অরিত্র চ্যাটার্জি-র কবিতা

স্বপ্নের ভিতরে লেখা

জমাট দিকচক্রবালে বিচিত্র কিছু যন্ত্রাংশেরা ভাসছিল
অথচ সেদিকে তার চোখ ছিলনা, একটি মেয়ের মুখ
রানওয়ের ওপারে, স্বপ্নে বা অতীতে সে কোথাও দেখেছে
অস্পষ্ট স্মৃতি হাতড়ায় আর আকাশে ধাবমান যন্ত্রাংশগুলিকে
পুনরায় উপেক্ষা করে সে মনে করতে থাকে মেয়েটির মুখ
ও তার ভ্রুভঙ্গী, যতক্ষণ না অকস্মাৎ মেয়েটি চিৎকার করে
ওঠে এবং চারপাশের পুঞ্জীভূত স্তব্ধতা ভেঙ্গে ফেলে একটি
ভারী পতনের শব্দ, অনতিদূর থেকে এরপর সে মৃত্যুকে দেখে
জীবিত ও জনৈক মৃত মানুষের সমবেত ভিড় ততক্ষণে ছেয়ে
গিয়েছে রানওয়ে বরাবর এবং বিচিত্র যন্ত্রাংশেরা ক্রমে তাদের
ঘিরে ফেলেছে যা পেরিয়ে মেয়েটির কাছে সে আর কখনোই
পুরোপুরি পৌঁছতে পারেনি…

এই সামগ্রিক দৃশ্যটি যে এক অপ্রত্যাশিত মহাযুদ্ধের পূর্বসূরি
ছিল, তা সে অনেক পরে গিয়ে বুঝতে পেরেছে এমন একটা
সময়ে যখন আর তার রেহাই পাওয়ার কোন সম্ভাবনা ছিলনা

আশ্চর্য এক যাদুঘরের ভিতর এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
অজর স্মৃতির বাগানে, শিলীভূত জীবেরা সব অনিমেষ লক্ষ্য করে
সুপ্রাচীন কাণ্ডের নিচে এইখানে মেয়েটি ঘুমিয়েছে আর সে ভেবেছিল
তাকে জাগানো উচিত হবে কিনা, স্তুপাকার হাড় ও ঠোঁটের বাগানে
স্তিমিত এই দুটি হৃদযন্ত্রের কাণ্ডকারখানা, সকৌতুকে যারা দেখেছিল
বিস্ফারিত কোটরের ভেতর দিয়ে সেইসব সময়হীন জীবাশ্মের দল
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকে কখন সে মেয়েটিকে জাগিয়ে তুলবে
সেই মেয়েটি যে ঘুমিয়ে আছে, স্বপ্নের ভিতর আসলে সে জাগ্রত
আর মেয়েটিকে জাগিয়ে তুলবে এমনটা সে কখনোই ভাবেনি কারণ
ইতিপূর্বেই তাকে বলে পাঠানো হয়েছিল স্বপ্নের ভিতর হত্যা করা পাপ!

Facebook Comments

Leave a Reply