে। তুমি চেঁচিয়ে উঠছ আমার গলার ভেতর। একটা প্লেনের
ছোট্ট কামরায় আমরা দুজন। কেঁদে ফেলছি ভয়ে। তোমার স্মৃতিতে
আরও কিছু টাকা খরচ করে কিনে রেখেছি ফেনসিডিল। আমার
ভাঙা স্বপ্নের ভেতর বনবন করে ঘুরছে তোমার চোখ। এবং তোমার
ফ্যালোপিয়ানে আমার অণ্ডকোষ। আমি কোনো পাগল নই। আমার
কোনো কলুষতা নেই। এবং যা যা কিছু আমি শুনেছি ও দেখেছি
তার জন্য দোষী নই। নিভা চৌধুরীর কোডিন ফসফেট এখন
ভর করেছে আমার আত্মায়।
আমি উহাকে লিখিব।

Facebook Comments

Leave a Reply